Skip to content

দেহের মধ্যে ওম – শক্তির বাক্যের দ্বারা দেখা যায়

  • by

চূড়ান্ত বাস্তবতা (ব্রহ্মা) বোঝার জন্য পবিত্র চিত্র বা স্থান সমূহের অপেক্ষা শব্দ একটি সম্পূর্ণ মাধ্যম I শব্দ মূলত তরঙ্গ দ্বারা প্রেরিত তথ্য I শব্দ দ্বারা বাহিত তথ্য সুন্দর সঙ্গীত, এক গুচ্ছ নির্দেশাবলী, বা কারোর পাঠানো যে কোনো শুভেচ্ছা বার্তা হতে পারে I    

ওমের প্রতীক I প্রণবের মধ্যে লক্ষ্য করুন তিনটি অংশ এবং সংখ্যা তিন

কিছু স্বর্গীয় বা স্বর্গীয় অংশকে প্রতিফলিত করে, যখন কেউ শব্দ সহ কোনো বার্তা উচ্চারণ করে I এটি পবিত্র শব্দ এবং প্রতীক ওম (অউম) এর মধ্যে ধরা পড়ে, যাকে প্রণব রূপে উল্লেখ করা হয় I ওম (অউম) উভয়ই একটি পবিত্র মন্ত্র এবং ত্রি-অংশ প্রতীক I ওমের অর্থ এবং সংজ্ঞা বিভিন্ন ঐতিহ্যের মধ্যে বিবিধ চিন্তাধারার মধ্যে পরিবর্তিত হয় I ত্রি-অংশ প্রণব চিহ্নটি ভারতবর্ষ জুড়ে প্রাচীন পান্ডুলিপি, মন্দির, মঠ এবং আধ্যাত্মিক নির্জন আশ্রয়গুলোর মধ্যে প্রচলিত I প্রণব মন্ত্র হ’ল চূড়ান্ত বাস্তবতা (ব্রহ্মা) কে ভালোভাবে বোঝা I  ওম আকসারা বা একাক্সারার সমতুল্য – এক অবিনশ্বর বাস্তবতা I

সে ক্ষেত্রে এটি তাত্পর্য যে বেদ পুস্তকন (বাইবেল) ত্রি-অংশ প্রতিনিধির কথার মাধ্যমে সৃষ্টির ঘটাকে লিপিবদ্ধ করেছে I ঈশ্বর ‘কথা বললেন’ (সংস্কৃত व्याहृति (ব্যাহৃতি)  এবং সেখানে তরঙ্গ হিসাবে সকল লোকার মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যের একটি সম্প্রচার ছিল যা আজ ব্রাহ্যতন্ত্রের জটিল মহাবিশ্বে ভর ও শক্তির ক্রম ঘটাচ্ছে I এটি ঘটল কারণ ‘ঈশ্বরের আত্মা’ বিষয়টির উপরে ঘোরাফেরা এবং কম্পন করছিল I কম্পন উভয়ই শক্তির একটি রূপ এবং শব্দের সংশ্লেষকে গঠন করে I হিব্রু বেদ বর্ণনা করে কিভাবে ত্রয়ী: ঈশ্বর, ঈশ্বরের বাক্য, এবং  ঈশ্বরের আত্মা তাঁর বাণী (ব্যাহৃতি) প্রচার করেছেন, যার ফলে আমরা এখন মহাবিশ্বকে লক্ষ্য করি I এখানে নথিটি রয়েছে I      

হিব্রু বেদ: ত্রয়ী সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেন

১ আদিতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করিলেন। 

২ পৃথিবী ঘোর ও শূন্য ছিল, এবং অন্ধকার জলধির উপরে ছিল, আর ঈশ্বরের আত্মা জলের উপরে অবস্থিতি করিতেছিলেন। 

৩পরে ঈশ্বর কহিলেন, দীপ্তি হউক; তাহাতে দীপ্তি হইল। 

৪ তখন ঈশ্বর দীপ্তি উত্তম দেখিলেন, এবং ঈশ্বর অন্ধকার হইতে দীপ্তি পৃথক্ করিলেন। 

৫ আর ঈশ্বর দীপ্তির নাম দিবস ও অন্ধকারের নাম রাত্রি রাখিলেন। আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে প্রথম দিবস হইল।

৬-৭ পরে ঈশ্বর কহিলেন, জলের মধ্যে বিতান হউক, ও জলকে দুই ভাগে পৃথক্‌ করুক। ঈশ্বর এইরূপে বিতান করিয়া বিতানের ঊর্দ্ধস্থিত জল হইতে বিতানের অধঃস্থিত জল পৃথক্ করিলেন; তাহাতে সেইরূপ হইল। 

৮ পরে ঈশ্বর বিতানের নাম আকাশমণ্ডল রাখিলেন। আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে দ্বিতীয় দিবস হইল।

৯ পরে ঈশ্বর কহিলেন, আকাশমণ্ডলের নীচস্থ সমস্ত জল এক স্থানে সংগৃহীত হউক ও স্থল সপ্রকাশ হউক; তাহাতে সেইরূপ হইল। 

১০ তখন ঈশ্বর স্থলের নাম ভূমি, ও জলরাশির নাম সমুদ্র রাখিলেন; আর ঈশ্বর দেখিলেন যে, তাহা উত্তম। 

১১ পরে ঈশ্বর কহিলেন, ভূমি তৃণ, বীজোৎপাদক ওষধি, ও সবীজ স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী ফলের উৎপাদক ফলবৃক্ষ, ভূমির উপরে উৎপন্ন করুক; তাহাতে সেইরূপ হইল। 

১২ ফলতঃ ভূমি তৃণ, স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী বীজোৎপাদক ওষধি, ও স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী সবীজ ফলের উৎপাদক বৃক্ষ, উৎপন্ন করিল; আর ঈশ্বর দেখিলেন যে, সে সকল উত্তম। 

১৩ আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে তৃতীয় দিবস হইল।

১৪ পরে ঈশ্বর কহিলেন, রাত্রি হইতে দিবসকে বিভিন্ন করণার্থে আকাশমণ্ডলের বিতানে জ্যোতির্গণ হউক; সে সমস্ত চিহ্নের জন্য, ঋতুর জন্য এবং দিবসের ও বৎসরের জন্য হউক; 

১৫ এবং পৃথিবীতে দীপ্তি দিবার জন্য দীপ বলিয়া আকাশমণ্ডলের বিতানে থাকুক; তাহাতে সেইরূপ হইল। 

১৬ ফলতঃ ঈশ্বর দিনের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিতে এক মহাজ্যোতিঃ, ও রাত্রির উপরে কর্ত্তৃত্ব করিতে তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এক জ্যোতিঃ, এই দুই বৃহৎ জ্যোতিঃ, এবং নক্ষত্রসমূহ নির্ম্মাণ করিলেন। 

১৭ আর পৃথিবীতে দীপ্তি দিবার জন্য, এবং দিবস ও রাত্রির উপরে কর্ত্তৃত্ব করণার্থে, 

১৮ এবং দীপ্তি হইতে অন্ধকার বিভিন্ন করণার্থে ঈশ্বর ঐ জ্যোতিঃসমূহকে আকাশমণ্ডলের বিতানে স্থাপন করিলেন, এবং ঈশ্বর দেখিলেন যে, সে সকল উত্তম। 

১৯ আর ঈশ্বর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে চতুর্থ দিবস হইল।

২০ পরে ঈশ্বর কহিলেন, জল নানাজাতীয় জঙ্গম প্রাণিবর্গে প্রাণিময় হউক, এবং ভূমির ঊর্দ্ধে আকাশমণ্ডলের বিতানে পক্ষিগণ উড়ুক। 

২১ তখন ঈশ্বর বৃহৎ তিমিগণের, ও যে নানাজাতীয় জঙ্গম প্রাণিবর্গে জল প্রাণিময় আছে, সে সকলের, এবং নানাজাতীয় পক্ষীর সৃষ্টি করিলেন। পরে ঈশ্বর দেখিলেন যে, সে সকল উত্তম। 

২২ আর ঈশ্বর সে সকলকে আশীর্ব্বাদ করিয়া কহিলেন, তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, সমুদ্রের জল পরিপূর্ণ কর, এবং পৃথিবীতে পক্ষিগণের বাহুল্য হউক। 

২৩ আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে পঞ্চম দিবস হইল।

২৪ পরে ঈশ্বর কহিলেন, ভূমি নানাজাতীয় প্রাণিবর্গ, অর্থাৎ স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী গ্রাম্য পশু, সরীসৃপ ও বন্য পশু উৎপন্ন করুক; তাহাতে সেইরূপ হইল। 

২৫ ফলতঃ ঈশ্বর স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী বন্য পশু ও স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী গ্রাম্য পশু ও স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী যাবতীয় ভূচর সরীসৃপ নির্ম্মাণ করিলেন; আর ঈশ্বর দেখিলেন যে, সে সকল উত্তম।

আদিপুস্তক ১:১-২৫

হিব্রু বেদ তারপরে বিবরণ দেয় যে ঈশ্বর ‘ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে’ মানবজাতিকে সৃষ্টি করলেন যাতে আমরা সৃষ্টিকর্তাকে প্রতিফলিত করতে পারি I তবে আমাদের প্রতিফলন সীমিত যাতে আমরা প্রকৃতিকে শুধুমাত্র এর সঙ্গে কথা বলে আজ্ঞা দিতে পারিনা I তবে যীশু এটি করেছিলেন I আমরা দেখি সুসমাচারগুলো কিভাবে এই ঘটনাগুলোকে লিপিবদ্ধ করে I 

যীশু প্রকৃতির সঙ্গে কথা বলেন

যীশুর কাছে ‘বাক্যের’ দ্বারা শিক্ষা দেওয়ার এবং সুস্থ করার কর্ত্তৃত্ব ছিল I সুসমাচার লিপিবদ্ধ করে কিভাবে তিনি এইরকম শক্তির প্রদর্শন করলেন যে তাঁর শিষ্যরা ‘ভয় এবং বিস্ময়ে’ পরিপূর্ণ হয়ে গেল I 

২২ এক দিন তিনি স্বয়ং ও তাঁহার শিষ্যগণ একখানি নৌকায় উঠিলেন; আর তিনি তাঁহাদিগকে বলিলেন, আইস, আমরা হ্রদের ওপারে যাই; তাহাতে তাঁহারা খুলিয়া দিলেন। 

২৩ কিন্তু তাঁহারা নৌকা ছাড়িয়া দিলে তিনি নিদ্রা গেলেন, আর হ্রদে ঝড় আসিয়া পড়িল, তাহাতে নৌকা জলে পূর্ণ হইতে লাগিল, ও তাঁহারা সঙ্কটে পড়িলেন। 

২৪ পরে তাঁহারা নিকটে গিয়া তাঁহাকে জাগাইয়া কহিলেন, নাথ, নাথ, আমরা মারা পড়িলাম। তখন তিনি জাগিয়া উঠিয়া বায়ুকে ও জলের তরঙ্গকে ধমক্‌ দিলেন, আর উভয়ই থামিয়া গেল, ও শান্তি হইল। 

২৫ পরে তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমাদের বিশ্বাস কোথায়? তখন তাঁহারা ভীত হইয়া আশ্চর্য্য জ্ঞান করিলেন, পরস্পর কহিলেন, ইনি তবে কে যে বায়ুকে ও জলকেও আজ্ঞা দেন, আর তাহারা ইহাঁর আজ্ঞা মানে?

লুক ৮:২২-২৫

যীশুর বাক্য এমনকি বায়ু এবং ঢেউদেরকেও আজ্ঞা দিল! আশ্চর্যের কিছু নয় শিষ্যরা ভয়ে পরিপূর্ণ হ’ল I আর একটি ঘটনায় হাজার হাজার লোকেদের সাথে  তিনি অনুরূপ ক্ষমতা দেখালেন I এই সময় তিনি বায়ু এবং ঢেউকে আজ্ঞা দেন নি – বরং খাদ্যকে I   

১ ইহার পরে যীশু গালীল-সাগরের, অর্থাৎ তিবিরিয়া-সাগরের, অন্য পারে প্রস্থান করিলেন। 

২ আর বিস্তর লোক তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাইতে লাগিল, কেননা তিনি রোগীদের উপরে যে সকল চিহ্নকার্য্য করিতেন, সে সকল তাহারা দেখিত। 

৩ আর যীশু পর্ব্বতে উঠিলেন, এবং সেখানে আপন শিষ্যদের সহিত বসিলেন। 

৪ তখন নিস্তারপর্ব্ব, যিহূদীদের পর্ব্ব, সন্নিকট ছিল। 

৫ আর যীশু চক্ষু তুলিয়া, বিস্তর লোক তাঁহার নিকটে আসিতেছে দেখিয়া, ফিলিপকে বলিলেন, উহাদের আহারার্থে আমরা কোথায় রুটী কিনিতে পাইব? 

৬ এ কথা তিনি তাঁহার পরীক্ষার নিমিত্ত বলিলেন? কেননা কি করিবেন, তাহা তিনি আপনি জানিতেন।

৭ ফিলিপ তাঁহাকে উত্তর করিলেন, উহাদের জন্য দুই শত সিকির রুটীও এরূপ যথেষ্ট নয় যে, প্রত্যেক জন কিছু কিছু পাইতে পারে।

৮ তাঁহার শিষ্যদের মধ্যে এক জন, শিমোন পিতরের ভ্রাতা আন্দ্রিয়, 

৯ তাঁহাকে কহিলেন, এখানে একটী বালক আছে, তাহার কাছে যবের পাঁচখানা রুটী এবং দুইটী মাছ আছে; কিন্তু এত লোকের মধ্যে তাহাতে কি হইবে?

১০ যীশু বলিলেন, লোকদিগকে বসাইয়া দেও। সে স্থানে অনেক ঘাস ছিল। তাহাতে পুরুষেরা, সংখ্যায় অনুমান পাঁচ হাজার লোক, বসিয়া গেল। 

১১ তখন যীশু সেই রুটী কয়খানি লইলেন, ও ধন্যবাদ করিলেন, এবং যাহারা বসিয়াছিল, তাহাদিগকে ভাগ করিয়া দিলেন; সেইরূপে মাছ কয়টী হইতেও, তাহারা যত ইচ্ছা করিল, দিলেন। 

১২ আর তাহারা তৃপ্ত হইলে তিনি আপন শিষ্যদিগকে কহিলেন, অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া সকল সংগ্রহ কর, যেন কিছুই নষ্ট না হয়। 

১৩ তাহাতে তাঁহারা সংগ্রহ করিলেন, আর ঐ পাঁচখানা যবের রুটীর গুঁড়াগাঁড়ায় সেই লোকদের ভোজনের পর যাহা বাঁচিয়াছিল, তাহাতে বারো ডালা পূর্ণ করিলেন।

১৪ অতএব সেই লোকেরা তাঁহার কৃত চিহ্ন-কার্য্য দেখিয়া বলিতে লাগিল, উনি সত্যই সেই ভাববাদী, যিনি জগতে আসিতেছেন। 

১৫ তখন যীশু বুঝিতে পারিলেন যে, তাহারা আসিয়া রাজা করিবার জন্য তাঁহাকে ধরিতে উদ্যত হইয়াছে, তাই আবার নিজে একাকী পর্ব্বতে চলিয়া গেলেন।

যোহন ৬:১-১৫

যখন লোকেরা দেখল যে যীশু খাদ্যকে বহুগুণিত করতে পারেন শুধুমাত্র ধন্যবাদ প্রদানের বাক্যের দ্বারা তারা জানল যে তিনি অনন্য I তিনি ছিলেন বাগীশা (वागीशा, সংস্কৃতে প্রভুর বাণী) I তবে এর অর্থ কি ছিল? যীশু পরবর্তী সময়ে তাঁর বাক্যের শক্তি বা প্রাণকে প্রাঞ্জল করে ব্যাখ্যা করলেন   

আত্মাই জীবনদায়ক, মাংস কিছু উপকারী নয়; আমি তোমাদিগকে যে সকল কথা বলিয়াছি, তাহা আত্মা ও জীবন;

যোহন ৬:৬৩

এবং

৫৭ যেমন জীবন্ত পিতা আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন, এবং পিতা হেতু আমি জীবিত আছি, সেইরূপ যে কেহ আমাকে ভোজন করে, সেও আমা হেতু জীবিত থাকিবে।

যোহন ৬:৫৭

যীশু দাবি করছিলেন যে তিনি দেহের মধ্যে ত্রয়ী সৃষ্টিকর্তা (পিতা, বাক্য, আত্মা) রূপে মূর্ত হয়েছেন যে বিশ্বজগতকে অস্তিত্বের মধ্যে আসতে বলেছিল I তিনি মানব রূপের মধ্যে জীবিত ওম I তিনি জীবিত দেহের মধ্যে পবিত্র ত্রি-অংশের চিহ্ন I বায়ু, ঢেউ, এবং পদার্থের উপরে তাঁর শক্তিকে বলার দ্বারা তিনি প্রাণ (प्राण) বা জীবন-শক্তিকে জীবন্ত প্রণব হতে প্রদর্শন করেছিলেন I     

কি করে তা হতে পারে? এর অর্থ কি?

বুঝতে পারার জন্য হৃদয়

যীশুর শিষ্যদের এটিকে বুঝতে এক কঠিন সময় ছিল I 5000 লোকদের খাওয়াবার ঠিক অব্যবহিত পরে সুসমাচার তা লিপিবদ্ধ করে:

৪৫ পরে তিনি তৎক্ষণাৎ শিষ্যদিগকে দৃঢ় করিয়া বলিয়া দিলেন, যেন তাঁহারা নৌকায় উঠিয়া তাঁহার অগ্রে পরপারে বৈৎসৈদার দিকে যান, আর ইতিমধ্যে তিনি লোকদিগকে বিদায় দেন। 

৪৬ লোকদিগকে বিদায় করিয়া তিনি প্রার্থনা করিবার জন্য পর্ব্বতে চলিয়া গেলেন। 

৪৭ যখন সন্ধ্যা হইল, তখন নৌকাখানি সমুদ্রের মাঝখানে ছিল, এবং তিনি একাকী স্থলে ছিলেন। 

৪৮ পরে সম্মুখ বাতাস প্রযুক্ত তাঁহারা নৌকা বাহিতে বাহিতে কষ্ট পাইতেছেন দেখিয়া, তিনি প্রায় চতুর্থ প্রহর রাত্রিতে সমুদ্রের উপর দিয়া হাঁটিয়া তাঁহাদের নিকটে আসিলেন, এবং তাঁহাদিগকে ছাড়াইয়া যাইতে উদ্যত হইলেন। 

৪৯ কিন্তু সমুদ্রের উপর দিয়া তাঁহাকে হাঁটিতে দেখিয়া তাঁহারা মনে করিলেন, অপচ্ছায়া, আর চেঁচাইয়া উঠিলেন; 

৫০ কারণ সকলেই তাঁহাকে দেখিয়াছিলেন ও ব্যাকুল হইয়াছিলেন। কিন্তু তিনি তৎক্ষণাৎ তাঁহাদের সহিত কথা কহিলেন, তাঁহাদিগকে বলিলেন, সাহস কর, এ আমি, ভয় করিও না। 

৫১ পরে তিনি তাঁহাদের নিকটে নৌকায় উঠিলেন, আর বাতাস থামিয়া গেল; তাহাতে তাঁহারা মনে মনে যার পর নাই আশ্চর্য্য জ্ঞান করিলেন। 

৫২ কেননা রুটীর বিষয় তাঁহারা বুঝিতে পারেন নাই, তাঁহাদের অন্তঃকরণ কঠিন হইয়া পড়িয়াছিল।

৫৩ পরে তাঁহারা পার হইয়া স্থলে, গিনেষরৎ প্রদেশে, আসিয়া নৌকা লাগাইলেন। 

৫৪ আর নৌকা হইতে বাহির হইলে লোকেরা তৎক্ষণাৎ তাঁহাকে চিনিয়া সমুদয় অঞ্চলে চারিদিকে দৌড়িতে লাগিল, 

৫৫ আর পীড়িত লোকদিগকে খাটের উপরে করিয়া, তিনি যে কোন স্থানে আছেন শুনিতে পাইল, সেই স্থানে আনিতে লাগিল। 

৫৬ আর গ্রামে, কি নগরে, কি পল্লীতে, যে কোন স্থানে তিনি প্রবেশ করিলেন, সেই স্থানে তাহারা পীড়িতদিগকে বাজারে বসাইল; এবং তাঁহাকে বিনতি করিল, যেন উহারা তাঁহার বস্ত্রের থোপমাত্র স্পর্শ করিতে পায়, আর যত লোক তাঁহাকে স্পর্শ করিল, সকলেই সুস্থ হইল।

মার্ক ৬:৪৫-৫৬

এটি বলে যে শিষ্যরা ‘বুঝতে পারল না’ I না বুঝতে পারার কারণ এটি নয় যে তারা বুদ্ধিমান ছিল না; না এটি কারণ ছিল যে যা ঘটেছিল তারা তা দেখেনি; না এটি কারণ ছিল যে তারা খারাপ শিষ্য ছিল; নাতো এই কারণ ছিল যে তাদের ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল না I এটি বলে যে তাদের ‘হৃদয়গুলো কঠোর ছিল’ I আমাদের নিজেদের হৃদয়গুলোও আমাদেরকে আত্মিক সত্যকে বুঝতে পারার থেকে দুরে রাখে I   

এটিই মৌলিক কারণ যে তাঁর সময়ে লোকেরা যীশুর সম্বন্ধে এতটা বিভক্ত  ছিল I বৈদিক ঐতিহ্যের মধ্যে আমরা বলব তিনি প্রণব বা আকসারা ওম হওয়ার দাবি করছিলেন, যিনি জগতকে অস্তিত্বের মধ্যে আসার কথা  বলেছিলেন, এবং পরে মানব হলেন – ক্ষর I বুদ্ধিগতভাবে বোঝার চেয়ে আমাদের হৃদয় থেকে জিদ দূর করার প্রয়োজন I 

এই জন্যই যোহনের প্রস্তুতি কার্য অত্যাবশক ছিল I তিনি লোকেদের এটিকে লুকোনোর পরিবর্তে তাদের পাপের স্বীকারোক্তির দ্বারা অনুতাপ করতে আহ্বান করেছিলেন I যীশুর শিষ্যদের যদি কঠোর হৃদয় থেকে থাকে যাতে তাদের অনুতাপ এবং পাপের স্বীকারোক্তির প্রয়োজন ছিল, আপনার এবং আমার জন্য তা কত অধিক দরকার হবে! 

কি করতে হবে?

হৃদয়কে কোমল এবং বুদ্ধি লাভ করতে মন্ত্র

আমি দেখতে পেয়েছি হিব্রু বেদের মধ্যে একটি মন্ত্র হিসাবে দেওয়া এই স্বীকারোক্তির প্রার্থনা উপযোগী হবে I হয়ত ধ্যান করা বা এটির মন্ত্র উচ্চারণ করার পাশাপাশি ওমও আপনার হৃদয়ে কাজ করবে I

১ হে ঈশ্বর, তোমার দয়ানুসারে আমার প্রতি কৃপা কর; তোমার করুণার বাহুল্য অনুসারে আমার অধর্ম্ম সকল মার্জ্জনা কর।

২ আমার অপরাধ হইতে আমাকে নিঃশেষে ধৌত কর, আমার পাপ হইতে আমাকে শুচি কর।

৩ কেননা আমি নিজে আমার অধর্ম্ম সকল জানি; আমার পাপ সতত আমার সম্মুখে আছে।

৪ তোমার বিরুদ্ধে, কেবল তোমারই বিরুদ্ধে আমি পাপ করিয়াছি, তোমার দৃষ্টিতে যাহা কুৎসিত, তাহাই করিয়াছি; অতএব তুমি আপনার বাক্যে ধর্ম্মময়, আপনার বিচারে নির্দ্দোষ রহিয়াছ।

১০ হে ঈশ্বর, আমাতে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ সৃষ্টি কর, আমার অন্তরে সুস্থির আত্মাকে নূতন করিয়া দেও।

১১ তোমার সম্মুখ হইতে আমাকে দূর করিও না, তোমার পবিত্র আত্মাকে আমা হইতে হরণ করিও না।

১২ তোমার পরিত্রাণের আনন্দ আমাকে পুনরায় দেও, ইচ্ছুক আত্মা দ্বারা আমাকে ধরিয়া রাখ।

গীতসংহিতা ৫১: ১-৪, ১০-১২

কেন তিনি এসেছিলেন? আমরা পরে দেখব I

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *