অযোধ্যার দীর্ঘ এবং তিক্ত কলহ এক নতুন মাত্রায় পৌঁছায় যখন এটি খুব দুরত্বে নিউইয়র্ক শহরে একট গোলমাল সৃষ্টি করেছিল যার সম্বন্ধে আসাম নিউজ রিপোর্ট করেছিল I একই স্থানের বাবরি মসজিদটির বিরুদ্ধে নির্মিত পরম্পরাগতভাবে রামের জন্ম স্থান (রাম জনমভূমি) বলে বিবেচিত স্থানের উপরে নিয়ন্ত্রণ কে ঘিরে অযোধ্যার বিরোধ কয়েক শত বছরের পুরনো রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, এবং সামাজিক-ধর্মীয় কোন্দল I
বাবরি মসজিদের স্তম্ভলিপি অনুসারে, প্রথম মুঘল সম্রাট, বাবর, ১৫২৮-২৯ সালে নির্মাণ করেছিলেন I তবে কয়েক শতাব্দী ধরে বিতর্কের ছায়া বাবরি মসজিদের উপরে পড়েছিল কারণ অনেকে বিশ্বাস করত যে বাবর এটিকে রামের জন্ম স্থানের স্মরণে নির্মিত একটি আগেকার মন্দিরের ধ্বংসের উপরে নির্মাণ করেছিল I কয়েক শতাব্দী ধরে কোন্দলটি উত্তেজনায় ফুটছিল, প্রায়শই সহিংস দাঙ্গা এবং গুলি চলতে থাকে I
অযোধ্যাতে কর সেবক
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভি এইচ পি) এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বি জে পি) দ্বারা আয়োজিত ১৯৯২ এর একটি সমাবেশ দেড় লক্ষ কর সেবক বা ধর্মীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সংগ্রহ করেছিল I এই কর সেবকরা মার্চের মধ্যে বাবরি মসজিদকে ধ্বংস করেছিল I মসজিদের ধ্বংসের কারণে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল I বোম্বেতে আনুমানিক 2000 কে হত্যা করা হয়েছিল I
তখন থেকে ২০১৯ পর্যন্ত কোন্দল আদালতের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হ’ল, জাতির রাজনীতির মধ্যে ঘুরপাক খেল, এবং রাস্তায় রাস্তায় দাঙ্গা হ’ল I মন্দির নির্মাণ শুরু করার জন্য কর সেবকদের প্রস্তুত উপস্থিতি ভি এইচ পি –এর দিকে গতিবেগের শিরোনাম দিয়েছিল I
অবশেষে ২০১৯ এর মধ্যে, সুপ্রীম কোর্ট চূড়ান্ত আবেদনের মামলায় তাদের রায় ঘোষণা করলI এটি রায় দিল যে করের নথি অনুযায়ী ওই জমি সরকারের অধীনে ছিল I এটি আরও আদেশ দিল যে একটি ট্রাস্ট হিন্দু মন্দির নির্মাণ করতে জমি পাবে I সরকারকে আর একর্টি জমির এলাকাকে সুন্নি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ডকে তাদের মসজিদের জন্য বরাদ্দ করতে ছিল।
২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারীতে, ভারত সরকার ঘোষণা করল যে শ্রী রাম জনমভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্ট অযোধ্যাতে রাম মন্দির নির্মাণ করবে I ২০২০ সালের ৫ আগস্ট জমি-পূজন অনুষ্ঠান ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারা উদ্বোধন করা হয়েছিল I এই মন্দির নির্মাণের শুরুতে উত্তেজনা বাড়ল যা নিউ ইয়র্ক শহরে অনুভূত হল I
কর সেবক মূলত একটি শিখ পরিভাষা ছিল কারোর জন্য যে স্বাধীন ভাবে ধর্মীয় উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় তার সেবাদান করে I পরিভাষাটি সংস্কৃত থেকে নেওয়া কর (হাত) এবং সেবক (দাস) I অযোধ্যা কোন্দলে, শিখ পরম্পরা থেকে ধার করে ভি এইচ পি – এর দ্বারা কর সেবকদের সংগঠিত করা হয়েছিল I
যীশু (ভিন্ন) কর সেবক হিসাবে
তবে এই অযোধ্যা কোন্দলের বহু পূর্বে, যীশুও শত্রুদের সাথে একটি বিরোধ ঘোষণা করে কর সেবকের ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন, যেটি আবারও মানব জীবনের অনেক ক্ষেত্রকেই পুনরায় দখল করেছে, মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে যা আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে I এই কোন্দলটি আবারও একটি শুভ মন্দিরে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল I তবে এটি একটি নিকটস্থ গ্রামে শুরু হয়েছিল যখন যীশু, একজন কর সেবক হয়ে, স্বেচ্ছাকৃতভাবে বন্ধুদের বড় প্রয়োজনে সাহায্য করেছিলেন I এই ধরণের কার্যটি অযোধ্যার কলহের চেয়ে ইতিহাসের পরিবর্তন এবং আমাদের জীবনকে আরও গভীরভাবে প্রভাবিত করে, ঘটনাগুলির একটি শৃঙ্খলকে স্ফুলিঙ্গ করে তোলে I যীশুর কর সেবকের কার্যাবলী তাঁর কেন্দ্রীয় মিশনকে প্রকাশিত করেছিল I
কি ছিল যীশুর মিশন?
যীশু শিক্ষা দিয়েছিলেন, সুস্থ করেছিলেন, এবং অনেক অলৌকিক কার্য সমূহ সম্পন্ন করেছিলেন I তবে প্রশ্নটি এখনও শিষ্য, অনুগামী এবং এমনকি তাঁর সেবাকারীদের মনে থেকে যায়: কেন তিনি এসেছিলেন? মুসা সহ পূর্ববর্তী ঋষিদের মধ্যে অনেকে আবারও শক্তিশালী অলৌকিক কার্য সম্পাদিত করেছিল I যেহেতু মুসা ইতিমধ্যেই ধর্মের ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, এবং “যীশু ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করতে আসেন নি”, তাহলে তাঁর মিশন কি ছিল?
যীশুর বন্ধু অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ল I তাঁর শিষ্যরা আশা করেছিল যে যীশু তাঁর বন্ধুকে সুস্থ করবেন, যেভাবে তিনি অন্য অনেকদের সুস্থ করেছেন I সুসমাচার লিপিবদ্ধ করে কিভাবে তিনি তাঁর বন্ধুকে শুধুমাত্র সুস্থতা করার চেয়ে স্বেচ্ছাকৃতভাবে আরও অনেক গভীর ভাবে সাহায্য করলেন I এটি প্রকাশিত করল তিনি কি করতে স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন, তাঁর কর সেবক হিসাবে মিশনকে I এখানে বিবরণটি রয়েছে I
মৃত্যুর মুখোমুখি যীশু
যোহন ১১:১-৪৪১ একজন যাঁর নাম লাসার তিনি অসুস্থ ছিলেন, তিনি মরিয়ম ও তাঁর বোন মার্থা বৈথনিয়া গ্রামের লোক ছিলেন।
২ ইনি হলেন সেই লাসারের বোন মরিয়ম, যিনি প্রভুকে সুগন্ধি তেল মাখিয়ে দেন এবং নিজের মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা মুছে দেন; তাঁরই ভাই লাসার অসুস্থ ছিলেন।
৩ বোনেরা তাঁকে বলে পাঠালেন, প্রভু, দেখুন আপনি যাকে ভালবাসেন সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
৪ যখন যীশু এই কথা শুনলেন, তিনি বললেন, এই অসুস্থতা মৃত্যুর জন্য হয়নি কিন্তু ঈশ্বরের মহিমার জন্য হয়েছে, সুতরাং যেন ঈশ্বরের পুত্র এর দ্বারা মহিমান্বিত হন।
৫ যীশু মার্থাকে ও তাঁর বোনকে এবং লাসারকে ভালবাসতেন।
৬ যখন তিনি শুনলেন যে লাসার অসুস্থ হয়েছে, তখন যে জায়গায় ছিলেন যীশু সেই জায়গায় আরও দুই দিন থাকলেন।
৭ এই সবের পরে তিনি শিষ্যদের বললেন, “চল আমরা আবার যিহূদিয়াতে যাই।”
৮ শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, রব্বি, এই এক্ষণে ইহূদিরা আপনাকে পাথর মারবার চেষ্ঠা করছিল, আর আপনি আবার সেখানে ফিরে যাচ্ছেন?
৯ যীশু উত্তর দিলেন, এক দিনের কি বারো ঘন্টা আলো নেই? যদি কেউ দিনের র আলোতে চলে সে হোঁচট খাবে না কারণ সে এই পৃথিবীর আলো দেখে।
১০ কিন্তু যদি সে রাতে চলে, সে হোঁচট খায় কারণ আলো তার মধ্যে নেই।
১১ যীশু এই সব কথা বললেন এবং এই সব কিছুর পরে তিনি তাঁদেরকে বললেন, আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে, কিন্তু আমি যাচ্ছি যেন তাকে ঘুম থেকে জাগাতে পারি।
১২ তখন শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, প্রভু, সে যদি ঘুমিয়ে থাকে তবে সে সুস্থ হবে।
১৩ যীশু তাঁর মৃত্যুর সম্বন্ধে বলেছিলেন কিন্তু তাঁরা মনে করলেন যে, তিনি ঘুমিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন সেই কথা বলছেন।
১৪ তখন যীশু স্পষ্টভাবে তাঁদেরকে বললেন লাসার মরে গেছে।
১৫ আর আমি তোমাদের জন্য আনন্দ করছি যে, আমি সেখানে ছিলাম না যেন তোমরা বিশ্বাস কর। এখন চল আমরা তার কাছে যাই।
১৬ থোমা, যাকে দিদুমঃ [যমজ] বলে, তিনি সহ শিষ্যদের বললেন চল, আমরাও যাই যেন যীশুর সঙ্গে মরতে পারি।
১৭ যীশু যখন আসলেন তিনি শুনতে পেলেন যে, লাসার তখন চার দিন হয়ে গেছে কবরে আছেন।
১৮ বৈথনিয়া যিরূশালেমের কাছে প্রায় তিন কিলোমিটার দূর;
১৯ ইহূদিদের মধ্য থেকে অনেকে মার্থা ও মরিয়মের কাছে এসেছিল তাঁদের ভাইয়ের জন্য সান্ত্বনা দিতে।
২০ যখন মার্থা শুনল যে, যীশু এসেছেন তিনি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন, কিন্তু মরিয়ম তখনও ঘরে বসে ছিলেন।
২১ মার্থা তখন যীশুকে বললেন, প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন আমার ভাই হয়ত মরত না।
২২ তবে এখনও আমি জানি যে, যা কিছু আপনি ঈশ্বরের কাছে চাইবেন, ঈশ্বর তা আপনাকে দেবেন।
২৩ যীশু তাঁকে বললেন, তোমার ভাই আবার উঠবে।
২৪ মার্থা তাঁকে বললেন, আমি জানি যে শেষের দিনে পুনরুত্থানে সে আবার উঠবে।
২৫ যীশু তাঁকে বললেন, আমিই পুনরুত্থান ও জীবন; যে কেউ আমাকে বিশ্বাস করে, সে মরলেও জীবিত থাকবে।
২৬ এবং যে কেউ বেঁচে আছে এবং আমাতে বিশ্বাস করে সে কখনও মরবে না। এটা কি বিশ্বাস কর?
২৭ তিনি তাঁকে বললেন, হ্যাঁ প্রভু, আমি বিশ্বাস করি যে আপনিই সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র যিনি এই পৃথিবীতে আসছেন।
২৮ এই সব কথা বলে তিনি চলে গেলেন এবং তার নিজের বোন মরিয়মকে গোপনে ডাকলেন। তিনি বললেন গুরু এখানে আছেন এবং তোমাকে ডাকছেন।
২৯ যখন মেরি এই কথা শুনলেন তিনি শীঘ্র উঠে যীশুর কাছে গেলেন।
৩০ যীশু তখনও গ্রামের মধ্যে আসেননি কিন্তু যেখানে মার্থা তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন সেই জায়গাতেই ছিলেন।
৩১ তখন যে ইহূদিরা মরিয়মের সঙ্গে ঘরের মধ্যে ছিল ও তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তারা যখন তাঁকে তাড়াতাড়ি উঠে বাইরে যেতে দেখল তখন তারাও তাঁর পিছন পিছন গেল এবং মনে করল, তিনি কবরের কাছে কাঁদতে যাচ্ছেন।
৩২ তখন মরিয়ম যেখানে যীশু ছিলেন সেখানে যখন আসলেন, তখন তাঁকে দেখে তাঁর পায়ে পড়ে বললেন, প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন, আমার ভাই মরত না।
৩৩ যীশু যখন দেখলেন তিনি কাঁদছেন, ও তাঁর সঙ্গে যে ইহূদিরা এসেছিল তারাও কাঁদছে তখন আত্মায় খুব অস্থির হয়ে উঠলেন ও উদ্বিগ্ন হলেন,
৩৪ তিনি বললেন “তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ?” তাঁরা তাঁকে বললেন, প্রভু এসে দেখুন।
৩৫ যীশু কাঁদলেন।
৩৬ তখন ইহূদিরা বলল, দেখ, তিনি লাসারকে কতটা ভালবাসতেন।
৩৭ কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে কেউ বলল, এই মানুষটি অন্ধের চক্ষু খুলে দিয়েছেন, ইনি কি লাসারের মৃত্যুও রক্ষা করতে পারতেন না?
৩৮ তাতে যীশু আবার মনে মনে অস্থির হয়ে কবরের কাছে গেলেন। সেই কবর একটা গুহা ছিল এবং তার উপরে একটা পাথর দেওয়া ছিল।
৩৯ যীশু বললেন, “তোমরা পাথরটা সরিয়ে ফেল।” যে মারা গেছে লাসার তার বোন মার্থা যীশুকে বললেন, প্রভু, এতক্ষণ ওই দেহ পচে দুর্গন্ধ হয়ে গেছে কারণ সে মারা গেছে আজ চার দিন।
৪০ যীশু তাঁকে বললেন, “আমি কি তোমাকে বলিনি যে, যদি তুমি বিশ্বাস কর তবে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাবে?” সুতরাং তারা পাথরটা সরিয়ে ফেলল।
৪১ পরে যীশু আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, পিতঃ, তোমার ধন্যবাদ দিই যে, তুমি আমার কথা শুনেছ।
৪২ আমি জানতাম তুমি সবদিন আমার কথা শোন কিন্তু এই যে সব মানুষের দল আমার চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে এদের জন্য এই কথা বললাম, যেন তারা বিশ্বাস করে যে তুমিই আমাকে পাঠিয়েছ।
৪৩ এই সব বলার পরে তিনি চিত্কার করে ডেকে বললেন লাসার, বাইরে এস।
৪৪ তাতে সেই মৃত মানুষটি বেরিয়ে আসলেন; তাঁর পা ও হাত কবর কাপড়ে জড়ানো ছিল এবং মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। যীশু তাদেরকে বললেন, “তাকে খুলে দাও এবং যেতে দাও।”
যীশুর স্বেচ্ছাকৃত সেবা …
ভগ্নীরা আশা করেছিল যে যীশু তাদের ভাইকে সুস্থ করতে দ্রুত আসবেন I যীশু উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে তার পৌঁছোতে দেরী করলেন, লাসারকে মারা যেতে অনুমতি দিলেন, এবং কেউ বুঝলো না কেন I বিবরণটি দুবার বলে যে যীশু ‘গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছিলেন’ এবং তাই তিনি রোদন করলেন I
কি তাকে মর্মাহত করল?
যীশু মৃত্যুর নিজের প্রতি ক্রোধিত ছিলেন, বিশেষভাবে যেহেতু তিনি তাঁর বন্ধুর উপরে তার কর্ত্তৃত্ব দেখলেন I
এই উদ্দেশ্যে তিনি তাঁর আগমনটি সুনির্দিষ্টভাবে বিলম্ব করেছিলেন – যাতে তিনি মৃত্যুর নিজের সাথে মুখোমুখি হতে পারেন I যীশু চার দিন অপেক্ষা করলেন যাতে প্রত্যেকে – আমরা যারা এটি পড়ছি তারা সহ – নিশ্চিত ভাবে জানব যে লাসার মৃত ছিল, শুধুমাত্র গুরুতরভাবে অসুস্থ ছিল না I
… আমাদের মহত্তম প্রয়োজন
অসুস্থ লোকেদের সুস্থ করা ভাল অর্থাৎ যেমন, তাদের মৃত্যুকে স্থগিত করে I সুস্থ হোক বা না হোক, ভাল বা মন্দ, স্ত্রী বা পুরুষ, বৃদ্ধ বা যুবক, ধার্মিক বা নয় মৃত্যু লোকেদের অবশেষে হরণ করবে I আদমের সময় থেকে এটি সত্য হয়ে এসেছে, যে তার অবাধ্যতার কারণে মরণশীল হয়ে উঠেছিল I তার সমস্ত বংশধরগণ, আমি আপনি সহ, এক শত্রুর দ্বারা বন্দী হয়ে আছি – মৃত্যু I আর অনুভব করি যে মৃত্যুর বিরুদ্ধে কোনো উত্তর, কোনো আশা নেই I যখন কেবল অসুস্থতা থাকে আশা টিকে থাকে, সেই জন্যই লাসারের বোনেদের কাছে সুস্থতার মধ্যে আশা ছিল I কিন্তু মৃত্যুর সাথে তাদের কোনো আশা ছিল না I এটি আমাদের ক্ষেত্রেও সত্য I হাঁসপাতালে কোনো আশা থাকলেও অন্তিম সংস্কারে কোনো আশা নেই I মৃত্যু আমাদের চূড়ান্ত শত্রু I এটি এমন শত্রু যাকে যীশু আমাদের জন্য স্বেচ্ছাকৃতভাবে পরাস্ত করেছিলেন আর এই জন্যই তিনি বোনেদের কাছে ঘোষণা করলেন:
“আমিই পুনরুত্থান এবং জীবন I”
যোহন ১১:২৫
যীশু মৃত্যর ক্ষমতাকে ভাঙ্গতে এসেছিলেন এবং সকলকে জীবন দিতে যারা এটিকে চেয়েছিল I এই মিশনের জন্য তিনি লাসারকে মৃত্যু থেকে উঠিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর কর্ত্তৃত্ব দেখিয়েছিলেন I তিনি অন্য সকলের জন্য সেই একই প্রস্তাব দেন যারা মৃত্যুর পরিবর্তে জীবন চাইবে I
প্রতিক্রিয়া সমূহ একটি কলহ শুরু করে
যদিও মৃত্যু সকল লোকেদের চূড়ান্ত শত্রু, আমাদের মধ্যে অনেকে ক্ষুদ্রতর ‘শত্রুদের’ সঙ্গে জড়িয়ে পরে, যার ফলে বিরোধগুলো (রাজনৈতিক, ধর্মীয়, জাতিগত ইত্যাদি) সর্বদা আমাদের চতুর্দিকে চলতে থাকে I অযোধ্যা কোন্দলের মধ্যে এটিকে আমরা দেখি I যাই হোক সকল লোকেরা এটি বা অন্য বিরোধগুলোর মধ্যে’ তারা তাদের ‘পক্ষে’ সঠিক হোক বা না হোক তাতে কিছু এসে যায় না, তারা মৃত্যুর বিরুদ্ধে শক্তিহীন I সতী এবং শিবের সাথে আমরা এটিকে দেখেছি I
যীশুর সময়েও এটি সত্য ছিল I এই অলৌকিক কার্যের প্রতি প্রতিক্রিয়াগুলো থেকে আমরা দেখতে পারি তখনকার বসবাসকারী বিভিন্ন লোকেদের মধ্যে কি চিন্তা ছিল I সুসমাচার বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াগুলো লিপিবদ্ধ করেছিল৷
যোহন ১১:৪৫-৫৭৪৫ তখন ইহূদিদের অনেকে যারা মরিয়মের কাছে এসেছিল এবং দেখেছিল যীশু যা করেছিলেন, তারা তাঁতে বিশ্বাস করল।
৪৬ কিন্তু তাদের কয়েক জন ফরীশীদের কাছে গেল এবং যীশু যা কিছু করেছিলেন তাদেরকে বলল।
৪৭ তখন প্রধান যাজকগণ ও ফরীশীরা মহাসভা করে বলতে লাগল আমরা এখন কি করব? এ মানুষটি ত অনেক আশ্চর্য্য কাজ করছে।
৪৮ আমরা যদি তাঁকে এই ভাবে চলতে দিই, তবে সবাই তাঁকেই বিশ্বাস করবে; আর রোমীয়েরা এসে আমাদের দেশ এবং আমাদের জাতি উভয়ই কেড়ে নেবে।
৪৯ কিন্তু তাদের মধ্যে একজন যার নাম কায়াফা, সেই বছরের মহাযাজক ছিলেন তাদেরকে বললেন, তোমরা কিছুই জানো না।
৫০ আর ভেবেও দেখ না যে, তোমাদের জন্য এটি ভাল, আমাদের সব জাতি নষ্ট হওয়ার থেকে বরং সব মানুষের জন্য একজন মরা ভালো।
৫১ এই সব কথা যে তিনি নিজের থেকে বললেন, তা নয়, কিন্তু সেই বৎসরের মহাযাজক হওয়াতে তিনি এই ভবিষ্যৎ বাণী বললেন যে, আমাদের জাতির জন্য যীশু মরবেন।
৫২ আর শুধুমাত্র সেই জাতির জন্য নয় কিন্তু ঈশ্বরের যে সব সন্তানরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, সেই সবাইকে যেন জড়ো করে এক করেন।
৫৩ সুতরাং সেই দিন থেকে তারা তাঁকে মেরে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র করতে লাগলো।
৫৪ তখন যীশু আর খোলাখুলি ভাবে ইহূদিদের মধ্যে চলাফেরা করলেন না, কিন্তু সেখান থেকে দূরে মরূপ্রান্তের কাছে এক নিরাপদ জায়গা ইফ্রয়িম নামক শহরে গেলেন, আর সেখানে শিষ্যদের সঙ্গে থাকলেন।
৫৫ তখন ইহূদিদের নিস্তারপর্ব্ব কাছে এসেছিল এবং অনেক মানুষ নিজেদেরকে শুচি করবার জন্য উদ্ধারপর্ব্বের আগে দেশ ও গ্রাম থেকে যিরূশালেমে গেল।
৫৬ তারা যীশুর খোঁজ করতে লাগল এবং মন্দিরে দাঁড়িয়ে একে অপরকে বলতে লাগলো, তোমরা কি মনে কর? তিনি কি এই পর্ব্বে আসবেন না?
৫৭ আর প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা আদেশ দিয়েছিল যে, যদি কেউ জানে যীশু কোথায় আছেন, সে যেন খবর দেয় যেন তারা তাঁকে ধরতে পারে।
নেতারা যিহূদিদের অবস্থা সম্পর্কে অধিক উদ্বিগ্ন ছিল I একটি সমৃদ্ধ মন্দির সমাজের মধ্যে তাদের খ্যাতি সুনিশ্চিত করেছিল I তারা মৃত্যুর হাতছানির থেকে বেশি চিন্তিত ছিল I
সুতরাং উত্তেজনা বেড়ে উঠল I যীশু ঘোষণা করলেন যে তিনি ‘জীবন’ এবং ‘পুনরুত্থান’ এবং স্বয়ং মৃত্যুকে পরাস্ত করবেন I লোকেদের মধ্যে অনেকে তাঁকে বিশ্বাস করল, তবে অন্য অনেকে কি বিশ্বাস করতে হবে তা জানল না I
নিজেকে এটি জিজ্ঞাসা করুন ….
আপনি যদি লাসারের উত্থাপন দেখতেন আপনি কি পচ্ছন্দ করতেন? আপনি কি ফারিসীদের মতন পছন্দ করতেন, কিছু বিরোধের উপরে মনোনিবেশ করতেন যাকে ইতিহাস শীঘ্র ভুলে যাবে, এবং মৃত্যুর থেকে জীবনের প্রস্তাবকে হারাতেন? বা আপনি কি তাঁকে ‘বিশ্বাস’ করবেন, পুনরুত্থানের তাঁর প্রস্তাবকে, এমনকি আপনি যদি আদৌ এটিকে না বুঝে থাকেন? বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সমূহ যাকে সুসমাচার অতীতে তখন লিপিবদ্ধ করে তাঁর প্রস্তাবের প্রতি সেই প্রতিক্রিয়াগুলো আজকের দিনেও আমরা করি I এটি আমাদের জন্য সেই মূল বিতর্ক যেমন এটি অতীতে তখন ছিল I
নিস্তারপর্ব এগিয়ে আসার সাথে সাথে সেই বিতর্কগুলো বাড়তে থাকল – যে উৎসবটি ১৫০০ বছর পূর্বে মৃত্যুকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চিহ্ন রূপে শুরু হয় I সুসমাচার দেখায় কিভাবে যীশু মৃত্যুর বিরুদ্ধে তাঁর কর সেবার মিশন সম্পন্ন করতে মৃতের পবিত্র নগরে প্রবেশের সাথে সাথে, বারাণসীর মতন একটি শহর, এখন খর্জুর রবিবার বলে পরিচিত এমন এক দিনে যাত্রা শুরু করেছিলেন I