Skip to content

পুনরুত্থান প্রথম ফল: আপনার জন্য জীবন

  • by

হিন্দু পঞ্জিকার শেষ পূর্নিমায় আমরা হোলি উদযাপন করি I এর চান্দ্র-সৌর মূল পঞ্জিকার সাথে হোলি পাশ্চাত্য ক্যালেন্ডারে ঘুরতে থাকে, বসন্তের আগমনের এক আনন্দময় পর্ব হিসাবে সাধারণতঃ মার্চে আসে I যদিও অনেকে হোলি মানায়, তবে কয়েকজনই জানে এটি প্রথম ফলের সমান্তরাল, এবং পরবর্তী  উদযাপন ইস্টার  এর থেকে উদ্ভূত হয় I এই উদযাপনগুলো বসন্তের পূর্নিমায় ঘটে এবং প্রায়শই একসাথে মিলে যায় I  

হোলি উদযাপন করা হয়  

বসন্তের এক আনন্দময়, প্রেমের পর্ব, বা রঙের পর্ব হিসাবে লোকেরা হোলি উদযাপন করে I এর সর্বাধিক বিশিষ্ট উদ্দেশ্যটি বসন্তের শুরুটিকে ফসল কাটার  অনুষ্ঠান হিসাবে পালন করে I পরম্পরাগত সাহিত্য, এক প্রাচুর্যময় বসন্তকালীন ফসল কাটার পর্ব হিসাবে হোলিকে চিহ্নিত করেছে I

হোলি মন্দের উপরে ভালোর বিজয়কেও উদযাপন করে I হোলিকা দহনের সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে হোলি (বা রঙের হোলি, ধুলেটি, ধুলন্দি, বা ফাগবা) পরের দিন পর্যন্ত চলতে থাকে I   

একে অপরকে রঙ লাগিয়ে মানুষ হোলি উদযাপন করে I একে অপরকে ভিজিয়ে  রাখতে এবং রঙিন করতে তারা জলের বন্দুক এবং জল-ভর্তি বেলুন ব্যবহার করে I এটি একটি জল যুদ্ধের মতন, তবে রঙিন জলের সাথে I এটি একটি নিরপেক্ষ খেলা, যে কোনোর জন্য, বন্ধু বা অপরিচিত, ধনী বা গরীব, পুরুষ বা স্ত্রী, শিশু বা বৃদ্ধগণ I রঙের অসাধারণ আচরণ খোলা রাস্তায়, পার্কে, মন্দির এবং ভবনের বাইরে ঘটে I দলেরা ড্রাম এবং সঙ্গীতের যন্ত্রাদি বহন করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে, গাইতে গাইতে, নাচতে নাচতে যায় I বন্ধু এবং শত্রুরা একে অপরের উপরে রঙের পাউডার দিতে একসাথে আসে এবং হাঁসে, গল্প করে, তারপরে সুস্বাদু খাবার, ভোজন ও পানীয় বিতরণ করে I দুপুর বেলায় প্রত্যেককে রঙের পটের মতন দেখতে লাগে, তাই নাম “রঙের উৎসব” I      

হোলির সম্ভবতঃ সবচেয়ে অনন্যতা সামাজিক ভূমিকার উল্টোটা I পায়খানার এক ঝাড়ুদার ব্রাহ্মণকে আঘাত করতে পারে এবং এটি উৎসবের উল্টো ভূমিকার   অংশ I পিতা-মাতা, ভাই-বোন্, প্রতিবেশী এবং বিভিন্ন বর্ণের মধ্যে প্রেম শ্রদ্ধার প্রচলিত অভিব্যক্তিগুলির সব উল্টো I    

হোলি পুরাণ

হোলির পেছনে অনেক পুরাণ সমূহ আছে I গল্পটি হোলিকা দহন থেকে চলে এসে রাজা হিরণ্যকশিপুর ভাগ্যকে সম্পর্কিত করে, যে তার বিশেষ ক্ষমতার সাহায্যে প্রহ্লাদকে হত্যা করতে ষড়যন্ত্র করেছিল I তাকে হত্যা করতে পারা যায় নি; না মানুষ নাতো জন্তুর দ্বারা, না ঘরে নাতো বাইরে, না দিনের বেলায় নাতো রাত্রি-কালে, না ক্ষেপণাস্ত্র নাতো হাতে ধরা অস্ত্রের দ্বারা, না মাটিতে, নাতো জলে বা বায়ুতে I হোলিকার দ্বারা প্রহ্লাদকে পুড়িয়ে মারার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরে, বিষ্ণু, নরসিংহ, অর্ধ-মানব, অর্ধ-সিংহ রূপে (না মানব নাতো পশু) গোধুলি লগ্নে (না দিন নাতো রাত) হিরণ্যকশিপুকে দোরগোড়ায় (না ঘরে নাতো বাইরে) নিয়ে গিয়ে তাঁর কোলে (না মাটি, জল নাতো বায়ু ) তাকে রাখলেন এবং তারপরে তার সিংহের নখ (না হাতে ধরা নাতো ক্ষেপণাস্ত্র) দিয়ে তার নাড়ি ভুঁড়ি বার করে দিলেন I এই গল্পের মধ্যে হোলি মন্দের উপরে ভালোর বিজয়কে উদযাপন করে I         

অনুরূপভাবে, প্রথম ফল সমূহ একটি বিজয়কে উদযাপন করে, তবে কোনো দুষ্ট রাজার উপরে নয়, বরং মৃত্যুর নিজের উপরে I সুসমাচার ব্যাখ্যা করে কিভাবে প্রথম ফল সমূহ, এখন ইস্টার রবিবার বলে পরিচিত, এটিকে স্পষ্ট করে, আপনাকে এবং আমাকে নতুন জীবন উপহার দেয় I  

প্রাচীন হিব্রু বেদের পর্ব সমূহ

আমরা যীশুর শেষ সপ্তাহের দৈনন্দিন ঘটনাগুলিকে অনুসরণ করেছি I তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল নিস্তারপর্বে, একটি পবিত্র যিহূদি পর্ব, সপ্তাহের সপ্তম দিন বিশ্রামবারে মৃত্যুর মধ্যে বিশ্রাম I ঈশ্বর এই পবিত্র দিনগুলি বহু আগে থেকেই হিব্রু বেদে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন I ওই নির্দেশগুলি পড়ে:  

প্রভু মুসাকে বললেন,
১আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, তুমি ইস্রায়েল-সন্তানদেরকে বল, তাদেরকে বল, ২ তোমরা সদাপ্রভুর যে সব পর্ব পবিত্র সভা বলে ঘোষণা করবে, আমার সেই সব পর্ব এই। ৩  ছয় দিন কাজ করতে হবে, কিন্তু সপ্তম দিনের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামপর্ব, পবিত্র সভা হবে, তোমরা কোন কাজ করবে না; সে দিন তোমাদের সব গৃহে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বিশ্রামদিন। ৪ তোমরা নির্দিষ্ট দিনের যে সব পবিত্র সভা ঘোষণা করবে, সদাপ্রভুর সেই সব পর্ব এই।  ৫ প্রথম মাসে, মাসেaর চোদ্দ দিনের সন্ধ্যাবেলায় সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তার পর্ব হবে।

লেবীয় ২৩:১-৫

এটি কি অবাক নয় যে যীশুর ক্রুশবিদ্ধকরণ এবং বাকি উভয়ই ১৫০০ বছর আগে নির্ধারিত ঠিক এই দুটি পবিত্র পর্বে ঘটেছিল?

কেন? এর অর্থ কি?

যীশুর ক্রুশবিদ্ধকরণ নিস্তার পর্বে (দিন 6) ঘটেছিল এবং তাঁর বিশ্রাম বিশ্রামবারে (দিন 7) ঘটেছিল I

প্রাচীন হিব্রু বেদ পর্বগুলির সাথে এই সময়টি বহন করে I পরবর্তী পর্ব নিস্তারপর্ব এবং বিশ্রামবারের পরে ছিল ‘প্রথম ফসল’ I হিব্রু বেদ এর জন্য এই নির্দেশগুলি দিয়েছিল I  

হিব্রু প্রথম ফসল পর্ব

৯ আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, ১০ তুমি ইস্রায়েল-সন্তানদেরকে বল, তাদেরকে বল, আমি তোমাদেরকে যে দেশ দেব, সেই দেশে থেকে তোমরা যখন সেখানে উত্পন্ন শস্য কাটবে, তখন তোমাদের কাটা শস্যের অগ্রিমাংশ বলে এক আঁটি যাজকের কাছে আনবে। ১১ সে সদাপ্রভুর সামনে ঐ আঁটি দোলাবে, যেন তোমাদের জন্য তা গ্রহণযোগ্য হয়; বিশ্রামবারের পরদিন যাজক তা দোলাবে।

লেবীয় ২৩:৯-১১

১৪ আর তোমরা যতক্ষণ নিজের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে এই উপহার না আন, সে দিন পর্যন্ত রুটি কি ভাজা শস্য কি তাজা শীষ খাবে না; তোমাদের সব গৃহে এটি পুরুষানুক্রমে পালনীয় চিরস্থায়ী ব্যবস্থা।

লেবীয় ২৩:১৪

নিস্তারপর্বের ‘বিশ্রামবারের পরের দিন’ ছিল একটি তৃতীয় পবিত্র পর্ব, প্রথম ফসল I প্রত্যেক বছর এই দিনে মহা যাজক পবিত্র মন্দিরে প্রবেশ করতেন এবং সদাপ্রভুকে প্রথম বসন্তের শস্যের ফসল উৎসর্গ করতেন I হোলির মতন, এটি শীতের পরে নতুন জীবনের আরম্ভকে তাত্পর্যপূর্ণ করে, প্রচুর ফসলের দিকে তাকিয়ে থেকে মানুষকে তৃপ্তির সাথে খেতে সক্ষম করে I       

এটি হুবহু সেই দিন ছিল বিশ্রামবারের পরে যখন যীশু মৃত্যুর মধ্যে বিশ্রাম গ্রহণ  করেছিলেন, এক নতুন সপ্তাহের রবিবার, নীসনের ১৬ তারিখ I সুসমাচার লিপিবদ্ধ করে এই দিনে কি ঘটেছিল যখন মহা যাজক নতুন জীবনের ‘প্রথম ফল’ উৎসর্গ করতে মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন I   

যীশু মৃত্যু থেকে উঠলেন

১ সপ্তাহের প্রথম দিন তারা খুব ভোরে উঠে ঐ কবরের কাছে এলেন, যে সুগন্ধি দ্রব্য প্রস্তুত করেছিলেন তা নিয়ে আসলেন; ২ আর দেখলেন, কবর থেকে পাথরটা সরানো রয়েছে, ৩ কিন্তু ভিতরে গিয়ে প্রভু যীশুর মৃতদেহ দেখতে পেলেন না। ৪ তারা এই বিষয়ে ভাবছেন, এমন দিনের, দেখ, উজ্জ্বল পোষাক পরা দুজন পুরুষ তাদের কাছে দাঁড়ালেন। ৫ তখন তারা ভয় পেয়ে মাটির দিকে মুখ নীচু করলে সেই দুই ব্যক্তি তাদের বললেন, মৃতদের মধ্যে জীবিতের খোঁজ করছ কেন? ৬ তিনি এখানে নেই, কিন্তু উঠেছেন। গালীলে থাকতে তিনি তোমাদের যা বলেছিলেন, তা মনে কর; ৭ তিনি তো বলেছিলেন, মনুষ্যপুত্রকে পাপী মানুষদের হাতে সমর্পিত হতে হবে, ক্রুশারোপিত হতে এবং তৃতীয় দিনের উঠতে হবে।৮ তখন তাঁর সেই কথা গুলি তাদের মনে পড়ল; ৯ আর তারা কবর থেকে ফিরে গিয়ে সেই এগারো জন শিষ্যকে ও অন্য সবাইকে এই সব খবর দিলেন। ১০ এরা মগ্দলীনী মরিয়ম, যোহানা ও যাকোবের মা মরিয়ম; আর এদের সঙ্গে অন্য স্ত্রীলোকরাও প্রেরিতদের এই সব কথা বললেন। ১১ কিন্তু এই সব কথা তাদের দৃষ্টিতে গল্পের মত মনে হল; তারা তাদের কথায় বিশ্বাস করলেন না। ১২ তা সত্বেও পিতর উঠে গিয়ে কবরের কাছে দৌড়ে গেলেন এবং নীচু হয়ে ভালো করে দেখলেন, শুধু কাপড় পরে রয়েছে; আর যা ঘটেছে, তাতে অবাক হয়ে নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন।ইম্মায়ুর পথে।১৩ আর দেখ, সেই দিন তাদের দুজন যিরুশালেম থেকে সাত মাইল দূরে ইম্মায়ূ নামে গ্রামে যাচ্ছিলেন, ১৪এবং তারা ঐ সব ঘটনার বিষয়ে একে অপরে কথাবার্তা বলছিলেন। ১৫ তারা কথাবার্তা ও একে অপরে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, এমন দিনের যীশু নিজে এসে তাদের সঙ্গে সঙ্গে যেতে লাগলেন; ১৬ কিন্তু তাদের চোখ বন্ধ হয়েছিল, তাই তাঁকে চিনতে পারলেন না। ১৭ তিনি তাদের বললেন, তোমরা চলতে চলতে একে অপরে যে সব কথা বলাবলি করছ, সে সব কি? তারা বিষন্ন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেন। ১৮ পরে ক্লিয়পা নামে তাদের একজন উত্তর করে তাঁকে বললেন, আপনি কি একা যিরুশালেমে বাস করছেন, আর এই কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা জানেন না? ১৯ তিনি তাদেরকে বললেন, কি কি ঘটনা? তারা তাঁকে বললেন, নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে ঘটনা, যিনি ঈশ্বরের ও সব লোকের সামনে ও কাজে ও কথায় মহান ভাববাদী ছিলেন; ২০ আর কীভাবে প্রধান যাজকেরা ও আমাদের শাসকেরা প্রাণদণ্ডের জন্য দোষী করে তাকে সমর্পণ করলেন, ও ক্রুশে দিলেন। ২১ কিন্তু আমরা আশা করছিলাম যে, তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করবেন। আর এসব ছাড়া আজ তিনদিন হচ্ছে, এসব ঘটেছে। ২২ আবার আমাদের কয়েক জন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করলেন; তারা ভোরে তাঁর কবরের কাছে গিয়েছিলেন, ২৩ আর তাঁর মৃতদেহ দেখতে না পেয়ে এসে বললেন, স্বর্গ দূতদের ও দেখা পেয়েছি এবং তাঁরা বলেন, তিনি জীবিত আছেন। ২৪ আর আমাদের সঙ্গীদের যারা কবরের কাছে গিয়েছিল, তারাও সেই স্ত্রীলোকেরা যেমন বলেছিলেন, তেমনি দেখতে পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকে দেখতে পাননি। ২৫ তখন তিনি তাদের বললেন, হে অবুঝরা এবং ধীর হৃদয়ের লোকেরা, ভাববাদীরা যে সব কথা বলেছেন, সেই সবে বিশ্বাস করতে পার না ২৬ খ্রীষ্টের কি প্রয়োজন ছিল না যে, এই সব দুঃখভোগ করেন ও নিজের মহিমায় প্রবেশ করেন? ২৭ পরে তিনি মোশি থেকে ও সমস্ত ভাববাদী থেকে শুরু করে সব শাস্ত্রে তাঁর নিজের বিষয়ে যে সব কথা আছে, তা তাদের বুঝিয়ে দিলেন। ২৮ পরে তারা যেখানে যাচ্ছিলেন, সেখানে সেই গ্রামের কাছে আসলেন; আর তিনি দূরে যাবার ভাব দেখালেন।২৯ কিন্তু তারা অনুরোধ করে বললেন, আমাদের সঙ্গে থাকুন, কারণ সন্ধ্যা হয়ে আসল, বেলা প্রায় চলে গেছে। তাতে তিনি তাদের সঙ্গে থাকার জন্য গৃহে ঢুকলেন।  ৩০ পরে যখন তিনি তাদের সঙ্গে খাবার খেতে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে ধন্যবাদ করলেন এবং ভেঙে তাদের দিতে লাগলেন। ৩১ অমনি তাদের চোখ খুলে গেল, তারা তাঁকে চিনতে পারলেন, আর তিনি তাদের থেকে অদৃশ্য হলেন। ৩২ তখন তারা পরস্পরকে বললেন, পথের মধ্যে যখন তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, আমাদের কাছে শাস্ত্রের অর্থ বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের ভিতরে আমাদের হৃদয় কি উদ্দীপ্ত হয়ে উঠছিল না? ৩৩ আর তারা সেই দিনের ই উঠে যিরুশালেমে ফিরে গেলেন; এবং সেই এগারো জনকে ও তাদের সঙ্গীদের একসঙ্গে দেখতে পেলেন; ৩৪ তারা বললেন, প্রভু নিশ্চয় উঠেছেন এবং শিমোনকে দেখা দিয়েছেন।  ৩৫ পরে সেই দুজন পথের ঘটনার বিষয়ে এবং রুটি ভাঙার দিন তারা কীভাবে তাঁকে চিনতে পেরেছিলেন, এই সব বিষয়েও বললেন। শিষ্যদের সামনে যীশুর আবির্ভাব।৩৬ তারা একে অপর এই কথাবার্তা বলছেন, ইতিমধ্যে তিনি নিজে তাদের মাঝে দাঁড়ালেন, ও তাদের বললেন, তোমাদের শান্তি হোক।৩৭ এতে তারা খুব ভয় পেয়ে মনে করলেন, ভূত দেখছি। ৩৮ তিনি তাদের বললেন, কেন উদ্বিগ্ন হচ্ছ? তোমাদের মনে সন্দেহ জাগছে কেন? ৩৯ আমার হাত ও আমার পা দেখ, এ আমি নিজে; আমাকে স্পর্শ কর, আর দেখ; কারণ আমায় যেমন দেখছ, ভূতের এই রকম হাড় মাংস নেই। ৪০ এই বলে তিনি তাদের হাত ও পা দেখালেন। ৪১ তখনও তারা এত আনন্দিত হয়েছিল যে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ও অবাক হচ্ছিল, তাই তিনি তাদের বললেন, তোমাদের কাছে এখানে কি কিছু খাবার আছে? ৪২ তখন তারা তাঁকে একটি ভাজা মাছ দিলেন।  ৪৩ তিনি তা নিয়ে তাদের সামনে খেলেন। ৪৪ পরে তিনি তাদের বললেন, তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে আমি তোমাদের যা বলেছিলাম, আমার সেই কথা এই, মোশির ব্যবস্থায় এবং ভাববাদীদের পুস্তকে এবং গীতসংহিতায় আমার বিষয়ে যা যা লেখা আছে, সে সব অবশ্য পূর্ণ হবে। ৪৫ তখন তিনি তাদের মন খুলে দিলেন, যেন তারা শাস্ত্র বুঝতে পারে,  ৪৬ আর তিনি তাদের বললেন, এই কথা লেখা আছে যে, খ্রীষ্ট দুঃখভোগ করবেন এবং তৃতীয় দিনের মৃতদের মধ্যে থেকে উঠবেন; ৪৭ আর তাঁর নামে পাপ ক্ষমার জন্য মন ফেরানোর কথা সব জাতির কাছে প্রচারিত হবে যিরুশালেম থেকে শুরু করা হবে। ৪৮ তোমরাই এসবের সাক্ষী।

লুক ২৪:১-৪৮

যীশুর প্রথম ফল বিজয়

‘প্রথম ফলের’ পবিত্র দিনে মৃত্যুর উপরে যীশু বিজয়ী হয়ে উঠলেন, এমন একটি কীর্তি যাকে তাঁর শত্রু এবং শিষ্যরা উভয়ই অসম্ভব মনে করেছিল I যেভাবে হোলি মন্দের উপর ভালোর বিজয়কে উদযাপন করে, সেইভাবে যীশুর বিজয় এই দিনে ভালোর একটি বিজয় ছিল I  

৫৪ আর এই ক্ষয়ণীয় যখন অক্ষয়তা পরিহিত হবে এবং এই মর্ত্ত্য যখন অমরতা পরিহিত হবে, তখন এই যে কথা পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, তা সফল হবে,
৫৫ “মৃত্যু জয়ে কবলিত হল।” “মৃত্যু, তোমার জয় কোথায়? মৃত্যু, তোমার হুল কোথায়?”
৫৬ মৃত্যুর হুল হল পাপ, ও পাপের শক্তি হলো নিয়ম।

১ করিন্থীয়ান ১৫:৫৪-৫৬

আমরা যেমন ভূমিকা পাল্টানোর মাধ্যমে হোলি উদযাপন করি, এই ‘প্রথম ফল’ সর্বাধিক উল্টো ভূমিকা ঘটিয়েছিলI পূর্বে মৃত্যুর মানবজাতির উপরে চরম ক্ষমতা ছিল I এখন যীশু মৃত্যুর উপরে ক্ষমতা জয় করে নিয়েছেন I তিনি সেই ক্ষমতাকে উল্টে দিয়েছেন I যেমনভাবে নরসিংহ হিরন্যকশিপুর ক্ষমতার বিরুদ্ধে একটি উদ্বোধন দেখতে পেয়েছিল, যীশু পাপ রহিত মৃত্যু বরণের দ্বারা, এক আপাতদৃষ্টিতে অপরাজেয় মৃত্যুকে পরাস্ত করার উদ্বোধনকে দেখতে পেয়েছিলেন I     

আপনার এবং আমার জন্য বিজয়

তবে এটি কেবলমাত্র যীশুর জন্য একট বিজয় ছিল না I এটি আপনার এবং আমার পক্ষেও একটি বিজয়, প্রথম ফলের সাথে এর সময় নির্ধারিত গ্যারান্টিযুক্ত I বাইবেল ব্যাখ্যা করে:  

২০ কিন্তু বাস্তবিক খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত হয়েছেন, তিনি মৃতদের অগ্রিমাংশ। ২১ কারণ মানুষের মাধ্যমে যেমন মৃত্যু এসেছে, তেমন আবার মানুষের মাধ্যমে মৃতদের পুনরুত্থান এসেছে।২২ কারণ আদমে যেমন সবাই মরে, তেমনি আবার খ্রীষ্টেই সবাই জীবনপ্রাপ্ত হবে। ২৩ কিন্তু প্রত্যেক জন নিজের নিজের শ্রেণীতে; খ্রীষ্ট অগ্রিমাংশ, পরে খ্রীষ্টের লোক সব তাঁর আগমন কালে।২৪ তারপরে পরিণাম হবে; তখন তিনি সব আধিপত্য, সব কর্তৃত্ব এবং পরাক্রম কে পরাস্ত করলে পর পিতা ঈশ্বরের হাতে রাজত্ব সমর্পণ করবেন। ২৫ কারণ যত দিন না তিনি “সব শত্রুকে তাঁর পদতলে না রাখবেন,” তাঁকে রাজত্ব করতেই হবে। ২৬ শেষ শত্রু যে মৃত্যু, সেও বিলুপ্ত হবে।

১ করিন্থীয়ান ১৫:২০-২৬

যীশু প্রথম ফলের উপরে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন যাতে আমরা জানতে পারি যে তিনি মৃত্যু থেকে তাঁর পুনরুত্থানে আমাদের ভাগীদার হতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন I ঠিক যেমন প্রথম ফল পরে একটি বিরাট ফসলের প্রত্যাশা নিয়ে নতুন বসন্ত জীবনের উপহার ছিল, ঠিক তেমনি ‘প্রথম ফলের’ উপরে যীশুর উত্থান একটি পরবর্তী পুনরুত্থানের এক প্রত্যাশা সেই সকলের জন্য ধারণ করে ‘যারা তাঁর মধ্যে থাকে’ I     

বসন্তের বীজ…

অথবা এইভাবে ভাবুন I প্রথম দিনে যীশু নিজেকে ‘সেই বীজ’ বলে সম্বোধন করলেন I হোলি যেমন বসন্তের বীজ থেকে নতুন জীবনের অঙ্কুরকে উদযাপন করে, তাই হোলিও যীশুর নতুন জীবনের দিকে নির্দেশ করে, সেই ‘বীজ’ যিনি আবারও বসন্তে জীবনে পুনরায় ফিরে এসেছিলেন I 

পরবর্তী মনু…

এছাড়াও বাইবেল ব্যাখ্যা করে যীশুর পুনরুত্থান মনুর ধারণাকে ব্যবহার করে I প্রাচীনতম বেদের মধ্যে মনু সমস্ত মানবজাতির পূর্বসুরী ছিলেন I আমরা সবাই তার সন্তান I পুরাণ তারপরে প্রতিটি কল্প বা যুগের জন্য এক নতুন মনু অন্তর্ভুক্ত করেছিল (শ্রদ্ধাদেব মনু এই কল্পের মধ্যে মানবান্তর) I হিব্রু বেদ ব্যাখ্যা করে যে আদম হ’ল এই মনু, যার মৃত্যুর সাথে সাথে সমস্ত মানব জাতির মৃত্যু ঘটেছিল, যেহেতু এটি তার থেকে তার সন্তানদের কাছে চলে যায় I      

তবে যীশু হলেন পরবর্তী মনু I মৃত্যুর উপরে তাঁর বিজয়ের সাথে তিনি এক নতুন কল্পের উদঘাটন করলেন I যাঁর সন্তান রূপে আমরাও যীশুর ন্যায় পুনরুত্থিত হয়ে মৃত্যুর উপরে এই বিজয়ের ভাগীদারী হব I তিনি প্রথমে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং আমাদের পুনরুত্থান পরে আসে I তিনি নতুন জীবনের তাঁর প্রথম ফলকে অনুসরণ করতে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন I  

ইস্টার: সেই রবিবারের পুনরুত্থানের উদযাপন

ইস্টার এবং হোলি উভয়ই রঙ দিয়ে উদযাপন করা হয়

আজকে, আমরা প্রায়শই যীশুর পুনরুত্থানকে ইস্টার বলে ডাকি, এবং ইস্টার রবিবার সেই রবিবারকে স্মরণ করে যেদিন তিনি উত্থিত হয়েছিলেন I অনেকে নতুন জীবনের রঙিন প্রতীক সমূহের দ্বারা ইস্টার উদযাপন করে, যেমন বাড়িকে রঙ করে I হোলিকে যেমন রঙের সাহায্যে উদযাপন করি তেমনি ইস্টারকেও I হোলি যেমন নতুন সুচনাকে উদযাপন করে ইস্টারও তেমনি করে I ইস্টার উদযাপনের নির্দিষ্ট পদ্ধতিটি গুরুত্বপূর্ণ নয় I যেটি গুরুত্বপূর্ণ তা হ’ল প্রথম ফলের পরিপূর্ণতা হিসাবে যীশুর পুনরুত্থান, এবং এর উপকারগুলি পাওয়া I

এই সপ্তাহের জন্য কালপঞ্জিতে আমরা এটিকে দেখি:

প্রথম ফলে যীশু মৃত্যুথেকে ওঠেন – আপনাকে এবং আমাকে মৃত্যু থেকে নতুন জীবন উপহার দেওয়া হয়েছে

 ‘শুভ শুক্রবার’ এর উত্তর দেওয়া হয়েছে

কেন শুভ শুক্রবার ‘শুভ’ আমাদের প্রশ্ন সম্বন্ধে এটি উত্তর দেয় I   

৯ কিন্তু দূতদের থেকে যিনি অল্পই নীচু হলেন, সেই ব্যক্তিকে অর্থাৎ যীশুকে দেখতে পাচ্ছি, তিনি মৃত্যুভোগের কারণে মহিমা ও সম্মানমুকুটে ভূষিত হয়েছে, যেন ঈশ্বরের অনুগ্রহে সবার জন্য মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহণ করেন।

ইব্রীয় ২:৯

কিন্তু দূতগণ অপেক্ষা যিনি অল্পই ন্যূনীকৃত হইলেন, সেই ব্যক্তিকে অর্থাৎ যীশুকে দেখিতেছি, তিনি মৃত্যুভোগ হেতু প্রতাপ ও সমাদরমুকুটে বিভূষিত হইয়াছেন, যেন ঈশ্বরের অনুগ্রহে সকলের নিমিত্ত মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহণ করেন

যখন যীশু ‘মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহণ করলেন’ তিনি আপনার, আমার এবং প্রত্যেকের জন্য এইরকম করলেন I শুভ শুক্রবার ‘শুভ’ কারণ এটি আমাদের জন্য শুভ  ছিল I   

যীশুর পুনরুত্থান বিবেচিত

যীশু তাঁর পুনরুত্থানকে প্রমাণ করতে নিজেকে মৃত্যু থেকে অনেক দিন ধরে জীবিত দেখিয়েছিলেন, এখানে লিপিবদ্ধ রয়েছে I তবে তাঁর প্রথম আবির্ভাব তাঁর শিষ্যদের কাছে:   

…তাদের কাছে বাজে কথা বলে মনে হয়েছিল

২৪\:১০

এর জন্য যীশুকে বলতে হ’ল:

২৭ পরে তিনি মোশি থেকে ও সমস্ত ভাববাদী থেকে শুরু করে সব শাস্ত্রে তাঁর নিজের বিষয়ে যে সব কথা আছে, তা তাদের বুঝিয়ে দিলেন।

লুক ২৪:২৭

এবং পরে আবার:

৪৪ পরে তিনি তাদের বললেন, তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে আমি তোমাদের যা বলেছিলাম, আমার সেই কথা এই, মোশির ব্যবস্থায় এবং ভাববাদীদের পুস্তকে এবং গীতসংহিতায় আমার বিষয়ে যা যা লেখা আছে, সে সব অবশ্য পূর্ণ হবে।

লুক ২৪:৪৪

আমরা কি করে নিশ্চিত হতে পারি যে আমাদেরকে অনন্ত জীবন দেওয়ার জন্য এটি সত্যই ঈশ্বরের পরিকল্পনা ছিল কিনা? একমাত্র ঈশ্বর ভবিষ্যত জানেন I ঋষিগণ কয়েকশত পূর্বে চিহ্ন এবং ভাববাণী সমূহ লিখেছিলেন যাতে আমরা যাচাই করতে পারি যীশু সেগুলিকে পুরণ করেছিলেন কিনা…  

৪ যেন, আপনি যেসব সত্য বিষয়ে শিক্ষা পেয়েছেন, সে সকল বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন।

লুক ১:৪

যীশুর মৃত্যু এবং পুনরুত্থান সম্পর্কে জ্ঞাত হতে, আমরা অনুসন্ধান করি:

১. হিব্রু বেদ সৃষ্টির পর থেকে আবেগী সপ্তাহকে নৃত্য হিসাবে দেখায় 

২. একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরুত্থানের প্রমাণ I 

৩. পুনরুত্থানের জীবনের এই উপহারটি কিভাবে পাওয়া যায় I

৪. ভক্তির মাধ্যমে যীশুকে বুঝুন

৫. রামায়ণের চশমার মাধ্যমে সুসমাচার I

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *