Skip to content

Bible Passages

বাবিলে ভাষা-ভেদ।

11 সমস্ত পৃথিবীতে এক ভাষা ও একই কথা ছিল।2 পরে লোকেরা পূর্বদিকে ঘুরতে ঘুরতে শিনিয়র দেশে এক সমভূমি পেয়ে সে জায়গায় বাস করল;3 আর একে অপরকে বলল, “এস, আমরা ইট তৈরী করে আগুনে পোড়াই,” তাতে তাদের পাথরের পরিবর্তে ইট ও চূনের পরিবর্তে আলকাতরা ছিল।4 পরে তারা বলল, “এস, আমরা নিজেদের জন্য এক শহর ও আকাশকে নাগাল পেতে পারে এমন এক উঁচু বাড়ি (মিনার) তৈরী করে নিজেদের নাম বিখ্যাত করি, যদি সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ি।”5 পরে মানুষেরা যে শহর ও উঁচু বাড়ি (মিনার) তৈরী করছিল, তা দেখতে সদাপ্রভু নেমে এলেন।6 আর সদাপ্রভু বললেন, “দেখ, তারা সবাই এক জাতি ও এক ভাষাবাদী; এখন এই কাজে যুক্ত হল; এর পরে যা কিছু করতে ইচ্ছা করবে, তা থেকে তারা থেমে যাবে না।7 এস, আমরা নিচে গিয়ে, সেই জায়গায় তাদের ভাষার ভেদ জন্মাই, যেন তারা এক জন অন্যের ভাষা বুঝতে না পারে।”8 আর সদাপ্রভু সেখান থেকে সমস্ত পৃথিবীতে তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করলেন এবং তারা শহর তৈরী করা থেকে থেমে গেল।

আদিপুস্তক 11

নোহের বংশের বিবরণ।

10 নোহের ছেলে শেম, হাম ও যেফতের বংশ বৃত্তান্ত এই। বন্যার পরে তাঁদের ছেলেমেয়ে জন্মাল।যেফতের বংশধর2 যেফতের ছেলে গোমর, মাগোগ, মাদয়, যবন, তূবল, মেশক ও তীরস।3 গোমরের ছেলে অস্কিনস, রীফৎ ও4 তোগর্ম। যবনের ছেলে ইলীশা, তর্শীশ,5 কিত্তীম ও দোদানীম। এই সমস্ত থেকে জাতিদের দ্বীপনিবাসীরা নিজের নিজের দেশে নিজের নিজের ভাষানুসারে নিজের নিজের জাতির নানা গোষ্ঠীতে বিভক্ত হল।হামের বংশধর6 আর হামের ছেলে কূশ, মিশর, পুট ও কনান।7 কূশের ছেলে সবা, হবীলা, সপ্তা, রয়মা ও সপ্তকা। রয়মার ছেলে শিবা ও দদান।8 নিম্রদ কূশের ছেলে; তিনি পৃথিবীতে শক্তিশালী হতে লাগলেন।9 তিনি সদাপ্রভুর সামনে শক্তিশালী শিকারী হলেন; তার জন্য লোকে বলে, সদাপ্রভুর সামনে শক্তিশালী শিকারী নিম্রোদের তুল্য।10 শিনিয়র দেশে বাবি ল, এরক, অক্কদ ও কলনী, এই সব জায়গা তাঁর রাজ্যের প্রথম অংশ ছিল।11 সেই দেশ থেকে তিনি অশূরে গিয়ে নীনবী,12 রহবোৎপুরী, কেলহ এবং নীনবী ও কেলহের মাঝখানে রেষন পত্তন করলেন; ওটা মহানগর।13 আর লূদীয়, অনামীয়,14 লহাবীয়, নপ্তুহীয়, পথ্রোষীয়, পলেষ্টীয়দের পূর্বপুরুষ কসলূহীয় এবং কপ্তরীয়, এই সব মিশরের সন্তান।15 এবং কনানের বড় ছেলে সীদন, তারপর হেৎ,16 যিবূষীয়, ইমোরীয়, গির্গাশীয়,17 হিব্বীয়, অর্কীয়, সীনীয়,18 অর্বদীয়, সমারীয় ও হমাতীয়। পরে কনানীয়দের গোষ্ঠী সকল বিস্তারিত হল।19 সীদোন থেকে গরারের দিকে ঘসা পর্যন্ত এবং সদোম, ঘমোরা, অদমা ও সবোয়ীমের দিকে লাশা পর্যন্ত কনানীয়দের সীমা ছিল।20 নিজের নিজের গোষ্ঠী, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারে এই সব হামের ছেলে।21 যে শেম এবারের সব লোকদের পূর্বপুরুষ, আর যেফতের বড় ভাই, তাঁরও ছেলেমেয়ে ছিল।22 শেমের এই সকল ছেলে এলম, অশূর, অর্ফকষদ, লূদ ও অরাম।23 অরামের সন্তান ঊষ, হূল, গেথর ও মশ।24 আর অর্ফকষদ শেলহের জন্ম দিলেন ও শেলহ এবারের জন্ম দিলেন।25 এবারের দুই ছেলে; একের নাম পেলগ [বিভাগ], কারণ সেই দিনের পৃথিবী ভাগ হল। তাঁর ভাইয়ের নাম যক্তন।26 যক্তন অলমোদদ, শেলফ, হৎসর্মাবৎ, যেরহ,27 হদোরাম, উষল, দিক্ল,28 ওবল, অবীমায়েল, শিবা,29 ওফীর, হবীলা ও যোববের বাবা হলেন। এরা সবাই যক্তনের ছেলে।30 মেষা থেকে পূর্বদিকের সফার পর্বত পর্যন্ত তাদের বসতি ছিল।31 নিজের নিজের গোষ্ঠী, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারে এই সকল শেমের ছেলে।32 নিজের নিজের বংশ ও জাতি অনুসারে এরা নোহের ছেলেদের গোষ্ঠী এবং বন্যার পরে এদের থেকে তৈরী নানা জাতি পৃথিবীতে ভাগ হল।

প্রভু যীশুর পর্বতে উপদেশ দেওয়া।

5 তিনি প্রচুর লোক দেখে পাহাড়ে উঠলেন; আর তিনি বসার পর তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এলেন।স্বর্গরাজ্যের লোক নির্ণয়।2 তখন তিনি মুখ খুলে তাদের এই শিক্ষা দিতে লাগলেন3 ধন্য যারা আত্মাতে গরিব, কারণ স্বর্গ রাজ্য তাদেরই।4 ধন্য যারা দুঃখ করে, কারণ তারা সান্ত্বনা পাবে।5 ধন্য যারা বিনয়ী, কারণ তারা ভূমির অধিকারী হবে।6 ধন্য যারা ধার্মিকতার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত, কারণ তারা পরিতৃপ্ত হবে।7 ধন্য যারা দয়াশীল, কারণ তারা দয়া পাবে।8 ধন্য তারা যাদের মন শুদ্ধ, কারণ তারা ঈশ্বরের দর্শন পাবে।9 ধন্য যারা মিলন করে দেয়, কারণ তারা ঈশ্বরের সন্তান বলে পরিচিত হবে।10 ধন্য যারা ধার্মিকতার জন্য নির্যাতিত হয়েছে, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।11 ধন্য তোমরা, যখন লোকে আমার জন্য তোমাদের নিন্দা ও নির্যাতন করে এবং মিথ্যা করে তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বরকম খারাপ কথা বলে।12 আনন্দ করো, খুশি হও, কারণ স্বর্গে তোমাদের পুরষ্কার প্রচুর; কারণ তোমাদের আগে যে ভাববাদীরা ছিলেন, তাদের তারা সেইভাবে নির্যাতন করত।লবণ এবং আলো।13 তোমরা পৃথিবীর লবণ, কিন্তু লবণের স্বাদ যদি যায়, তবে তা কিভাবে লবণের গুনবিশিষ্ট করা যাবে? তা আর কোনো কাজে লাগে না, কেবল বাইরে ফেলে দেবার ও লোকের পায়ের তলায় দলিত হবার যোগ্য হয়।14 তোমরা জগতের আলো; পর্বতের উপরে অবস্থিত শহর গোপন থাকতে পারে না।15 আর লোকে প্রদীপ জ্বালিয়ে ঝুড়ির নীচে রাখে না, কিন্তু দীপাধারের উপরেই রাখে, তাতে তা ঘরের সব লোককে আলো দেয়।16 সেইভাবে তোমাদের আলো মানুষদের সামনে উজ্জ্বল হোক, যেন তারা তোমাদের ভাল কাজ দেখে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার গৌরব করে।পুরাতন ব্যবস্থার পূর্ণতা।17 মনে কর না যে, আমি আইন কি ভাববাদীগ্রন্থ ধ্বংস করতে এসেছি; আমি ধ্বংস করতে আসিনি, কিন্তু সম্পূর্ণ করতে এসেছি।18 কারণ আমি তোমাদের সত্য বলছি, যে পর্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত না হবে, সে পর্যন্ত আইনের এক মাত্রা কি এক বিন্দুও লুপ্ত হবে না, সবই সফল হবে।19 অতএব যে কেউ এই সব ছোট আদেশের মধ্যে কোন একটি আদেশ অমান্য করে ও লোকদেরকে সেইভাবে শিক্ষা দেয়, তাকে স্বর্গরাজ্যে অতি ছোট বলা যাবে; কিন্তু যে কেউ সে সব পালন করে ও শিক্ষা দেয়, তাকে স্বর্গরাজ্যে মহান বলা যাবে।20 কারণ আমি তোমাদের বলছি, ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের থেকে তোমাদের ধার্ম্মিকতা যদি বেশি না হয়, তবে তোমরা কোনো মতে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।নরহত্যা।21 তোমরা শুনেছ, আগের কালের লোকদের কাছে বলা হয়েছিল, “তুমি নরহত্যা কর না,” আর যে নরহত্যা করে, সে বিচারের দায়ে পড়বে।22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ নিজের ভাইয়ের প্রতি রাগ করে, সে বিচারের দায়ে পড়বে; আর যে কেউ নিজের ভাইকে বলে, রে বোকা, সে মহাসভার দায়ে পড়বে। আর যে কেউ বলে রে মূর্খ সে নরকের আগুনের দায়ে পড়বে।23 অতএব তুমি যখন যজ্ঞবেদির কাছে নিজের নৈবেদ্য উৎসর্গ করছ, তখন সেই জায়গায় যদি মনে পড়ে যে, তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কোন কথা আছে,24 তবে সেই জায়গায় বেদির সামনে তোমার নৈবেদ্য রাখ, আর চলে যাও, প্রথমে তোমার ভাইয়ের সাথে আবার মিলন হও, পরে এসে তোমার নৈবেদ্য উৎসর্গ কর।25 তুমি যখন বিপক্ষের সঙ্গে পথে থাক, তখন তার সাথে তাড়াতাড়ি মিল কর, যদি বিপক্ষ তোমাকে বিচারকের হাতে তুলে দেয় ও বিচারক তোমাকে রক্ষীর হাতে তুলে দেয়, আর তুমি কারাগারে বন্দী হও।26 আমি তোমাকে সত্য বলছি, যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ পয়সাটা শোধ করবে, ততক্ষণ তুমি কোন মতে সেখান থেকে বাইরে আসতে পারবে না।ব্যাভিচার।27 তোমরা শুনেছ যে এটা বলা হয়েছিল, “তুমি ব্যভিচার করও না।”28 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোনো স্ত্রীলোকের দিকে লালসাপূর্ণ ভাবে দেখে, তখনই সে হৃদয়ে তার সাথে ব্যভিচার করল।29 আর তোমার ডান চোখ যদি তোমায় পাপ করায়, তবে তা উপড়ে দূরে ফেলে দাও; কারণ তোমার সমস্ত শরীর নরকে যাওয়া চেয়ে বরং এক অঙ্গ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভাল।30 আর তোমার ডান হাত যদি তোমাকে পাপ করায়, তবে তা কেটে দূরে ফেলে দাও; কারণ তোমার সমস্ত শরীর নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং এক অঙ্গ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভাল।বিবাহ বিচ্ছেদ।31 আর বলা হয়েছিল, “যে কেউ নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে, সে তাকে ত্যাগপত্র দিক।”32 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ ব্যভিচার ছাড়া অন্য কারণে নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে, সে তাকে ব্যাভিচারিনী করে; এবং যে ব্যক্তি সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে।প্রতিজ্ঞা।33 আবার তোমরা শুনেছ, আগের কালের লোকদের কাছে বলা হয়েছিল, তুমি মিথ্যা দিব্যি কর না, কিন্তু প্রভুর উদ্দেশ্যে তোমার সমস্ত প্রতিজ্ঞা পালন কর।34 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, কোন দিব্যি করো না; স্বর্গের দিব্যি কর না, কারণ তা ঈশ্বরের সিংহাসন এবং পৃথিবীর দিব্যি কর না, কারণ তা তাঁর পা রাখার জায়গা;35 আর যিরুশালেমের দিব্যি কর না, কারণ তা মহান রাজার শহর।36 আর তোমার মাথার দিব্যি কর না, কারণ একগাছা চুল সাদা কি কালো করবার সাধ্য তোমার নেই।37 কিন্তু তোমাদের কথা হ্যাঁ, হ্যাঁ, না, না, হোক; এর বেশি যা, তা শয়তান থেকে জন্মায়।চোখের বদলে চোখ।38 তোমরা শুনেছ বলা হয়েছিল, “চোখের বদলে চোখ ও দাঁতের বদলে দাঁত।”39 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা মন্দ লোককে বাধা দিয়ো না; বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে, অন্য গাল তার দিকে ফিরিয়ে দাও।40 আর যে তোমার সাথে বিচারের জায়গায় ঝগড়া করে তোমার পোষাক নিতে চায়, তাকে তোমার চাদরও দিয়ে দাও।41 আর যে কেউ এক মাইল যেতে তোমাকে জোর করে, তার সঙ্গে দুই মাইল যাও।42 যে তোমার কাছে কিছু চায়, তাকে সেটা দাও এবং যে তোমার কাছে ধার চায়, তা থেকে বিমুখ হয়ো না।শত্রুকে প্রেম কর।43 তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, “তোমার প্রতিবেশীকে প্রেম করবে এবং তোমার শত্রুকে ঘৃণা করবে।”44 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা নিজের নিজের শত্রুদেরকে ভালবেস এবং যারা তোমাদের ঘৃণা করে, তাদের জন্য প্রার্থনা কর;45 যেন তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান হও, কারণ তিনি ভাল মন্দ লোকদের উপরে নিজের সূর্য্য উদয় করেন এবং ধার্মিক অধার্মিকদের উপরে বৃষ্টি দেন।46 কারণ যারা তোমাদের ভালবাসে, যদি শুধু তাদেরই ভালবাসো তবে তোমাদের কি পুরষ্কার হবে? কর আদায়কারীরাও কি সেই মত করে না?47 আর তোমরা যদি কেবল নিজের নিজের ভাইদেরকে শুভেচ্ছা জানাও, তবে বেশি কি কাজ কর? অইহূদিরাও কি সেইভাবে করে না?48 অতএব তোমাদের স্বর্গীয় পিতা যেমন সিদ্ধ, তোমরাও তেমনি সিদ্ধ হও।

গদি 5

দান ও প্রার্থনার বিষয়ে শিক্ষা।

6 সাবধান, লোককে দেখাবার জন্য তাদের সামনে তোমাদের ধর্ম্মকর্ম কর না, করলে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছে তোমাদের পুরষ্কার নেই2 অতএব তুমি যখন দান কর, তখন তোমার সামনে তুরী বাজিও না, যেমন ভণ্ডরা লোকের কাছে প্রশংসা পাবার জন্য সমাজঘরে ও পথে করে থাকে; আমি তোমাদের সত্য বলছি, তারা নিজেদের পুরষ্কার পেয়েছে।3 কিন্তু তুমি যখন দান কর, তখন তোমরা ডান হাত কি করছে, তা তোমার বাঁ হাতকে জানতে দিও না।4 এই ভাবে তোমার দান যেন গোপন হয়; তাতে তোমার স্বর্গীয় পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।প্রার্থনা।5 আর তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন ভণ্ডদের মত হয়ো না; কারণ তারা সমাজঘরে ও পথের কোণে দাঁড়িয়ে লোক দেখানো প্রার্থনা করতে ভালবাসে; আমি তোমাদের সত্য বলছি, তারা নিজেদের পুরষ্কার পেয়েছে।6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তোমার ঘরের ভেতরে প্রবেশ করো, আর দরজা বন্ধ করে তোমার পিতা, যিনি গোপনে বর্তমান, তাঁর কাছে প্রার্থনা করো; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।7 আর প্রার্থনার দিন তোমরা অর্থহীন কথা বার বার বলো না, যেমন অইহূদিগণ করে থাকে; কারণ তারা মনে করে, বেশি কথা বললেই তাদের প্রার্থনার উত্তর পাবে।8 অতএব তোমরা তাদের মত হয়ো না, কারণ তোমাদের কি কি প্রয়োজন, তা চাওয়ার আগে তোমাদের স্বর্গীয় পিতা জানেন।9 অতএব তোমরা এই ভাবে প্রার্থনা করো; হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক,10 তোমার রাজ্য আসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হোক যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হোক;11 আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আজ আমাদেরকে দাও;12 আর আমাদের অপরাধ সব ক্ষমা কর, যেমন আমরাও নিজের নিজের অপরাধীদেরকে ক্ষমা করেছি;13 আর আমাদেরকে পরীক্ষাতে এনো না, কিন্তু মন্দ থেকে রক্ষা কর।14 কারণ তোমরা যদি লোকের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তোমাদেরও ক্ষমা করবেন।15 কিন্তু তোমরা যদি লোকদেরকে ক্ষমা না কর, তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও অপরাধ ক্ষমা করবেন না।উপবাস।16 আর তোমরা যখন উপবাস কর, তখন ভণ্ডদের মত বিষন্ন মুখ করে থেকো না; কারণ তারা লোককে উপবাস দেখাবার জন্য নিজেদের মুখ শুকনো করে; আমি তোমাদের সত্য বলছি, তারা নিজেদের পুরষ্কার পেয়েছে।17 কিন্তু তুমি যখন উপবাস কর, তখন মাথায় তেল মেখ এবং মুখ ধুইয়ো;18 যেন লোকে তোমার উপবাস দেখতে না পায়, কিন্তু তোমার পিতা, যিনি গোপনে বর্তমান, তিনিই দেখতে পান; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।স্বর্গে অর্থ সঞ্চয় করবার কথা।19 তোমরা পৃথিবীতে নিজেদের জন্য অর্থ সঞ্চয় কর না; এখানে তো পোকায় ও মর্চ্চ্যায় ক্ষয় করে এবং এখানে চোরে সিঁধ কেটে চুরি করে।20 কিন্তু স্বর্গে নিজেদের জন্য অর্থ সঞ্চয় কর; সেখানে পোকায় ও মর্চ্চ্যায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কেটে চুরি করে না।21 কারণ যেখানে তোমার অর্থ, সেখানে তোমার মনও থাকবে।22 চোখই শরীরের প্রদীপ; অতএব তোমার চোখ যদি নির্মল হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর আলোময় হবে।23 কিন্তু তোমার চোখ যদি অশুচি হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারময় হবে। অতএব তোমার হৃদয়ের আলো যদি অন্ধকার হয়, সেই অন্ধকার কত বড়।24 কেউই দুই কর্তার দাসত্ব করতে পারে না; কারণ সে হয়তো এক জনকে ঘৃণা করবে, আর এক জনকে ভালবাসবে, নয় তো এক জনের প্রতি অনুগত হবে, আর এক জনকে তুচ্ছ করবে; তোমরা ঈশ্বর এবং ধন দুইয়েরই দাসত্ব করতে পার না।ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখবার কথা।25 এই জন্য আমি তোমাদের বলছি, কি খাবার খাব, কি পান করব বলে প্রাণের বিষয়ে, কিম্বা কি পরব বলে শরীরের বিষয়ে ভেবো না; খাদ্য থেকে প্রাণ ও পোশাকের থেকে শরীর কি বড় বিষয় নয়?26 আকাশের পাখিদের দিকে তাকাও, তারা বোনেও না, কাটেও না, গোলাঘরে জমাও করে না, তা সত্বেও তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তাদের খাবার দিয়ে থাকেন; তোমরা কি তাদের থেকে অনেক বেশি শ্রেষ্ঠ নও?27 আর তোমাদের মধ্যে কে ভেবে নিজের বয়স এক হাতমাত্র বাড়াতে পারে?28 আর পোশাকের বিষয়ে কেন চিন্তা কর? মাঠের লিলি ফুলের বিষয়ে চিন্তা কর, সেগুলি কেমন বাড়ে; সে সকল পরিশ্রম করে না, সুতোও কাটে না;29 তা সত্বেও আমি তোমাদের বলছি, শলোমনও নিজের সমস্ত ঐশ্বর্য্য এর একটির মত সুসজ্জিত ছিলেন না।30 ভাল, মাঠের যে ঘাস আজ আছে তা কাল আগুনে ফেলে দেওয়া হবে, তা যদি ঈশ্বর এরূপ সাজান, তবে হে অল্প বিশ্বাসীরা, তোমাদের কি আরও বেশি সুন্দর করে সাজাবেন না?31 অতএব এই বলে ভেবো না যে, “কি খাবার খাব? বা কি পান করব?”32 অইহূদিরা এসব জিনিস পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়; তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তো জানেন যে, এই সমস্ত জিনিস তোমাদের প্রয়োজন আছে।33 কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁর রাজ্য ও তাঁর ধার্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহলে এইসব জিনিসও তোমাদের দেওয়া হবে।34 অতএব কালকের জন্য ভেবো না, কারণ কাল নিজের বিষয় নিজেই ভাববে; দিনের কষ্ট দিনের জন্যই যথেষ্ট।

গদি 6

পরের বিচার।

7 তোমরা বিচার করো না, যেন বিচারিত না হও।2 কারণ যেরকম বিচারে তোমরা বিচার কর, সেই রকম বিচারে তোমরাও বিচারিত হবে; এবং তোমরা যে পরিমাণে পরিমাপ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের জন্য পরিমাপ করা যাবে।3 আর তোমার ভাইয়ের চোখে যে কুটো আছে, তাই কেন দেখছ, কিন্তু তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ আছে, তা কেন ভেবে দেখছ না?4 অথবা তুমি কেমন করে নিজের ভাইকে বলবে, এস, আমি তোমার চোখ থেকে কুটোটা বের করে দিই? আর দেখ, তোমার নিজের চোখে কড়িকাঠ রয়েছে।5 হে ভণ্ড, আগে নিজের চোখ থেকে কড়িকাঠ বের করে ফেল, আর তখন তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কুটোটা বের করবার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে।6 পবিত্র জিনিস কুকুরদেরকে দিও না এবং তোমাদের মুক্তা শূকরদের সামনে ফেলো না; যদি তারা পা দিয়ে তা দলায় এবং ফিরে তোমাদের টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলে।প্রার্থনার কথা।7 চাও, তোমাদের দেওয়া হবে, খোঁজ কর, তোমরা পাবে; দরজায় আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।8 কারণ যে কেউ চায়, সে গ্রহণ করে এবং যে খোঁজ করে, সে পায়; আর যে আঘাত করে, তার জন্য খুলে দেওয়া হবে।9 তোমাদের মধ্যে এমন লোক কে যে, যার ছেলে রুটি চাইলে তাকে পাথর দেবে,10 কিংবা মাছ চাইলে তাকে সাপ দেবে?11 অতএব তোমরা মন্দ হয়েও যদি তোমাদের সন্তানদের ভালো ভালো জিনিস দিতে জান, তবে কত না বেশি তোমাদের স্বর্গের পিতা দেবেন, যারা তাঁর কাছে চায়, তাদের ভালো ভালো জিনিস দেবেন।12 অতএব সব বিষয়ে তোমরা যা যা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাদের প্রতি সেই রকম কর; কারণ এটাই আইনের ও ভাববাদী গ্রন্থের মূল বিষয়।স্বর্গপথে চলবার কথা।13 সরু দরজা দিয়ে প্রবেশ কর; কারণ বিনাশে যাবার দরজা চওড়া ও পথ চওড়া এবং অনেকেই তা দিয়ে প্রবেশ করে;14 কারণ জীবনে যাবার দরজা সরু ও পথ কঠিন এবং অল্প লোকেই তা পায়।একটি গাছ এবং তার ফল।15 নকল ভাববাদীদের থেকে সাবধান; তারা মেষের বেশে তোমাদের কাছে আসে, কিন্তু ভিতরে গ্রাসকারী নেকড়ে বাঘ।16 তোমরা তাদের ফলের মাধ্যমে তাদের চিনতে পারবে। লোকে কি কাঁটাগাছ থেকে দ্রাক্ষাফল, কিংবা শিয়ালকাঁটা থেকে ডুমুরফল জোগাড় করে?17 সেই প্রকারে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফল ধরে, খারাপ গাছে খারাপ ফল ধরে।18 ভাল গাছে খারাপ ফল ধরতে পারে না এবং খারাপ গাছে ভাল ফল ধরতে পারে না।19 যে কোন গাছে ভাল ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া যায়।20 অতএব তোমরা ওদের ফলের মাধ্যমে ওদেরকে চিনতে পারবে।21 যারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তারা সবাই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে, এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পারবে।22 সেই দিন অনেকে আমাকে বলবে, হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই আমরা কি ভাববাণী বলিনি? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নি? আপনার নামেই কি অনেক আশ্চর্য্য কাজ করিনি?23 তখন আমি তাদের স্পষ্টই বলব, আমি কখনও তোমাদের জানি না; হে অধর্মাচারীরা, আমার কাছ থেকে দূর হও।জ্ঞানী এবং বোকা নির্মাতা।24 অতএব যে কেউ আমার এই সব কথা শুনে পালন করে, তাকে এমন একজন বুদ্ধিমান লোক বলা যাবে, যে পাথরের উপরে নিজের ঘর তৈরী করল।25 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এলো, বাতাস বয়ে গেল এবং সেই ঘরে লাগল, তা সত্বেও তা পড়ল না, কারণ পাথরের উপরে তার ভিত্তিমূল স্থাপিত হয়েছিল।26 আর যে কেউ আমার এই সব কথা শুনে পালন না করে, সে এমন একজন বোকা লোকের মত, যে বালির উপরে নিজের ঘর তৈরী করল।27 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এলো, বাতাস বয়ে গেল এবং সেই ঘরে আঘাত করল, তাতে তা পড়ে গেল ও তার পতন ঘোরতর হল।28 যীশু যখন এই সব কথা শেষ করলেন, লোকরা তাঁর শিক্ষায় চমৎকৃত হল;29 কারণ তিনি ক্ষমতাপন্ন ব্যক্তির মত তাদের শিক্ষা দিতেন, তাদের ব্যবস্থার শিক্ষকদের মত নয়।

গদি 7

যীশু শিষ্যদের দুই বার দেখা দেন।

19 এটা সেই একই দিনের সন্ধ্যেবেলা ছিল, ওই দিন সপ্তাহের প্রথম দিন এবং যখন দরজাগুলো বন্ধ ছিল যেখানে শিষ্যরা ইহুদীদের ভয়ে একত্রে ছিল, যীশু এলেন এবং তাদের মাঝখানে দাঁড়ালেন এবং তাঁদের বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক।”20 যখন তিনি এই বলেছিলেন, তিনি তাঁদের তাঁর দুই হাত এবং তাঁর পাঁজর দেখালেন। তারপর যখন শিষ্যরা প্রভুকে দেখতে পেয়েছিল, তারা আনন্দিত হয়েছিল।21 তারপর যীশু তাদের আবার বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক। পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন, সেই রকম আমিও তোমাদের পাঠাই।”22 যখন যীশু এই বলেছিলেন, তিনি তাঁদের উপরে ফুঁ দিলেন এবং তাঁদের বললেন, “পবিত্র আত্মা গ্রহণ কর।23 তোমরা যাদের পাপ ক্ষমা করবে, তাদের ক্ষমা করা হবে; তুমি যাদের পাপ ক্ষমা করবে না, তাদের পাপ ক্ষমা করা হবে না।”থোমাকে যীশুর দর্শন।24 যীশু যখন এসেছিলেন, তখন থোমা, সেই বারো জনের একজন, যাকে দিদুমঃ বলে, তিনি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না।25 পরে অন্য শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “আমরা প্রভুকে দেখেছি।” তিনি তাঁদের বললেন, “আমি যদি তাঁর দুই হাতে পেরেকের চিহ্ন না দেখি এবং সেই পেরেকের জায়গায় আমার আঙুল না দিই এবং তাঁর পাঁজরের মধ্যে আমার হাত না দিই, তবে আমি বিশ্বাস করব না।”26 আট দিন পরে তাঁর শিষ্যরা আবার ভেতরে ছিলেন এবং থোমা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। যখন দরজাগুলো বন্ধ ছিল তখন যীশু এসেছিলেন, তাদের মাঝখানে দাঁড়ালেন এবং বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক।”27 তারপরে তিনি থোমাকে বললেন, তোমার আঙুল বাড়িয়ে দাও এবং আমার হাত দুখানা দেখ; আর তোমার হাত বাড়িয়ে দাও আমার পাঁজরের মধ্যে দাও; অবিশ্বাসী হও না, বিশ্বাসী হও।28 থোমা উত্তর করে তাঁকে বললেন, “আমার প্রভু এবং আমার ঈশ্বর।”29 যীশু তাঁকে বললেন, “কারণ তুমি আমাকে দেখেছ, তুমি বিশ্বাস করেছ। ধন্য তারা যারা না দেখে বিশ্বাস করেছে এবং তবুও বিশ্বাস করেছে।”30 যীশু শিষ্যদের সামনে অনেক চিহ্ন-কাজ করেছিলেন, চিহ্ন যা এই বইতে লেখা হয়নি।31 কিন্তু এই সব লেখা হয়েছে যেন তোমরা বিশ্বাস কর যে যীশুই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র, আর বিশ্বাস কর যেন তাঁর নামে জীবন পাও।

জন 20: 19-31

যীশু সমুদ্রতীরে কয়েক জন শিষ্যকে দেখা দেন।

1 এর পরে যীশু তিবিরিয়া সমুদ্রের তীরে শিষ্যদের কাছে আবার নিজেকে দেখালেন; তিনি এই ভাবে নিজেকে দেখালেন।2 শিমোন পিতর থোমার সঙ্গে ছিলেন যাকে দিদুমঃ বলে, গালীলের কান্নাবাসী নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা এবং যীশুর দুই জন অন্য শিষ্যও ছিলেন।3 শিমোন পিতর তাদের বলল, “আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি।” তারা তাঁকে বলল, “আমরাও তোমার সঙ্গে আসছি।” তারা চলে গেল এবং একটা নৌকায় উঠল, কিন্তু সারা রাতে তারা কিছু ধরতে পারল না।4 সকাল হয়ে আসার দিন, যীশু তীরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু শিষ্যরা তাঁকে চিনতে পারল না যে তিনিই যীশু।5 তারপর যীশু তাদের বললেন, “যুবকরা, তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে?” তারা তাঁকে উত্তর করল, না।6 তিনি তাদের বললেন, “নৌকার ডান পাশে তোমাদের জাল ফেল এবং তোমরা কিছু দেখতে পাবে।” সুতরাং তারা তাদের জাল ফেলল, এত মাছ পড়ল যে তারা আর তা টেনে তুলতে পারল না।7 তারপর, যীশু যাকে প্রেম করতেন সেই শিষ্য পিতরকে বলল, “ইনিই প্রভু।” যখন শিমোন পিতর শুনেছিল যে ইনিই প্রভু, তখন তিনি তার কাপড় পরলেন, (কারণ তাঁর গায়ে খুব সামান্য কাপড় ছিল) এবং সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে পড়লেন।8 অন্য শিষ্যরা নৌকাতে আসল, তারা ডাঙা থেকে বেশি দূরে ছিল না, মাত্র দুশো কিউবিট এবং তারা মাছ ভর্তি জাল টেনে এনেছিল।9 যখন তারা ডাঙায় উঠেছিল তারা কাঠ কয়লার আগুন দেখেছিল যার ওপরে মাছ আর রুটি ছিল।10 যীশু তাঁদের বললেন, “যে মাছ এখন ধরলে, তার থেকে কিছু মাছ আন।”11 শিমোন পিতর তারপর উঠল এবং জাল টেনে ডাঙায় তুলল, বড় মাছে ভর্তি, 153; সেখানে অনেক মাছ ছিল, জাল ছেঁড়ে নি।12 যীশু তাঁদের বললেন, “এস এবং সকালের খাবার খাও।” শিষ্যদের কারোরও সাহস হল না যে, তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি কে?” তাঁরা জানতেন যে তিনি প্রভু।13 যীশু এসে ঐ রুটি নিলেন এবং তাঁদের দিলেন এবং মাছও দিলেন।14 মৃতদের মধ্য থেকে ওঠার পর যীশু এখন এই তৃতীয় বার নিজের শিষ্যদের দেখা দিলেন।যীশু পিতরকে আদেশ দেন।15 তাঁরা সকালের খাবার খাওয়ার পর, যীশু শিমোন পিতরকে বললেন, যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমাকে এগুলি থেকে বেশি ভালবাসো? পিতর তাঁকে বললেন, হ্যাঁ, প্রভু; আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি। যীশু তাঁকে বললেন, আমার মেষশাবককে খাওয়াও।16 আবার তিনি দ্বিতীয়বার তাঁকে বললেন, যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমাকে ভালবাসো? পিতর তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু; আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি।” যীশু তাঁকে বললেন, আমার মেষদের পালন কর।17 তিনি তৃতীয় বার তাঁকে বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমাকে ভালবাস?” পিতর দুঃখিত হলেন কারণ, যীশু তাঁকে বলেছিলেন তৃতীয় বার, “তুমি কি আমাকে ভালবাস?” তিনি তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি সব কিছু জানেন; আপনি জানেন যে, আমি আপনাকে ভালবাসি।” যীশু তাঁকে বললেন, “আমার মেষদের খাওয়াও।18 সত্য, সত্য, আমি তোমাকে বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে, তখন নিজের জন্য নিজেই কোমর বাঁধতে এবং যেখানে ইচ্ছা বেড়াতে; কিন্তু যখন বুড়ো হবে, তখন তোমার হাত বাড়াবে এবং অন্যজন তোমায় কোমর বেঁধে দেবে এবং যেখানে যেতে তোমার ইচ্ছা নেই সেখানে তোমাকে নিয়ে যাবে।”19 এই কথা বলে যীশু নির্দেশ করলেন যে, পিতর কিভাবে মৃত্যু দিয়ে ঈশ্বরের মহিমা করবেন। এই কথা বলবার পর তিনি পিতরকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ কর।”20 পিতর মুখ ফেরালেন এবং দেখলেন, যে শিষ্যকে যীশু ভালবাসতেন তিনি তাদের অনুসরণ করছেন যিনি রাতের খাবারের দিন তাঁর পাঁজরের দিকে হেলে বসেছিলেন এবং বললেন “প্রভু, কে আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে?”21 পিতর তাঁকে দেখে তারপর যীশুকে বললেন, “প্রভু, এর কি হবে?”22 যীশু তাঁকে বললেন, “আমি যদি ইচ্ছা করি সে আমার আসা পর্যন্ত জীবিত থাকে, তাতে তোমার কি? তুমি আমাকে অনুসরণ কর।”23 সুতরাং ভাইদের মধ্যে এই কথা রটে গেল, সেই শিষ্য মরবে না। যীশু পিতরকে বলেন নি যে, অন্য শিষ্য মরবে না, কিন্তু, “আমি যদি ইচ্ছা করি যে সে আমার আসা পর্যন্ত জীবিত থাকে, তাতে তোমার কি?”24 সেই শিষ্যই এই সব বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন এবং এই সব লিখছেন; এবং আমরা জানি যে তাঁর সাক্ষ্য সত্য।25 সেখানে যীশু আরও অনেক কাজ করেছিলেন। যদি প্রত্যেকটি এক এক করে লেখা যায়, তবে আমার মনে হয়, লিখতে লিখতে এত বই হয়ে উঠবে যে জগতেও তা ধরবে না।

জন 21: 1-25

যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হলো।

1 প্রিয় থিয়ফিল, প্রথম বইটা আমি সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে লিখেছি, যা যীশু করতে এবং শিক্ষা দিতে শুরু করেছিলেন, সেদিন পর্যন্ত,2 যেদিন তিনি নিজের মনোনীত প্রেরিতদের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আদেশ দিয়ে স্বর্গে গেলেন।3 নিজের দুঃখ সহ্য করার পর তিনি অনেক প্রমাণ দিয়ে তাঁদের কাছে নিজেকে জীবিত দেখালেন, চল্লিশ দিন ধরে তাঁদের কাছে দেখা দিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্যের ব্যাপারে বিভিন্ন কথা বললেন।4 আর তিনি তাঁদের সঙ্গে মিলে এই নির্দেশ দিলেন, তোমরা যিরুশালেম থেকে বাইরে যেও না, কিন্তু পিতার প্রতিজ্ঞা করা যে দানের কথা আমার কাছে শুনেছ, তাঁর অপেক্ষা কর।5 কারণ যোহন জলে বাপ্তিষ্ম দিতেন, কিন্তু তোমরা কিছুদিন পর পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে।6 সুতরাং তাঁরা সকলে একসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রভু, এই কি সেই দিন, যখন আপনি ইস্রায়েলের হাতে রাজ্য প্রতিস্থাপন করবেন?7 তিনি তাদেরকে বললেন, “যেসব দিন বা কাল পিতা নিজের অধিকারে রেখেছেন তা তোমাদের জানার বিষয় নয়।8 কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে এলে তোমরা শক্তি পাবে; এবং তোমরা যিরূশালেম, সমস্ত যিহূদীয়া, শমরিয়া দেশে এবং পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত আমার সাক্ষী হবে।”9 যখন প্রভু যীশু এসব কথা বলছেন, তিনি তাঁদের চোখের সামনে স্বর্গে উঠে যেতে লাগলেন, একটি মেঘ তাঁদের দৃষ্টিপথ থেকে তাঁকে ঢেকে দিল।10 তিনি যাচ্ছেন আর তাঁরা আকাশের দিকে এক নজরে চেয়ে আছেন, এমন দিন, সাদা পোশাক পরা দুজন মানুষ তাদের কাছে দাঁড়ালেন;11 আর তাঁরা বললেন, “প্রিয় গালিলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন? এই যে যীশু তোমাদের কাছ থেকে স্বর্গে গেলেন, তাঁকে যেমন স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক তেমনি তাঁকে ফিরে আসতে দেখবে।”

প্রেরিত 1: 1-11

22 এই সব ঘটনার পরে ঈশ্বর অব্রাহামের পরীক্ষা করলেন। তিনি তাঁকে বললেন, “অব্রাহাম;” তিনি উত্তর করলেন, “এখানে আমি।”2 তখন তিনি বললেন, “তুমি নিজের ছেলেকে, তোমার একমাত্র ছেলেকে, যাকে তুমি ভালবাস, সেই ইসহাককে নিয়ে মোরিয়া দেশে যাও এবং সেখানকার যে এক পর্বতের কথা আমি তোমাকে বলব, তার উপরে তাকে হোম বলির জন্য বলিদান কর।”3 পরে অব্রাহাম ভোরবেলায় উঠে গাধা সাজিয়ে দুই জন দাস ও তাঁর ছেলে ইসহাককে সঙ্গে নিলেন, হোমের জন্য কাঠ কাটলেন, আর উঠে ঈশ্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় দিকে গেলেন।4 তৃতীয় দিনের অব্রাহাম চোখ তুলে দূর থেকে সেই জায়গা দেখলেন।5 তখন অব্রাহাম নিজের দাসদেরকে বললেন, “তোমরা এই জায়গায় গাধার সঙ্গে থাক; আমি ও ছেলেটি, আমরা ঐ জায়গায় গিয়ে প্রার্থনা করি, পরে তোমাদের কাছে ফিরে আসব”6 তখন অব্রাহাম হোমের কাঠ নিয়ে নিজের ছেলে ইসহাকের কাঁধে দিলেন এবং নিজের হাতে আগুন ও ছুরি; দুজনেই একসঙ্গে চলে গেলেন।7 ইসহাক নিজের বাবা অব্রাহামকে বললেন, “হে আমার বাবা।” তিনি বললেন, “হে আমার ছেলে, দেখ, এই আমি।” তখন তিনি বললেন, “এই দেখুন, আগুন ও কাঠ, কিন্তু হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া কোথায়?”8 অব্রাহাম বললেন, “বৎস, ঈশ্বর নিজের হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া যোগাবেন।” পরে উভয়ে একসঙ্গে গেলেন।9 ঈশ্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় উপস্থিত হলে অব্রাহাম সেখানে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে কাঠ সাজালেন, পরে নিজের ছেলে ইসহাককে বেঁধে বেদিতে কাঠের ওপরে রাখলেন।10 পরে অব্রাহাম হাত বাড়িয়ে নিজের ছেলেকে হত্যা করার জন্য ছুরি গ্রহণ করলেন।11 এমন দিনের আকাশ থেকে সদাপ্রভুর দূত তাঁকে ডাকলেন, বললেন, “অব্রাহাম, অব্রাহাম।” তিনি বললেন, “দেখুন এই আমি।”12 তখন তিনি বললেন, “ছেলেটির প্রতি তোমার হাত বাড়িয়ো না ওর প্রতি কিছুই কর না, কারণ এখন আমি বুঝলাম, তুমি ঈশ্বরকে ভয় কর, আমাকে নিজের একমাত্র ছেলে দিতেও হয়নি।”13 তখন অব্রাহাম চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখ, তাঁর পিছন দিকে একটি ভেড়া, তার শিং ঝোপে বাঁধা; পরে অব্রাহাম গিয়ে সেই মেষটি নিয়ে নিজের পুত্রের পরিবর্তে হোমের জন্য বলিদান করলেন।14 আর অব্রাহাম সেই জায়গার নাম যিহোবা -যিরি [সদাপ্রভু যোগাবেন] রাখলেন। এই জন্য আজও লোকে বলে, “সদাপ্রভুর পর্বতে যোগান হবে।”15 পরে সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয় বার আকাশ থেকে অব্রাহামকে ডেকে বললেন,16 সদাপ্রভু বলছেন, “তুমি এই কাজ করলে, আমাকে নিজের একমাত্র পুত্র দিতে অসম্মত হলে না,17 এই জন্য আমি আমারই দিব্য করে বলছি, আমি অবশ্য তোমাকে আশীর্বাদ করব এবং আকাশের তারাদের ও সমুদ্রতীরের বালির মতো তোমার অতিশয় বংশ বৃদ্ধি করব; তোমার বংশ শত্রুদের পুরদ্বার অধিকার করবে;18 আর তোমার বংশে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে; কারণ তুমি আমার বাক্যে পালন করেছ।”19 পরে অব্রাহাম নিজের দাসদের কাছে গেলেন, আর সবাই উঠে একসঙ্গে বের-শেবাতে গেলেন; এবং অব্রাহাম বের-শেবাতে বাস করতে লাগলেন।নাহরের পুত্র20 ঐ ঘটনার পরে অব্রাহামের কাছে এই সংবাদ আসল, “দেখুন, আপনার ভাই নাহোরের জন্য মিল্কাও ছেলেদেরকে জন্ম দিয়েছেন;21 তাঁর বড় ছেলে ঊষ ও তার ভাই বূষ ও অরামের পিতা কমূয়েল এবং22 কেষদ, হসো, পিল্‌দশ, যিদ্‌লফ ও বথূয়েল।23 বথূয়েলের মেয়ে রিবিকা। অব্রাহামের ভাই নাহোরের জন্য মিল্কা এই আট জনকে জন্ম দিলেন।24 আর রুমা নামে তাঁর উপপত্নী টেবহ, গহম, তহশ এবং মাখা, এই সবাইকে জন্ম দিলেন।”

আদিপুস্তক 22

বন্যার বিবরণ।

6 এভাবে যখন পৃথিবীতে মানুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে লাগল ও অনেক মেয়ে জন্ম গ্রহণ করল,2 তখন ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষদের মেয়েদেরকে সুন্দরী দেখে, যার যাকে ইচ্ছা, সে তাকে বিয়ে করতে লাগল।3 তাতে সদাপ্রভু বললেন, “আমার আত্মা মানুষদের মধ্যে সবদিন থাকবে না, কারণ তারা মাংসমাত্র; কিন্তু তাদের দিন একশো কুড়ি বছর হবে।”4 সেই দিনের পৃথিবীতে মহাবীররা ছিল এবং তার পরেও ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষদের মেয়েদের কাছে গেলে তাদের গর্ভে ছেলেমেয়ে জন্মাল, তারাই সেকালের প্রসিদ্ধ বীর।5 আর সদাপ্রভু দেখলেন, পৃথিবীতে মানুষের দুষ্টতা বড় এবং তার হৃদয়ের চিন্তার সমস্ত কল্পনা সবদিন কেবল খারাপ।6 তাই সদাপ্রভু পৃথিবীতে মানুষের সৃষ্টির জন্য দুঃখিত হলেন ও মনে আঘাত পেলেন।7 আর সদাপ্রভু বললেন, “আমি যে মানুষকে সৃষ্টি করেছি, তাকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করব; মানুষের সঙ্গে পশু, সরীসৃপ জীব ও আকাশের পাখিদেরকেও উচ্ছিন্ন করব; কারণ তাদের সৃষ্টির জন্য আমার দুঃখ হচ্ছে।”8 কিন্তু নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হলেন। নোহের বংশ বৃত্তান্ত এই।নোহ ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করলেন, তাই ঈশ্বর তাকে অব্যাহতি দিতে পরিকল্পনা করলেন9 নোহ সেই সময়ের লোকদের মধ্যে ধার্মিক ও সিদ্ধ লোক ছিলেন, নোহ ঈশ্বরের সঙ্গে যাতায়াত করতেন।10 নোহ শেম, হাম ও যেফৎ নামে তিন ছেলের জন্ম দেন।11 সেই দিনের পৃথিবী ঈশ্বরের সামনে ভ্রষ্ট ও মন্দতায় পরিপূর্ণ ছিল।12 আর ঈশ্বর পৃথিবীতে দেখলেন, আর দেখ, সে ভ্রষ্ট হয়েছে, কারণ পৃথিবীতে অবস্থিত সমস্ত প্রাণী ভ্রষ্টাচারী হয়েছিল।13 তখন ঈশ্বর নোহকে বললেন, “আমার চোখের সামনে সমস্ত প্রাণীর অন্তিমকাল উপস্থিত, কারণ তাদের দিয়ে পৃথিবী অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়েছে; আর দেখ, আমি পৃথিবীর সঙ্গে তাদেরকে বিনষ্ট করব।14 তুমি গোফর কাঠ দিয়ে এক জাহাজ তৈরী কর; সেই জাহাজের মধ্যে কামরা তৈরী করবে ও তার ভিতরে ও বাইরে ধূনা দিয়ে লেপে দেবে।15 এই ভাবে তা তৈরী করবে। জাহাজ দৈর্ঘ্যে তিনশো হাত, প্রস্থে পঞ্চাশ হাত ও উচ্চতায় ত্রিশ হাত হবে।16 আর তার ছাদের এক হাত নিচে জানালা তৈরী করে রাখবে ও জাহাজের পাশে দরজা রাখবে; তার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা তৈরী করবে।17 আর দেখ, আকাশের নীচে প্রাণবায়ুবিশিষ্ট যত জীবজন্তু আছে, সবাইকে বিনষ্ট করার জন্য আমি পৃথিবীর উপরে বন্যা আনব, পৃথিবীতে সবাই মারা যাবে।18 কিন্তু তোমার সঙ্গে আমি নিজের নিয়ম স্থির করব; তুমি নিজের ছেলেদের, স্ত্রী ও ছেলের বউদেরকে সঙ্গে নিয়ে সেই জাহাজে প্রবেশ করবে।19 আর মাংসবিশিষ্ট সমস্ত জীবজন্তুর স্ত্রীপুরুষ জোড়া জোড়া নিয়ে তাদের প্রাণরক্ষার জন্য নিজের সঙ্গে20 সেই জাহাজে প্রবেশ করাবে; সর্বজাতীয় পাখি ও সর্বজাতীয় পশু ও সর্বজাতীয় মাটিতে চলা সরীসৃপ জোড়া জোড়া প্রাণরক্ষার জন্য তোমার কাছে প্রবেশ করবে।21 আর তোমার ও তাদের আহারের জন্য তুমি সব ধরনের খাদ্য সামগ্রী এনে নিজের কাছে সঞ্চয় করবে।”22 তাতে নোহ সেরকম করলেন, ঈশ্বরের আদেশ অনুসারেই সব কাজ করলেন।

আদিপুস্তক 6

বন্যা পৃথিবীকে প্লাবিত করলো

7 আর সদাপ্রভু নোহকে বললেন, “তুমি সপরিবারে জাহাজে প্রবেশ কর, কারণ এই কালের লোকদের মধ্যে আমার সামনে তোমাকেই ধার্মিক দেখেছি।2 তুমি শুচি পশুর স্ত্রীপুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির সাত সাত জোড়া এবং অশুচি পশুর স্ত্রী ও পুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির3 এক এক জোড়া এবং আকাশের পাখিদেরও স্ত্রীপুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির সাত সাত জোড়া, সমস্ত ভূমণ্ডলে তাদের বংশ রক্ষার জন্য নিজের সঙ্গে রাখ।4 কারণ সাত দিনের র পর আমি পৃথিবীতে চল্লিশ দিন রাত বৃষ্টি বর্ষণ করে আমার সৃষ্টি যাবতীয় প্রাণীকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করব।”5 তখন নোহ সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে সব কাজ করলেন।6 নোহের ছয়শো বছর বয়সে পৃথিবীতে জলপ্লাবন হল।7 জলপ্লাবনের জন্য নোহ ও তাঁর ছেলেরা এবং তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বউরা জাহাজে প্রবেশ করলেন।8 নোহের প্রতি ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে শুচি অশুচি পশুর9 এবং পাখির ও ভূমিতে চলাচল যাবতীয় জীবের স্ত্রী পুরুষ জোড়া জোড়া জাহাজে প্রবেশ করল, যেমন ঈশ্বর নোহকে আদেশ করেছিল।10 আর সেই সাত দিন পরে পৃথিবীতে জলপ্লাবন হল।11 নোহের বয়সের ছয়শো বছরের দ্বিতীয় মাসের সতেরো দিনের মহাজলধির সমস্ত উনুই ভেঙে গেল এবং আকাশের জানালা সব মুক্ত হল;12 তাতে পৃথিবীতে চল্লিশ দিন রাত মহাবৃষ্টি হল।13 সেই দিন নোহ এবং শেম, হাম ও যেফৎ নামে নোহের ছেলেরা এবং তাঁদের সঙ্গে নোহের স্ত্রী ও তিন ছেলের বউরা জাহাজে প্রবেশ করলেন।14 আর তাঁদের সঙ্গে সর্বজাতীয় বন্য পশু, সবজাতীয় গ্রাম্য পশু, সবজাতীয় মাটিতে চলাচল করা সরীসৃপ জীব ও সবজাতীয় পাখি,15 প্রাণবায়ুবিশিষ্ট সর্বপ্রকার জীবজন্তু জোড়া জোড়া জাহাজে নোহের কাছে প্রবেশ করল।16 ফলতঃ তাঁর প্রতি ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে সমস্ত প্রাণীর স্ত্রী ও পুরুষ প্রবেশ করল। পরে সদাপ্রভু তাঁর জন্য পিছনের দরজা বন্ধ করলেন।17 আর চল্লিশ দিন পর্যন্ত পৃথিবীতে বন্যা হল, তাতে জল বৃদ্ধি পেয়ে জাহাজ ভাসালে তা মাটি ছেড়ে উঠল।18 পরে জল প্রবল হয়ে পৃথিবীতে অনেক বেড়ে গেল এবং জাহাজ জলের উপরে ভেসে উঠল।19 আর পৃথিবীতে জল অত্যন্ত প্রবল হল, আকাশমণ্ডলের নীচের সব মহাপর্বত ডুবে গেল।20 তার উপরে পনেরো হ্যাঁ ত জল উঠে প্রবল হল, পর্বত সকল ডুবে গেল।21 তাতে মাটিতে চলাচল যাবতীয় প্রাণী, পাখি, পশুপাল ও বন্য পশু সব এবং সমস্ত মানুষ মারা গেল।22 মাটিতে চলনশীল যত প্রাণীর নাকে প্রাণবায়ুর সঞ্চার ছিল, সকলে মারা গেল।23 এই ভাবে পৃথিবী নিবাসী সমস্ত প্রাণী মানুষ, পশু, সরীসৃপ, জীব ও আকাশের পাখি সকল উচ্ছিন্ন হল, পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন হল, কেবল নোহ ও তাঁর সঙ্গী জাহাজে প্রাণীরা বেঁচে গেলেন।24 আর জল পৃথিবীর উপরে একশো পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত প্রবল থাকল।

আদিপুস্তক 7

বন্যা অপসারিত হলো

8 আর ঈশ্বর নোহকে ও জাহাজে অবস্থিত তাঁর সঙ্গী পশু যাবতীয় প্রাণীকে স্মরণ করলেন, ঈশ্বর পৃথিবীতে বাতাস বহালেন, তাতে জল থামল।2 আর গভীর জলের উনুই ও আকাশের জানালা সকল বন্ধ এবং আকাশের মহাবৃষ্টি থামল।3 আর জল ক্রমশঃ মাটির ওপর থেকে সরে গিয়ে একশো পঞ্চাশ দিনের র শেষে কমে গেল।4 তাতে সপ্তম মাসে, সতেরো দিনের অরারটের পর্বতের ওপরে জাহাজ লেগে থাকল।5 পরে দশ মাস পর্যন্ত জল কমতে থাকল, ঐ দশ মাসের প্রথম দিনের পর্বতের শৃঙ্গ দেখা গেল।6 আর চল্লিশ দিন পরে নোহ নিজের বানানো জাহাজের জানালা খুলে, একটা দাঁড়কাক ছেড়ে দিলেন;7 তাতে সে উড়ে ভূমির উপরের জল শুকনো না হওয়া পর্যন্ত এখানে ওখানে ঘোরাফেরা করতে লাগলো।8 আর মাটির ওপরে জল কমেছে কি না, তা জানবার জন্য তিনি নিজের কাছ থেকে এক ঘুঘু ছেড়ে দিলেন।9 তাতে সমস্ত পৃথিবী জলে ভরে থাকাতে ঘুঘু নামার জায়গা পেল না, তাই জাহাজে তাঁর কাছে ফিরে আসল। তখন তিনি হাত বাড়িয়ে তাকে ধরলেন ও জাহাজের ভিতরে নিজের কাছে রাখলেন।10 পরে তিনি আর সাত দিন অপেক্ষা করে জাহাজ থেকে সেই ঘুঘু আবার ছেড়ে দিলেন11 এবং ঘুঘুটি সন্ধ্যাবেলায় তাঁর কাছে ফিরে এল; আর দেখ, তার ঠোঁটে জিতগাছের একটা নতুন পাতা ছিল; এতে নোহ বুঝলেন, মাটির ওপরে জল কমেছে।12 পরে তিনি আর সাত দিন অপেক্ষা করে সেই ঘুঘু ছেড়ে দিলেন, তখন সে তাঁর কাছে আর ফিরে এল না।13 [নোহের বয়সের] ছয়শো এক বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনের পৃথিবীর ওপরে জল শুকনো হল; তাতে নোহ জাহাজের ছাদ খুলে দেখলেন, আর দেখ, মাটিতে জল নেই।14 পরে দ্বিতীয় মাসের সাতাশ দিনের ভূমি শুকনো হল।নোহের সঙ্গে করা ঈশ্বরের নিয়ম15 পরে ঈশ্বর নোহকে বললেন,16 তুমি নিজের বউ, ছেলেদের ও ছেলের বউদেরকে সঙ্গে নিয়ে জাহাজ থেকে বাইরে যাও।17 আর তোমার সঙ্গী পশু, পাখি ও মাটিতে চলা সরীসৃপ প্রভৃতি মাংসিক যত জীবজন্তু আছে, সেই সমস্ত কিছুকে তোমার সঙ্গে বাইরে আন, তারা পৃথিবীতে প্রাণীময় করুক এবং পৃথিবীতে ফলবান ও বহুবংশ হোক।18 তখন নোহ নিজের ছেলেদের এবং নিজের স্ত্রী ও ছেলের স্ত্রীদেরকে সঙ্গে নিয়ে বের হলেন।19 আর নিজের নিজের জাতি অনুসারে প্রত্যেক পশু, সরীসৃপ জীব ও পাখি, সমস্ত মাটিতে চলনশীল প্রাণী জাহাজ থেকে বের হল।সদাপ্রভু প্রতিশ্রুতি দিলেন আর কখনও বন্যার দ্বারা মানুষকে ধ্বংস করবেন না20 পরে নোহ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন এবং সমস্ত রকমের শুচি পশুর ও সমস্ত রকমের শুচি পাখির মধ্যে কতকগুলি নিয়ে বেদির ওপরে হোম করলেন।21 তাতে সদাপ্রভু তার সুগন্ধ গ্রহণ করলেন, আর সদাপ্রভু মনে মনে বললেন, “আমি মানুষের জন্য মাটিকে আর অভিশাপ দেব না, কারণ বাল্যকাল পর্যন্ত মানুষের মনের কল্পনা দুষ্ট; যেমন করলাম, তেমন আর কখনও সকল প্রাণীকে ধ্বংস করব না।22 যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন শস্য বোনার ও শস্য কাটার দিন এবং শীত ও উত্তাপ এবং গ্রীষ্মকাল ও হেমন্তকাল এবং দিন ও রাত, এই সমস্ত থেমে যাবে না।”

আদিপুস্তক 8

নোহের সঙ্গে ঈশ্বরের নিয়ম স্থাপন

9 পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর ছেলেদেরকে এই আশীর্বাদ করলেন ও বললেন, “তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, পৃথিবী ভরিয়ে তোলো।2 পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী ও আকাশের যাবতীয় পাখি তোমাদের থেকে ভয় ও ত্রাসযুক্ত হবে; সমস্ত মাটিতে চলা জীব ও সমুদ্রের সমস্ত মাছ সে সব তোমাদেরই হাতে দেওয়া আছে।3 প্রত্যেক গমনশীল প্রাণী তোমাদের খাদ্য হবে; আমি সবুজ গাছপালার মতো সে সকল তোমাদেরকে দিলাম।4 কিন্তু প্রাণসহ অর্থাৎ রক্তসহ মাংস খেও না।5 আর তোমাদের রক্তপাত হলে আমি তোমাদের প্রাণের পক্ষে তার প্রতিশোধ অবশ্যই নেব; সকল পশুর কাছে তার প্রতিশোধ নেব। এবং মানুষের ভাই মানুষের কাছে আমি মানুষের প্রাণের প্রতিশোধ নেব।”6 যে কেউ মানুষের রক্তপাত করবে, মানুষের মাধ্যমে তার রক্তপাত করা যাবে; কারণ ঈশ্বর নিজের প্রতিমূর্ত্তিতে মানুষকে নির্মাণ করেছেন।7 তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, পৃথিবীকে প্রাণীময় কর, ও তার মধ্যে বেড়ে ওঠ।8 পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর সঙ্গী ছেলেদেরকে বললেন,9 “দেখ, তোমাদের সঙ্গে, তোমাদের আগামী বংশের সঙ্গে ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সঙ্গে,10 পাখি এবং পশুপাল ও বন্য পশু, পৃথিবীতে অবস্থিত যত প্রাণী জাহাজ থেকে বের হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমি আমার নিয়ম স্থির করি।11 আমি তোমাদের সঙ্গে আমার নিয়ম স্থির করি; বন্যার মাধ্যমে সমস্ত প্রাণী আর ধ্বংস হবে না এবং পৃথিবীর বিনাশের জন্য জলপ্লাবন আর হবে না।”12 ঈশ্বর আরও বললেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সঙ্গে চিরস্থায়ী পুরুষ পরম্পরার জন্য যে নিয়ম স্থির করলাম, তাঁর চিহ্ন এই।”13 আমি মেঘে নিজের মেঘধনু স্থাপন করি, সেটাই পৃথিবীর সঙ্গে আমার নিয়মের চিহ্ন হবে।14 যখন আমি পৃথিবীর উপরে মেঘ আনব, তখন সেই মেঘধনু মেঘে দেখা যাবে;15 তাতে তোমাদের সঙ্গে ও মাংসিক সমস্ত প্রাণীর সঙ্গে আমার যে নিয়ম আছে, তা আমার স্মরণ হবে এবং সকল প্রাণীর বিনাশের জন্য জলপ্লাবন আর হবে না।16 আর মেঘধনু হলে আমি তার প্রতি দৃষ্টিপাত করব; তাতে মাংসিক যত প্রাণী পৃথিবীতে আছে, তাদের সঙ্গে ঈশ্বরের যে চিরস্থায়ী নিয়ম, তা আমি স্মরণ করব।17 ঈশ্বর নোহকে বললেন, “এটি একটি নিয়মের চিহ্ন যা আমার এবং পৃথিবীর সব প্রাণীর সঙ্গে স্থাপিত হবে।”নোহের তিন ছেলের বিবরণ।18 নোহের যে ছেলেরা জাহাজ থেকে বের হলেন, তাঁদের নাম শেম, হাম ও যেফৎ; সেই হাম কনানের বাবা।19 এই তিনজন নোহের ছেলে; এদেরই বংশ সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল।

আদিপুস্তক 9

22 ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, কেন তুমি আমাকে পরিত্যাগ করেছ? আমাকে রক্ষা করা থেকে এবং আমার যন্ত্রণার উক্তি থেকে কেন তুমি দূরে থাক?2 আমার ঈশ্বর, আমি দিনের র বেলা ডাকি, কিন্তু তুমি উত্তর দাও না এবং রাতেও আমি নিরব থাকি না!3 তবুও তুমিই পবিত্র, তুমিই ইস্রায়েলের প্রশংসার সঙ্গে রাজা হিসাবে বসবে।4 আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার উপর বিশ্বাস রাখত; তারা তোমাকে বিশ্বাস করত এবং তুমি তাদের উদ্ধার করতে।5 তারা তোমার কাছে কাঁদলে, তারা উদ্ধার পেত। তারা তোমার উপরে নির্ভর করে, হতাশ হয়নি।6 কিন্তু আমি একটি কীট, মানুষ না, মানুষের কাছে অবমাননার বিষয় এবং লোকেদের দ্বারা তুচ্ছ।7 যারা আমাকে দেখে তারা আমাকে উপহাস করে; তারা আমাকে পরিহাস করে; তারা আমার সম্পর্কে শোনে ও তাদের মাথা নাড়ায়।8 তারা বলে, “সে সদাপ্রভুুর উপর বিশ্বাস করে; সদাপ্রভুু তাকে উদ্ধার করুন। তিনি তাকে রক্ষা করুন, কারণ তিনি তার মধ্যেই আনন্দিত।”9 কারণ তুমি আমাকে গর্ভ থেকে বের করে এনেছ; আমি যখন আমার মায়ের স্তন পান করছিলাম তখন তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করেছিলে।10 গর্ভ থেকে আমি তোমার উপর নিক্ষিপ্ত হয়েছিলাম; আমি আমার মায়ের গর্ভে ছিলাম তখন থেকেই তুমিই আমার ঈশ্বর!11 আমার কাছ থেকে দূরে থেকো না, কারণ বিপদ প্রায় উপস্হিত; সাহায্য করার কেউ নেই।12 অনেক ষাঁড় আমাকে ঘিরে ধরেছে; বাশনের শক্তিশালী ষাঁড় আমাকে ঘিরে ধরেছে।13 তারা আমার বিরুদ্ধে তাদের মুখ খুলে হ্যাঁ করে, যেমনভাবে গর্জনকারী সিংহ তার শিকার গ্রাস করার জন্য করে।14 আমাকে জলের মত ঢালা হয়েছে এবং আমার সমস্ত হাড় স্হানচ্যুত হয়েছে। আমার হৃদয় মোমের মত হয়েছে; তা আমার ভেতরের অংশের মধ্যে গলে গিয়েছে।15 আমার শক্ তি মাটির পাত্রের একটি টুকরো মত শুকিয়ে গেছে; আমার জিভ আমার মুখের তালুতে লেগে যাচ্ছে। তুমি আমাকে মৃত্যুর ধূলোকণার মধ্যে রেখেছ।16 কারণ কুকুরেরা আমাকে ঘিরেছে; অন্যায়কারীদের দল আমাকে ঘিরে আছে; তারা আমার হাত এবং পা বিদ্ধ করেছে।17 আমি আমার সব হাড়গুলি গুনতে পারি; তারা আমার দিকে দৃষ্টি করে তাকিয়ে আছে;18 তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করে নিল, তারা আমার কাপড়ের জন্য গুলিবাঁট করে।19 হে সদাপ্রভুু; দূরে থেকো না, আমার শক্তি! আমায় দ্রুত সাহায্য কর।20 তলোয়ার থেকে আমার প্রাণকে ও আমার মহামূল্য জীবনকে কুকুরদের হাত থেকে উদ্ধার কর।21 সিংহের মুখ থেকে আমাকে বাঁচাও, বন্য ষাঁ ড়ের শিং থেকে আমাকে উদ্ধার কর।22 আমি আমার ভাইদের কাছে তোমার নাম ঘোষণা করব; মণ্ডলীর মধ্যে আমি তোমার প্রশংসা করব।23 তোমরা যারা সদাপ্রভুুকে ভয় কর, তাঁর প্রশংসা কর! যাকোবের সমস্ত পূর্বপুরুষেরা, তাঁকে সম্মান করো! তাঁকে ভয়ের কর, ইস্রায়েলের সমস্ত বংশধরেরা!24 কারণ তিনি দুঃখী ব্যক্তির দুঃখভোগের প্রতি অবজ্ঞা বা ঘৃণা করেন না; সদাপ্রভুু তার থেকে তাঁর মুখ লুকান না; যখন একটি দুঃখী লোক তাঁর কাছে কাঁদে, তখন তিনি শোনেন।25 মহাসমাজ মধ্যে আমার প্রশংসা তোমার কাছ থেকে আসে; যারা তাঁকে ভয় করে আমি তাদের সামনে আমার প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ করব।26 নিপীড়িতরা ভোজন করবে এবং সন্তুষ্ট হবে; তাদে র সদাপ্রভুুকে খোঁজ করে তারা তাঁর প্রশংসা করবে। তোমাদের হৃদয় চিরকাল জীবিত থাকুক।27 পৃথিবীর সমস্ত লোক স্মরণ করবে এবং সদাপ্রভুুর কাছে ফিরে যাবে; সমস্ত জাতিদের পরিবার তাঁ র সামনে উপুড় হয়ে প্রণাম করবে।28 কারণ রাজত্ব সদাপ্রভুুই; তিনি জাতিদের উপর শাসনকর্ত্তা।29 পৃথিবীর সমস্ত সমৃদ্ধ লোক আরাধ না করবে; ধূলোতে নেমে আসা সমস্ত লোক ও যারা তাদের নিজেদের প্রাণ রক্ষা করতে পারে না তারাও তাঁর সামনে নতজানু হবে।30 একটি প্রজন্ম আসবে তাঁর সেবা করবে; তারা প্রভুর পরবর্তী প্রজন্মকে বলবে।31 তারা আসবে এবং তাঁর ধার্মিকতার কথা বলবে; তিনি কি করেছেন তা তারা এমন লোকদের বলবে যারা এখনো জন্ম গ্রহণ করে নি।

গীতসংহিতা 22

বিচার দিনের বিষয়ে উদাহরণ ও শিক্ষা।

25 তখন স্বর্গরাজ্য এমন দশটি কুমারীর মতো হবে, যারা নিজের নিজের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বের হল।2 তাদের মধ্যে পাঁচ জন বোকা, আর পাঁচ জন বুদ্ধিমতী ছিল।3 কারণ যারা বোকা ছিল, তারা নিজের নিজের প্রদীপ নিল, কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না,4 কিন্তু যারা বুদ্ধিমতী তারা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল।5 আর বড় আসতে দেরি হওয়ায় সবাই ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়ল।6 পরে মাঝ রাতে এই আওয়াজ হল, দেখ, বর! তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বের হও।7 তাতে সেই কুমারীরা সবাই উঠল এবং নিজের নিজের প্রদীপ সাজালো।8 আর বোকা কুমারীরা বুদ্ধিমতিদের বলল, তোমাদের তেল থেকে আমাদেরকে কিছু দাও, কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে।9 কিন্তু বুদ্ধিমতীরা বলল, হয়তো তোমাদের ও আমাদের জন্য এই তেলে কুলাবে না, তোমরা বরং বিক্রেতাদের কাছে গিয়ে তোমাদের জন্য তেল কিনে নাও।10 তারা তেল কিনতে যাচ্ছে, সেই দিন বর এলো এবং যারা তৈরী ছিল, তারা তাঁর সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল,11 শেষে অন্য সমস্ত কুমারীরাও এলো এবং বলতে লাগল, প্রভু, প্রভু, আমাদেরকে দরজা খুলে দিন।12 কিন্তু তিনি বললেন, তোমাদের সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না।13 অতএব জেগে থাক, কারণ তোমরা সেই দিন বা সেই মুহূর্ত জান না।তালন্তের দৃষ্টান্ত।14 এটা সেই রকম, মনে কর, যে কোন ব্যক্তি বিদেশে যাচ্ছেন, তিনি তাঁর দাসদেরকে ডেকে তাঁর সম্পত্তি তাদের হাতে সমর্পণ করলেন।15 তিনি এক জনকে পাঁচ তালন্ত, অন্য জনকে দুই তালন্ত এবং আর এক জনকে এক তালন্ত, যার যেমন যোগ্যতা তাকে সেইভাবে দিলেন, পরে বিদেশে চলে গেলেন।16 যে পাঁচ তালন্ত পেয়েছিল, সে তখনই গেল, তা দিয়ে ব্যবসা করল এবং আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করল।17 যে দুই তালন্ত পেয়েছিল, সেও তেমন করে আরও দুই তালন্ত লাভ করল।18 কিন্তু যে এক তালন্ত পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার মালিকের টাকা লুকিয়ে রাখল।19 অনেকদিন পরে সেই দাসদের মালিক এলো এবং তাদের কাছে হিসেব নিলেন।20 তখন যে পাঁচ তালন্ত পেয়েছিল, সে এসে আরও পাঁচ তালন্ত এনে বলল, “মালিক, আপনি আমার কাছে পাঁচ তালন্ত দিয়েছিলেন, দেখুন, তা দিয়ে আমি আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করেছি।”21 তার মালিক তাকে বললেন, “বেশ, উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস, তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হয়েছ, আমি তোমাকে অনেক বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করব, তুমি তোমার মালিকের আনন্দের সহভাগী হও।”22 পরে যে দুই তালন্ত পেয়েছিল, সেও এসে বলল, “মালিক, আপনি আমার কাছে দুই তালন্ত দিয়েছিলেন, দেখুন, তা দিয়ে আমি আরও দুই তালন্ত লাভ করেছি।”23 তার মালিক তাকে বললেন, “বেশ! উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস, তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হয়েছ, আমি তোমাকে অনেক বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করব, তুমি তোমার মালিকের আনন্দের সহভাগী হও।”24 পরে যে এক তালন্ত পেয়েছিল, সেও এসে বলল, “মালিক, আমি জানতাম, আপনি খুবই কঠিন লোক, যেখানে বীজ রোপণ করেননি, সেখানে ফসল কেটে থাকেন ও যেখানে বীজ ছড়ান নি, সেখানে ফসল কুড়িয়ে থাকেন।”25 তাই আমি ভয়ে আপনার তালন্ত মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছিলাম, দেখুন, আপনার যা ছিল তাই আপনি পেলেন।26 কিন্তু তার মালিক উত্তর করে তাকে বললেন, “দুষ্টু অলস দাস, তুমি নাকি জানতে, আমি যেখানে বুনিনা, সেখানে কাটি এবং যেখানে ছড়াই না, সেখানে কুড়াই?27 তবে মহাজনদের হাতে আমার টাকা রেখে দাওয়া তোমার উচিত ছিল, তা করলে আমি এসে আমার যা তা সুদের সঙ্গে পেতাম।28 অতএব তোমরা এর কাছ থেকে ঐ তালন্ত নিয়ে নাও এবং যার দশ তালন্ত আছে, তাকে দাও,29 কারণ যে ব্যক্তির কাছে আছে, তাকে দাওয়া হবে, তাতে তার আরো বেশি হবে, কিন্তু যার নেই, তার যা আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নাওয়া হবে।30 আর তোমরা ঐ অনুপযোগী দাসকে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও, সেই জায়গায় সে কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।”মেষ এবং ছাগল।31 আর যখন মনুষ্যপুত্র সমস্ত দূতদের সঙ্গে নিয়ে নিজের মহিমায় আসবেন, তখন তিনি তাঁর প্রতাপের সিংহাসনে বসবেন।32 আর সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জমায়েত হবে, পরে তিনি তাদের একজন থেকে অন্য জনকে আলাদা করবেন, যেমন পালরক্ষক ছাগলের পাল থেকে ভেড়া আলাদা করে,33 আর তিনি ভেড়াদের তাঁর ডানদিকে ও ছাগলদেরকে বাঁদিকে রাখবেন।34 তখন রাজা তাঁর ডানদিকের লোকদেরকে বলবেন, “এস, আমার পিতার আশীর্বাদ ধন্য পাত্রেরা, জগত সৃষ্টির প্রথম থেকে যে রাজ্য তোমাদের জন্য তৈরী করা হয়েছে, তার অধিকারী হও।35 কারণ যখন আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমাকে খাবার দিয়েছিলে, আর যখন আমি পিপাসিত ছিলাম, তখন আমাকে পান করিয়েছিলে, অতিথি হয়েছিলাম, আর আমাকে থাকার আশ্রয় দিয়েছিলে,36 বস্ত্রহীন হয়েছিলাম, আর আমাকে বস্ত্র পরিয়েছিলে, অসুস্থ হয়েছিলাম, আর আমার যত্ন নিয়েছিলে, জেলখানায় বন্দী ছিলাম, আর আমার কাছে এসেছিলে,”37 তখন ধার্ম্মিকেরা তাঁকে বলবে, “প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, কিম্বা পিপাসিত দেখে পান করিয়েছিলাম?38 কবেই বা আপনাকে অতিথিরূপে আশ্রয় দিয়েছিলাম, কিম্বা বস্ত্রহীন দেখে বস্ত্র পরিয়েছিলাম?39 কবেই বা আপনাকে অসুস্থ, কিম্বা জেলখানায় আপনাকে দেখে আপনার কাছে গিয়েছিলাম?”40 তখন রাজা এর উত্তরে তাদের বলবেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এই ভাইদের, এই ক্ষুদ্রতমদের মধ্যে এক জনের প্রতি যখন এই সব করেছিলে, তখন আমারই প্রতি করেছিলে।”41 পরে তিনি বাঁদিকের লোকদেরকেও বলবেন, তোমরা শাপগ্রস্ত সবাই, আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবলের ও তার দূতদের জন্য যে অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে যাও।42 কারণ আমি ক্ষুধার্ত হয়েছিলাম, আর তোমরা আমাকে খাবার দাও নি, পিপাসিত হয়েছিলাম, আর আমাকে পান করাও নি,43 অতিথি হয়েছিলাম, আর আমাকে আশ্রয় দাও নি, বস্ত্রহীন ছিলাম, আর আমাকে বস্ত্র পরাও নি, অসুস্থ ও জেলখানায় ছিলাম, আর আমার যত্ন কর নি।44 তখন তারাও এর উত্তরে বলবে, “প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি অতিথি, কি বস্ত্রহীন, কি অসুস্থ, কি জেলখানায় দেখে আপনার সেবা করিনি?”45 তখন তিনি তাদের বলবেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা এই ক্ষুদ্রতমদের কোন এক জনের প্রতি যখন এই সব কর নি, তখন আমারই প্রতি কর নি।”46 পরে তারা অনন্তকালের জন্য শাস্তি পেতে, কিন্তু ধার্ম্মিকেরা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করবে।

ম্যাথিউ 25

যীশুর রাজকীয় প্রবেশ।

21 পরে যখন তাঁরা যিরূশালেমের কাছে জৈতুন পাহাড়ে, বৈৎফগী গ্রামে এলেন, তখন যীশু দুই জন শিষ্যকে পাঠিয়ে দিলেন,2 তাঁদের বললেন, “তোমরা সামনের ঐ গ্রামে যাও, আর সেখানে গিয়ে দেখতে পাবে, একটি গর্দ্দভী বাঁধা আছে, আর তার সঙ্গে একটি বাচ্চা তাদের খুলে আমার কাছে আন।3 আর যদি কেউ, তোমাদের কিছু বলে, তবে বলবে, এদেরকে প্রভুর প্রয়োজন আছে, তাতে সে তখনই তাদের পাঠিয়ে দেবে।”4 এমনটি হল যেন এর দ্বারা ভাববাদীর ভাববাণী পূর্ণ হয়,5 “তোমরা সিয়োন-কন্যাকে বল, দেখ, তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন, তিনি নম্র, ও গর্দ্দভ-শাবকের উপরে বসে আসছেন।”6 পরে ঐ শিষ্যেরা গিয়ে যীশুর আদেশ অনুযায়ী কাজ করলেন,7 গর্দ্দভীকে ও শাবকটিকে আনলেন এবং তাদের উপরে নিজেদের বস্ত্র পেতে দিলেন, আর তিনি তাদের উপরে বসলেন।8 আর ভিড়ের মধ্য অধিকাংশ লোক নিজের নিজের কাপড় রাস্তায় পেতে দিল এবং অন্য অন্য লোকেরা গাছের ডাল কেটে রাস্তায় ছড়িয়ে দিল।9 আর যে সমস্ত লোক তাঁর আগে ও পিছনে যাচ্ছিল, তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, হোশান্না দায়ূদ-সন্তান, ধন্য, যিনি প্রভুর নামে আসছেন, স্বর্গেও হোশান্না।10 আর তিনি যিরূশালেমে প্রবেশ করলে সারা শহরে কোলাহল সৃষ্টি হয়ে গেল সবাই বলল, “উনি কে?”11 তাতে লোকেরা বলল, “উনি সেই ভাববাদী, গালীলের নাসরতীয় যীশু।”যীশুর উপাসনা গৃহে প্রবেশ।12 পরে যীশু ঈশ্বরের উপাসনা গৃহে প্রবেশ করলেন এবং যত লোক মন্দিরে কেনা বেচা করছিল, সেই সবাইকে বের করে দিলেন এবং যারা টাকা বদল করার জন্য টেবিল সাজিয়ে বসেছিল ও যারা পায়রা বিক্রি করছিল, তাদের সব কিছু উল্টিয়ে ফেললেন,13 আর তাদের বললেন, “লেখা আছে, আমার ঘরকে প্রার্থনার ঘর বলা হবে,” কিন্তু তোমরা এটাকে “ডাকাতদের গুহায় পরিণত করেছো।”14 পরে অন্ধেরা ও খোঁড়ারা মন্দিরে তাঁর কাছে এলো, আর তিনি তাদের সুস্থ করলেন।15 কিন্তু প্রধান যাজকগণ ও ব্যবস্থার শিক্ষকেরা তাঁর সমস্ত আশ্চর্য্য কাজ দেখে এবং যে ছেলেমেয়েরা হোশান্না দায়ূদ-সন্তান, বলে মন্দিরে চিত্কার করছিল তাদের দেখে রেগে গেল,16 এবং তাঁকে বলল, “শুনছ, এরা কি বলছে?” যীশু তাদের বললেন, “হ্যাঁ, তোমরা কি কখনও পড়নি যে, তুমি ছোট শিশু ও দুধ খাওয়া বাচ্চার মুখ থেকে প্রশংসার ব্যবস্থা করেছ?”17 পরে তিনি তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বৈথনিয়ায় গেলেন, আর সেই জায়গায় রাতে থাকলেন।ডুমুর গাছটি শুকিয়ে গেল।18 সকালে শহরে ফিরে আসার দিন তাঁর খিদে পেল।19 রাস্তার পাশে একটি ডুমুরগাছ দেখে তিনি তার কাছে গেলেন এবং পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না। তখন তিনি গাছটিকে বললেন, “আর কখনও তোমাতে ফল না ধরুক,” আর হঠাৎ সেই ডুমুরগাছটা শুকিয়ে গেল।20 তা দেখে শিষ্যেরা আশ্চর্য্য হয়ে বললেন, “ডুমুরগাছটা হঠাৎ শুকিয়ে গেল কিভাবে?”21 যীশু এর উত্তরে তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে, আর সন্দেহ না কর, তবে তোমরা খালি ডুমুরগাছের প্রতি এমন করতে পারবে, তা নয়, কিন্তু এই পাহাড়কেও যদি বল, উপড়িয়ে যাও, আর সমুদ্রে গিয়ে পড়, তাই হবে।”22 আর তোমরা প্রার্থনায় বিশ্বাসের সঙ্গে যা কিছু চাইবে, সে সব কিছু পাবে।যীশুর ক্ষমতার বিষয়ে শিক্ষা।23 পরে যীশু মন্দিরে এলেন এবং যখন তিনি উপদেশ দিচ্ছিলেন, সে দিনের প্রধান যাজকেরা ও লোকদের প্রাচীনেরা তাঁর কাছে এসে বলল, “তুমি কোন ক্ষমতায় এই সব করছ? আর কেই বা তোমাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে?”24 যীশু উত্তরে তাদের বললেন, “আমিও তোমাদের একটি কথা জিজ্ঞাসা করব, যদি তোমরা আমাকে উত্তর দাও, তা হলে আমি তোমাদের বলবো, কোন ক্ষমতায় এসব করছি।”25 যোহনের বাপ্তিষ্ম কোথা থেকে হয়েছিল? স্বর্গরাজ্য থেকে না মানুষের থেকে? তখন তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, “যদি বলি স্বর্গ থেকে, তাহলে এ আমাদেরকে বলবে, তবে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস কর নি কেন?”26 আর যদি বলি, “মানুষের মাধ্যমে,” লোকদের থেকে আমার ভয় আছে কারণ সবাই যোহনকে ভাববাদী বলে মানে।27 তখন তারা যীশুকে বলল, “আমরা জানি না।” তিনিও তাদের বললেন, “তবে আমিও কি ক্ষমতায় এসব করছি, তা তোমাদের বলব না।”দুই পুত্রের দৃষ্টান্ত।28 কিন্তু তোমরা কি মনে কর? এক ব্যক্তির দুটি ছেলে ছিল, তিনি প্রথম জনের কাছে গিয়ে বললেন, “পুত্র, যাও, আজ আঙ্গুর ক্ষেতে কাজ কর।”29 সে বলল, “আমি যাব না,” কিন্তু পরে মন পরিবর্তন করে গেল।30 পরে তিনি দ্বিতীয় জনের কাছে গিয়ে তেমনি বললেন। সে বলল, “বাবা আমি যাচ্ছি,” কিন্তু গেল না।31 সেই দুইজনের মধ্যে কে বাবার ইচ্ছা পালন করল? তারা বলল, “প্রথম জন।” যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর আদায়কারীরা ও বেশ্যারা তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে।”32 কারণ যোহন ধার্মিকতার পথ দিয়ে তোমাদের কাছে এলেন, আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করলে না, কিন্তু কর আদায়কারীরাও বেশ্যারা তাঁকে বিশ্বাস করল, আর তোমরা তা দেখেও এই রকম মন পরিবর্তন করলে না যে, তাঁকে বিশ্বাস করবে।আঙ্গুর ক্ষেতের মালিক ও কৃষকদের দৃষ্টান্ত (উদাহরণ)।33 অন্য আর একটি গল্প শোন, একজন আঙুর ক্ষেতের মালিক ছিলেন, তিনি আঙুর ক্ষেত করে তার চারিদিকে বেড়া দিলেন, ও তার মধ্যে আঙুর রস বার করার জন্য একটা আঙুর মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন এবং দেখাশোনা করার জন্য উঁচু ঘর তৈরী করলেন, পরে কৃষকদের হাতে তা জমা দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলেন।34 আর ফল পাবার দিন কাছে এলে তিনি তাঁর ফল সংগ্রহ করার জন্য কৃষকদের কাছে তাঁর দাসদেরকে পাঠালেন।35 তখন কৃষকেরা তাঁর দাসদেরকে ধরে কাউকে মারলো, কাউকে হত্যা করল, কাউকে পাথর মারল।36 আবার তিনি আগের থেকে আরও অনেক দাসকে পাঠালেন, তাদের সঙ্গেও তারা সেই রকম ব্যবহার করল।37 অবশেষে তিনি তাঁর ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন, বললেন, “তারা আমার ছেলেকে সম্মান করবে।”38 কিন্তু কৃষকেরা মালিকের ছেলেকে দেখে বলল, “এই ব্যক্তিই উত্তরাধিকারী, এসো, আমরা একে মেরে ফেলে এর উত্তরাধিকার কেড়ে নিই।”39 পরে তারা তাঁকে ধরে আঙ্গুর ক্ষেতের বাইরে ফেলে বধ করল।40 অতএব আঙুর ক্ষেতের মালিক যখন আসবেন, তখন সেই চাষীদের কে কি করবেন?41 তারা তাঁকে বলল, “মালিক সেই মন্দ লোকেদেরও একেবারে ধ্বংস করবেন এবং সেই ক্ষেত এমন অন্য কৃষকদেরকে জমা দেবেন, যারা ফলের দিনের তাঁকে ফল দেবে।”42 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি কখনও শাস্ত্রে পড়নি, যে পাথরটাকে মিস্ত্রীরা অগ্রাহ্য করেছিল, সেই পাথরটাই কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠল, প্রভু ঈশ্বর এই কাজ করেছেন, আর এটা আমাদের চোখে সত্যিই খুব আশ্চর্য্য কাজ?”43 এই জন্য আমি তোমাদের বলছি, “তোমাদের কাছ থেকে ঈশ্বরের রাজ্য কেড়ে নাওয়া যাবে এবং এমন এক জাতিকে দেওয়া হবে, যে জাতি তার ফল দেবে।”44 আর এই পাথরের উপরে যে পড়বে, সে ভগ্ন হবে, কিন্তু এই পাথর যার উপরে পড়বে, তাকে চূরমার করে ফেলবে।45 তাঁর এই সব গল্প শুনে প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা বুঝল যে, তিনি তাদেরই বিষয় বলছেন।46 আর তারা যীশুকে ধরতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা জনগণকে ভয় পেলো, কারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মানত।

ম্যাথু 21

বিয়ের ভোজের গল্প।

22 যীশু আবার গল্পের মাধ্যমে কথা বললেন, তিনি তাদের বললেন,2 স্বর্গরাজ্য এমন একজন রাজার মতো, যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ আয়োজন করলেন।3 সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু লোকেরা আসতে চাইল না।4 তাতে তিনি আবার অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, “নিমন্ত্রিত লোকদেরকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত করেছি, আমার অনেক বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট পশু সব মারা হয়েছে, সব কিছুই প্রস্তুত, তোমরা বিয়ের ভোজে এসো।”5 কিন্তু তারা অবহেলা করে কেউ তার ক্ষেতে, কেউ বা তার নিজের কাজে চলে গেল।6 অবশিষ্ট সবাই তাঁর দাসদের ধরে অপমান করল ও বধ করল।7 তাতে রাজা প্রচন্ড রেগে গেলেন এবং সৈন্যসামন্ত পাঠিয়ে সেই হত্যাকারীদের ধ্বংস করলেন ও তাদের শহর পুড়িয়ে দিলেন।8 পরে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, “বিয়ের ভোজ তো প্রস্তুত, কিন্তু ঐ নিমন্ত্রিত লোকেরা এর যোগ্য ছিল না,9 অতএব তোমরা রাজপথের মাথায় মাথায় গিয়ে যত লোকের দেখা পাও, সবাইকে বিয়ের ভোজে ডেকে আন।”10 তাতে ঐ দাসেরা রাজপথে গিয়ে ভাল মন্দ যত লোকের দেখা পেল, সবাইকেই সংগ্রহ করে আনল, তাতে বিয়ে বাড়ি অতিথিতে পরিপূর্ণ হল।11 পরে রাজা অতিথিদের দেখার জন্যে ভিতরে এসে এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন, যার গায়ে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছিল না,12 তিনি তাকে বললেন, “হে বন্ধু, তুমি কেমন করে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছাড়া এখানে প্রবেশ করলে?” সে উত্তর দিতে পারল না।13 তখন রাজা তাঁর চাকরদের বললেন, “ওর হাত পা বেঁধে ওকে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও, সেখানে লোকেরা কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।14 যদিও অনেককেই ডাকা হয়েছে, কিন্তু অল্পই মনোনীত।”যীশুর শত্রুদের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর।15 তখন ফরীশীরা গিয়ে পরিকল্পনা করল, কিভাবে তাঁকে কথার ফাঁদে ফেলা যায়।16 আর তারা হেরোদীয়দের সঙ্গে তাদের শিষ্যদের দিয়ে তাঁকে বলে পাঠাল, “গুরু, আমরা জানি, আপনি সত্যবাদী এবং সঠিক ভাবে ঈশ্বরের পথের বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন এবং আপনি কাউকে ভয় পাননা, কারণ আপনি লোকেরা কে কি বলল সে কথায় বিচার করবেন না।17 ভাল, আমাদের বলুন, আপনার মত কি? কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না?”18 কিন্তু যীশু তাদের ফাঁদ বুঝতে পেরে বললেন, “ভণ্ডরা, আমার পরীক্ষা কেন করছ?19 সেই করের পয়সা আমাকে দেখাও।” তখন তারা তাঁর কাছে একটি দিন দিনার আনল।20 তিনি তাদের বললেন, “এই মূর্ত্তি ও এই নাম কার?” তারা বলল, “কৈসরের।”21 তখন তিনি তাদের বললেন, “তবে কৈসরের যা কিছু, তা কৈসরকে দাও, আর ঈশ্বরের যা কিছু, তা ঈশ্বরকে দাও।”22 এই কথা শুনে তারা আশ্চর্য্য হল এবং তাঁর কাছ থেকে চলে গেল।বিবাহ ও পুনরুত্থানের।23 সেই দিন সদ্দূকীরা, যারা বলে মৃত্যু থেকে জীবিত হয় না, তারা তাঁর কাছে এলো।24 এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “গুরু, মোশি বললেন, কেউ যদি সন্তান ছাড়া মারা যায়, তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে তার ভাইয়ের জন্য বংশ রক্ষা করবে।25 ভাল, আমাদের মধ্যে কোনো একটি পরিবারে সাতটি ভাই ছিল, প্রথম জন বিয়ের পর মারা গেল এবং সন্তান না হওয়ায় তার ভাইয়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে রেখে গেল।26 এইভাবেই দ্বিতীয় জন তৃতীয় জন করে সাত জনই তাকে বিয়ে করল।27 সবার শেষে সেই স্ত্রীও মরে গেল।28 অতএব মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার দিন ঐ সাত জনের মধ্যে সে কার স্ত্রী হবে? সবাই তো তাকে বিয়ে করেছিল।”29 যীশু এর উত্তরে তাদের বললেন, “তোমরা ভুল বুঝছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের ক্ষমতা,30 কারণ মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে লোকে বিয়ে করে না এবং তাদের বিয়ের দেওয়াও হয় না, বরং স্বর্গে ঈশ্বরের দূতদের মতো থাকে।31 কিন্তু মৃতদের মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার বিষয়ে ঈশ্বর তোমাদের যা বলেছেন, তা কি তোমরা শাস্ত্রে পড়নি?”32 তিনি বলেন, “আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বর,” (এই লোকগুলি মৃত্যুর অনেক পরে ঈশ্বর এই কথা গুলি বলেছেন) ঈশ্বর মৃতদের নন, কিন্তু জীবিতদের।33 এই কথা শুনে লোকেরা তাঁর শিক্ষাতে অবাক হয়ে গেল।শ্রেষ্ট আদেশ।34 ফরীশীরা যখন শুনতে পেল, তিনি সদ্দূকীদের নিরুত্তর করেছেন, তখন তারা একসঙ্গে এসে জুটল।35 আর তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি, একজন ব্যবস্থার গুরু, পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল,36 “গুরু, ব্যবস্থার মধ্যে কোন আদেশটি মহান?”37 তিনি তাকে বললেন, “তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে,”38 এটা মহান ও প্রথম আদেশ।39 আর দ্বিতীয় আদেশটি হলো, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।”40 এই দুটি আদেশেই সমস্ত ব্যবস্থা এবং ভাববাদীদের বই নির্ভর করে।যীশুর শত্রুরা নিরুত্তর।41 আর ফরীশীরা একত্র হলে যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন,42 “খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমাদের কি মনে হয়, তিনি কার সন্তান?” তারা বলল, “দায়ূদের।”43 তিনি তাদের বললেন, “তবে দায়ূদ কিভাবে আত্মার আবেশে তাঁকে প্রভু বলেন?” তিনি বলেন,44 “প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, তুমি আমার ডান পাশে বস, যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদেরকে তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি।”45 অতএব দায়ূদ যখন তাঁকে প্রভু বলেন, তখন তিনি কিভাবে তাঁর সন্তান?46 তখন কেউ তাঁকে কোন উত্তর দিতে পারল না, আর সেই দিন থেকে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে কারও সাহস হল না।

ম্যাথু 22

ফরীশীদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের প্রতি যীশুর অনুযোগ।

23 তখন যীশু লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন,2 “ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা মোশির আসনে বসেন।3 অতএব তাঁরা তোমাদের যা কিছু করতে বললেন, তা পালন করবে এবং তা মেনে চলবে, কিন্তু তাদের কাজের মতো কাজ করবে না, কারণ তারা যা বলে, তারা নিজেরা সেগুলো করে না।4 তারা ভারী ও কঠিন বোঝা বেঁধে লোকদের কাঁধে চাপিয়ে দেয়, কিন্তু নিজেরা আঙ্গুল দিয়েও তা সরাতে চায় না।5 তারা লোককে দেখানোর জন্যই তাদের সমস্ত কাজ করে, তারা নিজেদের জন্য শাস্ত্রের বাক্য লেখা বড় কবচ তৈরী করে এবং বস্ত্রের ঝালর বড় করে,6 আর ভোজে প্রধান স্থান, সমাজঘরে প্রধান প্রধান আসন তারা ভালবাসে,7 হাটে বাজারে শুভেচ্ছা জানায় এবং লোকের কাছে রব্বি (গুরু) বলে সম্মান সূচক অভিবাদন পেতে খুব ভালবাসে।”8 কিন্তু তোমরা শিক্ষক বলে সম্ভাষিত হয়ো না, কারণ তোমাদের গুরু একজন এবং তোমরা সবাই তার ভাই।9 আর পৃথিবীতে কাউকেও পিতা বলে ডেকো না, কারণ তোমাদের পিতা একজন, যিনি স্বর্গে থাকেন।10 তোমরা শিক্ষক বলে সম্ভাষিত হয়ো না, কারণ তোমাদের গুরু একজন, তিনি খ্রীষ্ট।11 কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের সেবক হবে।12 আর যে কেউ, নিজেকে উঁচু করে, তাকে নীচু করা হবে, আর যে কেউ নিজেকে নীচু করে, তাকে উঁচু করা হবে।13 কিন্তু ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা লোকেদের জন্য স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে থাক,14 নিজেরাও তাতে প্রবেশ কর না এবং যারা প্রবেশ করতে আসে, তাদের ও প্রবেশ করতে দাও না।15 ধর্মশিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ এক জনকে ইহূদি ধর্মে ধর্মান্তরিত করার জন্য তোমরা সমুদ্রে ও বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে থাক, আর যখন কেউ হয়, তখন তাকে তোমাদের থেকেও দ্বিগুন নরকের যোগ্য করে তোলো।16 অন্ধ পথ পরিচালনাকারীরা, ধিক তোমাদের! তোমরা বলে থাক, কেউ মন্দিরের দিব্যি করে তা পালন না করলে তা কিছুই নয়, কিন্তু কেউ মন্দিরের সোনার দিব্যি করলে তাতে সে আবদ্ধ হল।17 তোমরা মূর্খেরা ও অন্ধেরা, বল দেখি, কোনটি শ্রেষ্ঠ? সোনা, না সেই মন্দির, যা সেই সোনাকে পবিত্র করেছে?18 আরও বলে থাক, কেউ যজ্ঞবেদির দিব্যি করলে তা কিছুই নয়, কিন্তু কেউ যদি তার উপরের উপহারের দিব্যি করে, তবে সে তার দিব্যিতে আবদ্ধ হল।19 তোমরা অন্ধেরা, বল দেখি, কোনটি শ্রেষ্ঠ? উপহার না সেই যজ্ঞবেদি, যা উপহারকে পবিত্র করে?20 যে ব্যক্তি যজ্ঞবেদির দিব্যি করে, সে তো বেদির ও তার উপরের সবকিছুরই দিব্যি করে।21 আর যে মন্দিরের দিব্যি করে, সে মন্দিরের, যিনি সেখানে বাস করেন, তাঁরও দিব্যি করে।22 আর যে স্বর্গের দিব্যি করে, সে ঈশ্বরের সিংহাসনের এবং যিনি তাতে বসে আছেন, তাঁরও দিব্যি করে।23 ধর্মশিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা পুদিন না, মৌরি ও জিরার দশমাংশ দিয়ে থাক, আর ব্যবস্থার মধ্যে প্রধান বিষয়, ন্যায়বিচার, দয়া ও বিশ্বাস ত্যাগ করেছ, কিন্তু এ সব পালন করা এবং ঐ গুলিও ত্যাগ না করা, তোমাদের উচিত ছিল।24 অন্ধ পথ পরিচালনাকারীরা, তোমরা মশা ছেঁকে ফেল, কিন্তু উট গিলে খাও।25 ধর্মশিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা পান করার পাত্র ও খাওয়ার পাত্রের বাইরে পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু সেগুলির ভেতরে দৌরাত্ম্য ও অন্যায়ে ভরা।26 অন্ধ ফরীশী, আগে পান পাত্রের ও খাওয়ার পাত্রের ভেতরেও পরিষ্কার কর, যেন তা বাইরেও পরিষ্কার হয়।27 ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো, যা বাইরে দেখতে খুবই সুন্দর, কিন্তু ভেতরে মরা মানুষের হাড় ও সব রকমের অশুচিতায় ভরা।28 একইভাবে তোমরাও বাইরে লোকদের কাছে নিজেদের ধার্মিক বলে দেখিয়ে থাক, কিন্তু ভিতরে তোমরা ভণ্ড ও পাপে পরিপূর্ণ।29 ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা ভাববাদীদের কবর গেঁথে থাক এবং ধার্ম্মিকদের সমাধি স্তম্ভ সাজিয়ে থাক, আর তোমরা বল,30 আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিনের থাকতাম, তবে আমরা ভাববাদীদের রক্তপাতে তাঁদের সহভাগী হতাম না।31 অতএব, তোমরা নিজেদের বিষয়ে এই সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, যারা ভাববাদীদের বধ করেছিল, তোমরা তাদেরই সন্তান।32 তোমরাও তোমাদের পূর্বপুরুষদের পাপের পরিমাণ পূর্ণ করছ।33 হে সাপের দল, কালসাপের বংশেরা, তোমরা কেমন করে বিচারে নরকদন্ড এড়াবে?34 অতএব, দেখ, আমি তোমাদের কাছে ভাববাদী, জ্ঞানবান ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের পাঠাব, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে তোমরা বধ করবে ও ক্রুশে দেবে, কয়েকজনকে তোমাদের সমাজঘরে চাবুক মারবে এবং এক শহর থেকে আর এক শহরে তাড়া করবে,35 যেন পৃথিবীতে যত ধার্মিক লোকের রক্তপাত হয়ে আসছে, সে সমস্তর দন্ড তোমাদের উপরে আসে, সেই ধার্মিক হেবলের রক্তপাত থেকে, বরখিয়ের ছেলে যে সখরিয়কে তোমরা ঈশ্বরের মন্দিরের ও যজ্ঞবেদির মাঝখানে বধ করেছিলে, তাঁর রক্তপাত পর্যন্ত।36 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের উপরে এসমস্ত দন্ড আসবে।37 যিরূশালেম, যিরূশালেম, তুমি ভাববাদীদেরকে বধ করেছ ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের তোমরা পাথর মেরে থাক! মুরগি যেমন তার বাচ্চাদের ডানার নীচে একত্র করে, তেমন আমিও কত বার তোমার সন্তানদের একত্র করতে ইচ্ছা করেছি, কিন্তু তোমরা রাজি হলে না।38 দেখ, তোমাদের বাড়ি, তোমাদের জন্য খালি হয়ে পড়ে থাকবে।39 কারণ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা এখন থেকে আমাকে আর দেখতে পাবে না, যত দিন পর্যন্ত তোমরা না বলবে, “ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন।”

ম্যাথু 23

শিষ্যদের জন্য যীশুর প্রার্থনা।

17 যীশু এই সব কথা বললেন; তারপর তিনি তাঁর চোখ স্বর্গের দিকে তুললেন এবং বললেন, “পিতা, দিন এসেছে; তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত কর, যেন তোমার পুত্র তোমাকে মহিমান্বিত করে2 যেমন তুমি তাঁকে সব মানুষের উপরে কর্তৃত্ব দিয়েছ, যাদেরকে তুমি তাঁকে দিয়েছ তিনি যেন তাদের অনন্ত জীবন দেন।3 আর এটাই অনন্ত জীবন: যেন তারা তোমাকে জানতে পারে, একমাত্র সত্য ঈশ্বরকে এবং তুমি যাকে পাঠিয়েছ, যীশু খ্রীষ্টকে।4 তুমি আমাকে যে কাজ করতে দিয়েছ, তা শেষ করে আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি।5 এখন পিতা, তোমার উপস্থিতে আমাকে মহিমান্বিত কর, জগত সৃষ্টি হবার আগে তোমার কাছে আমার যে মহিমা ছিল, তুমি সেই মহিমায় এখন আমাকে মহিমান্বিত কর।”যীশু তাঁর শিষ্যদের জন্য প্রার্থনা করলেন।6 জগতের মধ্য থেকে তুমি যে লোকদের আমাকে দিয়েছ আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রকাশ করেছি। তারা তোমারই ছিল এবং তাদের তুমি আমাকে দিয়েছ এবং তারা তোমার কথা রেখেছে।7 এখন তারা জানে যে, তুমি আমাকে যা কিছু দিয়েছ সে সবই তোমার কাছ থেকে এসেছে,8 তুমি আমাকে যে সব বাক্য দিয়েছ আমি এই বাক্যগুলি তাদের দিয়েছি। তারা তাদের গ্রহণ করেছে এবং সত্যি জেনেছে যে আমি তোমার কাছ থেকে এসেছি এবং তারা বিশ্বাস করেছে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।9 আমি তাদের জন্য প্রার্থনা করি। আমি জগতের জন্য প্রার্থনা করি না কিন্তু যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, কারণ তারা তোমারই।10 সব জিনিস যা আমার সবই তোমার এবং তোমার জিনিসই আমার; আমি তাদের মধ্যে মহিমান্বিত হয়েছি।11 আমি আর বেশিক্ষণ জগতে নেই, কিন্তু এই লোকেরা জগতে আছে এবং আমি তোমাদের কাছে আসছি। পবিত্র পিতা, তোমার নামে তাদের রক্ষা কর যা তুমি আমাকে দিয়েছ যেন তারা এক হয়, যেমন আমরা এক।12 যখন আমি তাদের সঙ্গে ছিলাম আমি তোমার নামে তাদের রক্ষা করেছি যা তুমি আমাকে দিয়েছ; আমি তাদের পাহারা দিয়েছি এবং যার বিনষ্ট হওয়ার কথা ছিল সে বিনাশ হয়েছে, যেন শাস্ত্রের কথা পূর্ণ হয়।13 এখন আমি তোমার কাছে আসছি; কিন্তু আমি জগতে থাকতেই এই সব কথা বলেছি যেন তারা আমার আনন্দে নিজেদের পূর্ণ করে।14 আমি তাদের তোমার বাক্য দিযেছি; জগত তাদের ঘৃণা করেছে, কারণ তারা জগতের নয়, যেমন আমি জগতের নই।15 আমি প্রার্থনা করছি না যে তুমি তাদের জগত থেকে নিয়ে নাও, কিন্তু তাদের শয়তানের কাছ থেকে রক্ষা কর।16 তারা জগতের নয়, যেমন আমিও জগতের নই।17 তাদের সত্যে পবিত্র কর; তোমার বাক্য সত্য।18 তুমি আমাকে জগতে পাঠিয়েছো এবং আমি তাদের জগতে পাঠিয়েছি।19 তাদের জন্য আমি নিজেকে পবিত্র করেছি যেন তারা তাদেরকেও সত্যিই পবিত্র করে।যীশু সমস্ত বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন।20 আমি কেবলমাত্র এদের জন্য প্রার্থনা করি না, কিন্তু আরও তাদের জন্য যারা তাদের বাক্যের মধ্য দিয়ে আমাকে বিশ্বাস করবে21 সুতরাং তারা সবাই এক হবে, যেমন তুমি, পিতা, আমার মধ্যে এবং আমি তোমার মধ্যে। আমি প্রার্থনা করি যে তারাও যেন আমাদের মধ্যে থাকে সুতরাং জগত বিশ্বাস করবে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।22 যে মহিমা তুমি আমাকে দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি, সুতরাং তারা এক হবে, যেমন আমরা এক।23 আমি তাদের মধ্যে এবং তুমি আমার মধ্যে, যেন তারা সম্পূর্ণভাবে এক হয়; যেন জগত জানতে পারে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো এবং তাদের ভালবেসেছ, যেমন তুমি আমাকে প্রেম করেছ।24 পিতা, যাদের তুমি আমায় দিয়েছ আমি আশাকরি যে তারাও আমার সঙ্গে থাকে যেখানে আমি থাকি, তুমি আমায় যাদের দিয়েছো, তাহারাও যেন সেখানে আমার সঙ্গে থাকে সুতরাং তারা যেন আমার মহিমা দেখে, যা তুমি আমাকে দিয়েছ: কারণ জগত সৃষ্টির আগে তুমি আমাকে প্রেম করেছিলেন।25 ধার্মিক পিতা, জগত তোমাকে জানে নি, কিন্তু আমি তোমাকে জানি; এবং এরা জানে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।26 আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রচার করেছি এবং আমি এটা জানাব যে তুমি যে প্রেমে আমাকে প্রেম করেছ, তা তাদের মধ্যে থাকে এবং আমি তাদের মধ্যে থাকি।

জন 17