Skip to content

Bible Passages

মৃত্যুর আগে শিষ্যদের প্রতি যীশুর প্রবোধ-বাক্য। যীশু শিষ্যদের পা ধোয়ান।

13 নিস্তারপর্ব্বের আগে, কারণ যীশু জানতেন যে এই পৃথিবী থেকে পিতার কাছে যাবার দিন তাঁর হয়েছে, তাই এই জগতে যারা তাঁর নিজের প্রীতিপাত্র ছিল, তিনি তাদেরকে শেষ পর্যন্তই প্রেম করলেন।2 আর রাতের খাবারের দিন, শয়তান আগে থেকেই শিমোনের ছেলে ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদার মনে যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা জাগিয়ে দিয়েছিল।3 যীশু জানতেন যে পিতা সব কিছুই তাঁর হাতে দিয়েছিলেন এবং তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছিলেন এবং ঈশ্বরের কাছেই ফিরে যাচ্ছেন।4 তিনি ভোজ থেকে উঠলেন এবং উপরের কাপড়টি খুলে রাখলেন। তারপর একটি তোয়ালে নিলেন এবং নিজের কোমরে জড়ালেন।5 তারপরে তিনি একটি গামলায় জল ঢাললেন এবং শিষ্যদের পা ধোয়াতে শুরু করলেন এবং তোয়ালে দিয়ে পা মুছিয়ে দিলেন।6 তিনি শিমোন পিতরের কাছে এলেন এবং পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কি আমার পা ধুইয়ে দেবেন?”7 যীশু উত্তরে বললেন, “আমি কি করছি তা তুমি এখন বুঝতে পারছ না কিন্তু পরে এটা বুঝতে পারবে।”8 পিতর তাঁকে বললেন, “আপনি কখনও আমার পা ধুইয়ে দেবেন না।” যীশু উত্তরে তাঁকে বললেন, যদি আমি তোমার পা ধুয়ে না দিই, তবে আমার সঙ্গে তোমার কোন সম্পর্ক নেই।9 শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, কেবল আমার পা ধোবেন না, কিন্তু আমার হাত ও মাথাও ধুইয়ে দিন।”10 যীশু তাঁকে বললেন, “যে কেউ স্নান করেছে, তার পা ছাড়া আর কিছু ধোয়ার দরকার নেই এবং সে সর্বাঙ্গে পরিষ্কার; তোমরা শুদ্ধ, কিন্তু তোমরা সকলে নও।”11 কারণ যীশু জানতেন কে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে; এই জন্য তিনি বললেন, “তোমরা সবাই শুদ্ধ নও।”12 যখন যীশু তাদের পা ধুইয়ে দিলেন এবং তাঁর পোষাক পরে আবার বসে তাদের বললেন, “তোমরা কি জানো আমি তোমাদের জন্য কি করেছি?”13 তোমরা আমাকে গুরু এবং প্রভু বলে ডাক এবং তোমরা ঠিকই বল, কারণ আমিই সেই।14 “তারপর যদি আমি প্রভু এবং গুরু হয়ে তোমাদের পা ধুইয়ে দিই, তবে তোমরাও একে অন্যের পা ধুইয়ে দিতে বাধ্য।15 সেইজন্য আমি তোমাদের একটা উপমা দিয়েছি সুতরাং তোমাদেরও এই রকম করা উচিত যা আমি তোমাদের জন্য করেছি।”16 সত্য, সত্য, আমি তোমাদের যা বলছি, একজন দাস তার নিজর প্রভুর থেকে মহৎ নয়; যিনি পাঠিয়েছেন তাঁর থেকে যাকে পাঠানো হয়েছে তিনি মহৎ নয়।17 যদি তোমরা এই বিষয়গুলো জান, তোমরা যদি তাদের জন্য এগুলো কর তোমরা ধন্য হবে।নিজের বিরুদ্ধে যীশুর বিশ্বাসঘাতকতার ভবিষ্যৎবাণী।18 আমি তোমাদের সকলের কথা বলছি না, আমি যাদের মনোনীত করেছি আমি তাদের জানি কিন্তু আমি এই কথা বলছি যে শাস্ত্র বাক্য পূর্ণ হবেই: যে আমার রুটি খেয়েছে, সে আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে।19 এটা ঘটবার আগে আমি তোমাদের বলছি যে যখন এটা ঘটবে, তোমরা অবশ্যই বিশ্বাস করবে যে, আমিই সেই।20 সত্য, সত্য, আমি তোমাদের বলছি, “যে আমাকে গ্রহণ করে, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, সে তাঁকেই গ্রহণ করে।”বিশ্বাসঘাতককে নির্দ্দেশকরণ।21 যখন যীশু এই কথা বললেন, তখন তিনি আত্মাতে কষ্ট পেলেন, তিনি সাক্ষ্য দিলেন এবং বললেন, “সত্য, সত্য, আমি তোমাদের বলছি যে তোমাদের মধ্যে একজন আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।”22 শিষ্যরা একজন অন্যের দিকে তাকালো, তারা অবাক হল তিনি কার বিষয় বলছেন।23 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন ঘনিষ্ট শিষ্য ছিল, যাকে যীশু প্রেম করতেন, ভোজের টেবিলে যে যীশুর কোলে হেলান দিয়ে বসেছিল।24 তারপর শিমোন পিতর সেই শিষ্যকে ইশারা করে বললেন, “আমাদের বলুন সে কে, তিনি কার কথা বলছেন।”25 ঐ শিষ্য যীশুর পেছন দিকে হেলে বললেন, “প্রভু, সে কে?”26 যীশু তার উত্তরে বললেন, “সেই, যার জন্য আমি এই রুটির টুকরোটা ডোবাব এবং তাকে দেব।” সুতরাং তখন তিনি রুটি ডুবিয়ে, ঈষ্করিয়োতীয় শিমোনের ছেলে যিহূদাকে দিলেন।27 এবং রুটি টি দেবার পরেই, শয়তান তার মধ্যে প্রবেশ করল। তারপর যীশু তাকে বললেন, “তুমি যেটা করছ সেটা তাড়াতাড়ি কর।”28 ভোজের টেবিলের কেউ কারণটি জানতে পারেনি যে যীশু তাকেই বলেছিল29 কিছু লোক চিন্তা করেছিল যে, যিহূদার কাছে টাকার থলি ছিল বলে যীশু তাকে বললেন, “উত্সবের জন্য যে জিনিসগুলো দরকার কিনে আন,” অথবা সে যেন অবশ্যই গরিবদের কিছু জিনিস দেয়।30 যিহূদা রুটি গ্রহণ করার পর তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেল; এবং তখন রাত ছিল।যীশুর নতুন আদেশ।31 যখন যিহূদা চলে গেল, যীশু বললেন, “এখন মনুষ্যপুত্র মহিমান্বিত হলেন এবং ঈশ্বরও তাঁতে মহিমান্বিত হলেন।32 ঈশ্বর পুত্রকে তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত করবেন এবং তিনি খুব তাড়াতাড়ি তাঁকে মহিমান্বিত হবেন।33 আমার প্রিয় শিশুরা, আমি অল্পকালের জন্য তোমাদের সঙ্গে আছি। তোমরা আমাকে খুঁজবে এবং আমি ইহূদিদের যেমন বলেছিলাম, আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পার না। এখন আমি তোমাদেরও তাই বলছি।”34 এক নতুন আদেশ আমি তোমাদের দিচ্ছি, যে তোমরা একে অন্যকে প্রেম করবে; আমি যেমন তোমাদের প্রেম করেছি, সুতরাং তোমরাও একে অন্যকে প্রেম করবে।35 তোমরা যদি একে অন্যকে প্রেম কর, তবে তার মাধ্যমে সব লোকেরা জানবে যে তোমরা আমার শিষ্য।36 শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?” যীশু উত্তর দিলেন, “আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আমাকে অনুসরণ কোর না, কিন্তু পরে তোমরা আসতে পারবে।”37 পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, কেন এখন আপনাকে অনুসরণ করতে পারি না? আপনার জন্য আমি আমার জীবন দেব।”38 যীশু উত্তরে বললেন, “আমার জন্য তোমরা কি তোমাদের জীবন দেবে? সত্য, সত্য আমি তোমাকে বলছি, মোরগ ডাকার আগে তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করবে।

জন 13

14 “তোমাদের মন যেন অস্থির না হয়। তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস কর; আমাকেও বিশ্বাস কর।2 আমার পিতার বাড়িতে থাকার অনেক জায়গা আছে; যদি এরকম না হত, আমি তোমাদের বলতাম, সেইজন্য আমি তোমাদের জন্য থাকার জায়গা তৈরী করতে যাচ্ছি।3 যদি আমি যাই এবং তোমাদের জন্য থাকার জায়গা তৈরী করি, আমি আবার আসব এবং আমার কাছে তোমাদের নিয়ে যাব যেন আমি যেখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার,4 আমি কোথায় যাচ্ছি সে পথ তোমরা জান।”পিতার কাছে যাওয়ার পথ হলো যীশু।5 থোমা যীশুকে বললেন, “প্রভু, আমরা জানি না আপনি কোথায় যাচ্ছেন; আমরা কিভাবে পথটা জানব?”6 যীশু তাঁকে বললেন, “আমিই পথ, আমিই সত্য এবং আমিই জীবন; আমাকে ছাড়া কেউ পিতার কাছে যেতে পারে না।7 যদি তোমরা আমাকে জানতে, তবে তোমরা আমার পিতা কেও জানতে; এখন থেকে তোমরা তাঁকে জেনেছ এবং তাঁকে দেখেছ।”8 ফিলিপ যীশুকে বললেন, “প্রভু, আমাদের পিতাকে দেখান এবং এটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে।”9 যীশু তাঁকে বললেন, “ফিলিপ, আমি এত দিন ধরে তোমাদের সঙ্গে আছি তবুও তুমি কি এখনো আমাকে চিনতে পারনি?” যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও দেখেছে; তোমরা কিভাবে বলতে পারো, “পিতাকে আমাদের দেখান?”10 তোমরা কি বিশ্বাস কর না যে আমি পিতাতে আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন? যে সব শিক্ষার কথা আমি তোমাদের বলছি সে সব আমার নিজের কথা নয়; কিন্তু পিতা আমার মধ্যে থেকে নিজের কাজ করছেন।11 আমাকে বিশ্বাস কর যে, আমি পিতাতে আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন; নতুবা আমার কাজের জন্যই আমাকে বিশ্বাস কর।12 সত্য, সত্য, আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ আমাতে বিশ্বাস করে, আমি যে সব কাজ করি, সেও এই সব কাজ করবে; এবং সে এর থেকেও মহান মহান কাজ করবে কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি।13 তোমরা আমার নামে যা কিছু চাইবে, আমি তা করব, যেন পিতা তাঁর পুত্রের মাধ্যমে মহিমান্বিত হন।14 যদি তোমরা আমার নামে কিছু চাও, তা আমি করব।সত্যের আত্মা শিষ্যদের সহায়।15 যদি তোমরা আমাকে ভালবাসো, তবে তোমরা আমার সব আদেশ পালন করবে।16 এবং আমি পিতার কাছে প্রার্থনা করব এবং তিনি তোমাদের অন্য একজন সহায়ক দেবেন সুতরাং তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকবেন,17 তিনি সত্যের আত্মা। জগত তাঁকে গ্রহণ করে না কারণ সে তাঁকে দেখেনি অথবা তাঁকে জানে না। তোমরা তাঁকে জান, তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকেন এবং তোমাদের মধ্যে থাকবেন।18 আমি তোমাদের একা রেখে যাব না; আমি তোমাদের কাছে ফিরে আসব।19 কিছুদিন পরে জগত আর আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমাকে দেখতে পাবে। কারণ আমি জীবিত আছি, তোমরাও জীবিত থাকবে।20 যে দিন তোমরা জানবে যে আমি আমার পিতার মধ্যে আছি এবং তোমরা আমার মধ্যে আছ এবং আমি তোমাদের মধ্যে আছি।21 যে আমার সব আদেশ জানে এবং পালন করে, সেই একজন যে আমাকে ভালবাসে; এবং যে আমাকে ভালবাসে আমার পিতাও তাকে ভালবাসবে এবং আমি তাকে ভালবাসব এবং আমি নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করব।22 যিহূদা (ঈষ্করিয়োতীয় নয়) যীশুকে বললেন, “প্রভু, কি ঘটেছে, যে আপনি আমাদের কাছেই নিজেকে দেখাবেন জগতের কাছে নয়?”23 যীশু উত্তর করলেন এবং তাঁকে বললেন, “কেউ যদি আমাকে ভালবাসে, সে আমার কথা পালন করবে। আমার পিতা তাকে ভালবাসবেন এবং আমরা তাঁর কাছে আসব এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের বাস করার জায়গা তৈরী করবেন।24 যে কেউ আমাকে ভালবাসে না আমার কথা পালন করে না। যে কথা তোমরা শুনছ সেটা আমার নয় কিন্তু পিতার যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।”25 আমি তোমাদের এই সব বিষয় বলেছি, যখন আমি তোমাদের মধ্যে ছিলাম।26 যখন সহায়ক, পবিত্র আত্মা, যাঁদের পিতা আমার নামে পাঠাবেন, তাঁরা তোমাদের সব বিষয়ে শিক্ষা দেবেন এবং আমি তোমাদের যা বলেছি সে সব মনে করিয়ে দেবেন।27 আমি তোমাদের জন্য শান্তি রেখে যাচ্ছি; আমার শান্তি তোমাদের দান করছি। জগত যেভাবে দেয় আমি সেভাবে দিই না। তোমাদের মন যেন অস্থির না হয় এবং মনে ভয় না থাকে।28 তোমরা শুনেছ যে, আমি তোমাদের বলেছি, আমি চলে যাচ্ছি এবং আবার তোমাদের কাছে ফিরে আসব। যদি তোমরা আমাকে ভালবাসতে, তবে তোমরা আনন্দ করতে কারণ আমি বাবার কাছে যাচ্ছি, কারণ বাবা আমার চেয়ে মহান।29 এখন ঐ সব ঘটবার আগে আমি তোমাদের বলছি, যখন এটা ঘটবে তোমরা বিশ্বাস করবে।30 আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশি কথা বলব না, কারণ জগতের শাসনকর্ত্তা আসিতেছে। আমার উপরে তাঁর কোনো ক্ষমতা নেই,31 কিন্তু জগত যেন জানে যে, আমি পিতাকে ভালবাসি, পিতা আমাকে যা আদেশ করেন আমি সেই রকম করি। ওঠ, আমরা এ জায়গা ছেড়ে চলে যাই।

জন 14

যীশু আঙুরগাছ, শিষ্যরা ডালপালা।

জন 1415 আমিই সত্য আঙুরলতা এবং আমার পিতা একজন আঙুর উত্পাদক।2 তিনি আমার থেকে সেই সব ডাল কেটে ফেলেন যে ডালে ফল ধরে না এবং যে ডালে ফল ধরে সেই ডালগুলি তিনি পরিষ্কার করেন যেন তারা আরো অনেক বেশি ফল দেয়।3 আমি যে বার্তার কথা তোমাদের আগে বলেছি তার জন্য তোমরা আগে থেকেই শুচি হয়েছ।4 আমাতে থাক এবং আমি তোমাদের মধ্যে। যেমন আঙুর গাছের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো ডাল নিজের থেকে ফল দিতে পারে না, তেমনই তোমরা যদি আমার মধ্যে না থাক তবে তোমরাও দিতে পার না।5 আমি আঙুরগাছ; তোমরা শাখা প্রশাখা। যে কেউ আমার মধ্যে থাকে এবং আমি তার মধ্যে, সেই লোক অনেক ফলে ফলবান হবে, যে আমার থেকে দূরে থাকে সে কিছুই করতে পারে না।6 যদি কেউ আমাতে না থাকে, তাকে ডালের মত ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় এবং সে শুকিয়ে যায়; লোকেরা ডালগুলো জড়ো করে সেগুলোকে আগুনের মধ্যে ফেলে দেয় ও সেগুলো পুড়ে যায়।7 যদি তোমরা আমার মধ্যে থাক এবং আমার কথাগুলো যদি তোমাদের মধ্যে থাকে, তবে তোমাদের যা ইচ্ছা চাও এবং আমি তোমাদের জন্য তাই করব।8 এতে আমার পিতা মহিমান্বিত হন, যদি তোমরা অনেক ফলে ফলবান হও তবে তোমরা আমার শিষ্য হবে।9 পিতা যেমন আমাকে ভালবেসেছেন, আমিও তেমন তোমাদের ভালো বেসেছি; আমার ভালবাসার মধ্যে থাক।10 তোমরা যদি আমার আদেশগুলি পালন কর, তোমরাও আমার ভালবাসার মধ্যে থাকবে যেমন আমি আমার পিতার আদেশগুলি পালন করেছি এবং তাঁর ভালবাসায় থাকি।11 আমি তোমাদের এই সব বিষয় বলেছি, যেন আমার আনন্দ তোমাদের মধ্যে থাকে এবং তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হয়।12 আমার আদেশ এই, যেন তোমরা একে অন্যকে ভালবাসবে, যেমন আমি তোমাদের ভালবেসেছি।13 কারোর এর চেয়ে বেশি ভালবাসা নেই, যে নিজের বন্ধুদের জন্য নিজের জীবন দেবে।14 তোমরা আমার বন্ধু যদি তোমরা এই সব জিনিস কর যা আমি তোমাদের আদেশ করি।15 বেশিদিন আর আমি তোমাদের দাস বলব না, কারণ, দাসেরা জানে না তাদের প্রভু কি করছে। আমি তোমাদের বন্ধু বলেছি, কারণ আমার পিতার কাছে যা শুনেছি, সবই তোমাদের প্রচার করছি।16 তোমরা আমাকে মনোনীত কর নি, কিন্তু আমিই তোমাদের মনোনীত করেছি এবং তোমাদের যাওয়ার জন্য তোমাদের নিয়োগ করেছি এবং ফল বহন কর এবং তোমাদের ফল যেন থাকে। তোমরা আমার নামে পিতার কাছে যা কিছু চাইবে, তিনি তোমাদের তাই দেবেন।17 এই আদেশ আমি তোমাদের দিচ্ছি, যে তোমরা একে অন্যকে ভালবাসো।জগত শিষ্যদের ঘৃণা করে।18 জগত যদি তোমাদের ঘৃণা করে, জেন যে এটা তোমাদের ঘৃণা করার আগে আমাকে ঘৃণা করেছে।19 তোমরা যদি এই জগতের হতে, তবে জগত তোমাদের নিজের মত ভালবাসত; কিন্তু কারণ তোমরা জগতের নও এবং কারণ আমি তোমাদের জগতের বাইরে থেকে মনোনীত করেছি, এই জন্য জগত তোমাদের ঘৃণা করে।20 মনে রেখো আমি তোমাদের যা বলেছি, একজন দাস তার নিজের প্রভুর থেকে মহৎ নয়। যদিও তারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে, তারা তোমাদেরও কষ্ট দেবে; তারা যদি আমার কথা রাখত, তারা তোমাদের কথাও রাখত।21 তারা আমার নামের জন্য তোমাদের উপর এই সব করবে, কারণ তারা জানে না কে আমাকে পাঠিয়েছেন।22 আমি যদি না আসতাম এবং তাদের কাছে কথা না বলতাম, তবে তাদের পাপ হত না; কিন্তু এখন তাদের পাপ ঢাকবার কোনো উপায় নেই।23 যে আমাকে ঘৃণা করে, সে আমার পিতাকেও ঘৃণা করে।24 যদি আমি তাদের মধ্যে কাজ না করতাম যা অন্য কেউ করে নি, তবে তারা পাপ করত না। কিন্তু এখন তারা আমাকে এবং আমার পিতা উভয়ের আচার্য্য কাজ দেখেছে এবং ঘৃণা করেছে।25 এটা ঘটেছে যে তাদের নিয়মে লেখা এই কথা পূর্ণ হয়েছে: “তারা কোনো কারণ ছাড়া আমাকে ঘৃণা করেছে।”26 যখন সহায়ক এসেছে, যাকে আমি পিতার কাছ থেকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি, তিনি হলেন সত্যের আত্মা, যিনি পিতার কাছ থেকে এসেছেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন।27 তোমরাও সাক্ষ্য বহন করবে কারণ তোমরা প্রথম থেকে আমার সঙ্গে আছ।

জন 15

16 আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি যেন তোমরা বাধা না পাও।2 তারা তোমাদের সমাজঘর থেকে বের করে দেবে; সম্ভবত, দিন আসছে, যখন যে কেউ তোমাদের হত্যা করে তোমরা মনে করবে যে সে ঈশ্বরের জন্য সেবা কাজ করেছে।3 তারা এই সব করবে কারণ তারা পিতাকে অথবা আমাকে জানে না।4 কিন্তু যখন দিন আসবে, যেন তাদের তোমরা মনে করতে পার যে, আমি তোমাদের এই সবের বিষয় বলেছি, সেই জন্য আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি। আমি প্রথম থেকে তোমাদের এই সব বিষয় বলিনি, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম।পবিত্র আত্মার কাজ।5 তাসত্ত্বেও, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন এখন আমি তাঁর কাছে যাচ্ছি; যদিও তোমাদের মধ্যে কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা কর নি, “আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”6 কারণ আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি বলে তোমাদের হৃদয় দুঃখে পূর্ণ হয়েছে।7 তথাপি, আমি তোমাদের সত্যি বলছি: আমার চলে যাওয়া তোমাদের জন্য ভাল; যদি আমি না যাই, সহায়ক তোমাদের কাছে আসবেন না; কিন্তু আমি যদি যাই, তবে তোমাদের কাছে তাঁকে পাঠিয়ে দেব।8 যখন তিনি আসবেন, সাহায্যকারী জগতকে অপরাধী করবে পাপের বিষয়ে, ন্যায়পরায়নতা বিষয়ে এবং বিচারের বিষয়ে,9 পাপের বিষয়ে, কারণ তারা আমাকে বিশ্বাস করে না;10 ন্যায়পরায়নতা বিষয়ে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি এবং তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না;11 এবং বিচারের বিষয়ে, কারণ এ জগতের শাসনকর্ত্তা বিচারিত হয়েছেন।12 তোমাদের বলবার আমার অনেক কিছু আছে, কিন্তু তোমরা এখন তাদের বুঝতে পারবে না।13 তথাপি, তিনি সত্যের আত্মা, যখন আসবেন তিনি তোমাদের সব সত্যের উপদেশ দেবেন; তিনি নিজের থেকে কথা বলবেন না, কিন্তু তিনি যা কিছু শোনেন সেগুলোই বলবেন; এবং যে সব ঘটনা আসছে তিনি সে সব বিষয়ে তোমাদের কাছে ঘোষণা করবেন।14 তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন, কারণ আমার যা কিছু আছে, সে সব তিনি নিয়ে তোমাদের কাছে ঘোষণা করবেন।15 পিতার যা কিছু আছে সে সবই আমার; তা সত্বেও আমি বলছি যে, আত্মা আমার কাছে যা কিছু আছে, সে সব নিয়ে তোমাদের কাছে ঘোষণা করবেন।16 কিছু দিন পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; আবার কিছু দিন পরে, তোমরা আমাকে দেখতে পাবে।শিষ্যদের দুঃখ আনন্দে পরিবর্তন।17 তারপর তাঁর কিছু শিষ্য নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, তিনি আমাদের একি বলছেন, কিছু কাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না, এবং আবার, “কিছু কাল পরে আবার, তোমরা আমাকে দেখতে পাবে,” এবং, “কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি?”18 অতএব তারা বলল, “এটা কি যা তিনি বলছেন, কিছু কাল ?, আমরা কিছু বুঝতে পারছি না তিনি কি বলছেন।”19 যীশু দেখলেন যে তাঁরা তাঁকে আগ্রহের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করতে চাইছেন এবং তিনি তাঁদের বললেন, আমি যা বলেছি, তোমরা কি এটা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছ, যে আমি কি বলেছি, “কিছু কালের মধ্যে, তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; আবার কিছু কাল পরে, আমাকে দেখতে পাবে?”20 সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা কাঁদবে এবং বিলাপ করবে, কিন্তু জগত আনন্দ করবে; তোমরা দুঃখার্ত হবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে।21 একজন স্ত্রীলোক দুঃখ পায় যখন তার প্রসব বেদনা হয় কারণ তার প্রসব কাল এসে গেছে; কিন্তু যখন সে সন্তান প্রসব করে, সে আর তার ব্যাথার কথা কখনো মনে করে না কারণ জগতে একটি শিশু জন্মালো এটাই তার আনন্দ।22 তোমরাও, তোমরা এখনও দুঃখ পাচ্ছ, কিন্তু আমি তোমাদের আবার দেখব; এবং তোমাদের হৃদয় আনন্দিত হবে এবং কেউ তোমাদের কাছ থেকে সেই আনন্দ নিতে পারবে না।23 ওই দিনের তোমরা আমাকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে না। সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদের বলছি, যদি তোমরা পিতার কাছে কিছু চাও, তিনি আমার নামে তোমাদের তা দেবেন।24 এখন পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু চাওনি; চাও এবং তোমরা গ্রহণ করবে সুতরাং তোমরা আনন্দে পূর্ণ হবে।25 আমি অস্পষ্ট ভাষায় এই সব বিষয় তোমাদের বললাম, কিন্তু দিন আসছে, যখন আমি তোমাদের আর অস্পষ্ট ভাষায় কথা বলব না, কিন্তু পরিবর্তে পিতার বিষয় তোমাদের সোজা ভাবে বলব।26 ওই দিন তোমরা আমার নামেই চাইবে এবং আমি তোমাদের বলব না যে, আমি পিতার কাছে তোমাদের জন্য প্রার্থনা করব;27 কারণ পিতা নিজেই তোমাদের ভালবাসেন, কারণ তোমরা আমাকে ভালবেসেছ এবং কারণ তোমরা বিশ্বাস করেছ যে আমি পিতার কাছ থেকে এসেছি।28 আমি পিতার কাছ থেকে এসেছি এবং জগতে এসেছি; আবার একবার, আমি জগত ত্যাগ করছি এবং পিতার কাছে যাচ্ছি।29 তাঁর শিষ্যরা বললেন, দেখুন, এখন আপনি সোজা ভাবে কথা বলছেন, আপনি অস্পষ্ট ভাষায় কথা বলছেন না।30 এখন আমরা জানি যে আপনি সব কিছুই জানেন এবং আপনি দরকার মনে করেন না যে কেউ আপনাকে কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। কারণ এই, আমরা বিশ্বাস করি যে, আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন।31 যীশু তাঁদের উত্তর দিলেন, “তোমরা এখন বিশ্বাস করছ?”32 দেখ, দিন এসেছে, হ্যাঁ, সম্ভবত এসেছে, যখন তোমরা ছড়িয়ে পড়বে, প্রত্যেকে নিজের জায়গায় যাবে এবং আমাকে একা রেখে যাবে। তথাপি আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন।33 তোমাদের এই সব বললাম, “যেন তোমরা আমাতে শান্তিতে থাক। জগতে তোমরা কষ্ট পাবে, কিন্তু সাহস কর, আমি জগতকে জয় করেছি।”

জন 16

12 The vine is withered , and the fig-tree languisheth; the pomegranate-tree, the palm-tree also , and the apple-tree, even all the trees of the field are withered : for joy is withered away from the sons of men .

জোয়েল 1:12

9 “আমি শস্যে বিনাশক ও ছত্রাক জাতীয় রোগ দিয়ে তোমাদের আঘাত করেছি। তোমাদের অনেক বাগান, তোমাদের আঙ্গুরের বাগান, তোমাদের ডুমুর গাছ এবং তোমাদের জিতবৃক্ষ, পঙ্গপাল সব খেয়ে নিল। তবুও তোমরা আমার কাছে ফিরে এলে না।” এই হল সদাপ্রভুর ঘোষণা।

আমোস 4: 9

19 গোলায় কি কিছু বীজ পড়ে আছে? আর দ্রাক্ষালতা, ডুমুর, ডালিম এবং জিতবৃক্ষও ফল উত্পন্ন করে নি৷ কিন্তু আজ থেকে আমি আশীর্বাদ করব৷

হাগই 2:19

4 আকাশের সব তারাগুলো ফ্যাকাশে হয়ে যাবে এবং আকাশ গোটানো কাগজের মত জড়িয়ে যাবে। যেমন আঙ্গুর লতার পাতা ফ্যাকাশে হয় এবং ডুমুর গাছের ডুমুর পেকে যায়।

যিশাইয় 34: 4

13 আমি তাদের সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলব, সদাপ্রভু বলেন যখন আমি সেগুলোকে সংগ্রহ করব । আঙ্গুর লতায় আঙ্গুর থাকবে না, কিংবা ডুমুর গাছে ডুমুর থাকবে না। পাতা শুকিয়ে যাবে এবং আমি তাদের যা দিয়েছি তাও চলে যাবে।

যিরমিয় 8:13

আকাশমন্ডল এবং পৃথ্বীর-সৃষ্টির বিবরণ।

1 আদিতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করলেন।2 পৃথিবী বিন্যাস বিহীন ও শূন্য ছিল এবং অন্ধকার জলরাশির উপরে ছিল, আর ঈশ্বরের আত্মা জলের উপরে চলাচল করছিলেন।3 পরে ঈশ্বর বললেন, আলো হোক; তাতে আলো হল।4 তখন ঈশ্বর আলো উত্তম দেখলেন এবং ঈশ্বর আলো ও অন্ধকার আলাদা করলেন।5 আর ঈশ্বর আলোর নাম “দিন” ও অন্ধকারের নাম “রাত” রাখলেন। সন্ধ্যা ও সকাল হলে প্রথম দিন হল।6 পরে ঈশ্বর বললেন, “জলের মধ্যে আকাশ (বায়ুমণ্ডল) হোক ও জলকে দুই ভাগে আলাদা করুক।”7 ঈশ্বর এই ভাবে বায়ুমণ্ডল করে আকাশের উপরের জল থেকে নীচের জল পৃথক করলেন; তাতে সেরকম হল।8 পরে ঈশ্বর আকাশের নাম আকাশমণ্ডল রাখলেন। আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে দ্বিতীয় দিন হল।9 পরে ঈশ্বর বললেন, “আকাশমণ্ডলের নীচে অবস্থিত সমস্ত জল এক জায়গায় জমা হোক ও স্থল প্রকাশিত হোক,” তাতে সেরকম হল।10 তখন ঈশ্বর শুকনো জায়গার নাম ভূমি ও জলরাশির নাম সমুদ্র রাখলেন; আর ঈশ্বর দেখলেন যে, তা উত্তম।11 পরে ঈশ্বর বললেন, “ভূমি ঘাস, বীজ উত্পন্নকারী ওষধি ও সবীজ গাছপালা তাদের জাতি অনুযায়ী ফলের উৎপাদক ফলের গাছ, ভূমির উপরে উৎপন্ন করুক,” তাতে সেরকম হল।12 ফলে ভূমি ঘাস, তাদের জাতি অনুযায়ী বীজ উত্পন্নকারী ওষধি, ও তাদের জাতি অনুযায়ী সবীজ ফলের উৎপাদক গাছ, উৎপন্ন করল; আর ঈশ্বর দেখলেন যে, সে সকল ভালো।13 আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে তৃতীয় দিন হল।14 পরে ঈশ্বর বললেন, “রাত থেকে দিন কে আলাদা করার জন্য আকাশমণ্ডলের বিতানে নক্ষত্র হোক এবং তারা চিহ্নের মতো হোক, ঋতুর জন্য, রাত এবং সময়ের ও বছরের জন্য হোক;15 এবং পৃথিবীতে আলো দেবার জন্য দীপ বলে আকাশ (বায়ুমণ্ডল) থাকুক,” তাতে সেরকম হল।16 ঈশ্বর সময়ের উপরে কর্তৃত্ব করতে এক মহাজ্যোতি ও রাতের উপরে কর্তৃত্ব করতে তার থেকেও ছোট এক জ্যোতি, এই দুটি বড় জ্যোতি এবং সমস্ত নক্ষত্র সৃষ্টি করলেন।17 ঈশ্বর পৃথিবীতে আলো দেবার জন্য তাদেরকে আকাশে স্থাপন করলেন এবং18 দিন ও রাতের উপরে কর্তৃত্ব করার জন্য এবং আলো থেকে অন্ধকার আলাদা করার জন্য ঈশ্বর ঐ জ্যোতিগুলিকে আকাশে স্থাপন করলেন এবং ঈশ্বর দেখলেন যে, সে সব উত্তম।19 আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে চতুর্থ দিন হল।20 পরে ঈশ্বর বললেন, “জল নানাজাতীয় জলজ প্রাণীতে প্রাণীময় হোক এবং ভূমির উপরে আকাশে পাখিরা উড়ুক।”21 তখন ঈশ্বর বৃহৎ জলজ প্রাণীদের ও যে নানাজাতীয় জলজ প্রাণীতে জল প্রাণীময় আছে, সে সবের এবং নানাজাতীয় পাখি সৃষ্টি করলেন। পরে ঈশ্বর দেখলেন যে সে সব উত্তম।22 আর ঈশ্বর সে সকলকে আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, সমুদ্রের জল পরিপূর্ণ কর এবং পৃথিবীতে পাখিদের বৃদ্ধি হোক।”23 আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে পঞ্চম দিন হল।24 পরে ঈশ্বর বললেন, “ভূমি নানাজাতীয় প্রাণীতে, অর্থাৎ তাদের জাতি অনুযায়ী পশুপাল, সরীসৃপ ও বন্য পশু সৃষ্টি করুক; তাতে সেরকম হল।”25 ফলে ঈশ্বর নিজের নিজের জাতি অনুযায়ী বন্য পশু ও নিজের নিজের জাতি অনুযায়ী পশুপাল ও নিজের নিজের জাতি অনুযায়ী যাবতীয় ভূচর সরীসৃপ সৃষ্টি করলেন; আর ঈশ্বর দেখলেন যে, সে সব উত্তম।26 পরে ঈশ্বর বললেন, “আমরা আমাদের প্রতিমূর্ত্তিতে, আমাদের সঙ্গে মিল রেখে মানুষ সৃষ্টি করি; আর তারা সমুদ্রের মাছদের ওপরে, আকাশের পাখিদের ওপরে, পশুদের ওপরে, সমস্ত পৃথিবীর ওপরে ও ভূমিতে চলাচলকারী যাবতীয় সরীসৃপের ওপরে কর্তৃত্ব করুক।”27 পরে ঈশ্বর নিজের প্রতিমূর্ত্তিতে মানুষকে সৃষ্টি করলেন; ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতেই তাকে সৃষ্টি করলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করে তাদেরকে সৃষ্টি করলেন।28 পরে ঈশ্বর তাদেরকে আশীর্বাদ করলেন; ঈশ্বর বললেন, “তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ ও কর্তৃত্ব কর, আর সমুদ্রের মাছদের ওপরে, আকাশের পাখিদের ওপরে এবং ভূমিতে গমনশীল যাবতীয় জীবজন্তুর ওপরে কর্তৃত্ব কর।”29 ঈশ্বর আরও বললেন, “দেখ, আমি সমস্ত পৃথিবীতে অবস্থিত যাবতীয় বীজৎপাদক ওষধি ও যাবতীয় সবীজ ফলদায়ী বৃক্ষ তোমাদেরকে দিলাম, তা তোমাদের খাদ্য হবে।”30 আর ভূমিতে চরাচর যাবতীয় পশু ও আকাশের যাবতীয় পাখি ও ভূমিতে বুকে হেঁটে চলা যাবতীয় কীট, এই সব প্রাণীর আহারের জন্য সবুজ গাছপালা সকল দিলাম। তাতে সেরকম হল।31 পরে ঈশ্বর নিজের তৈরী সব জিনিসের প্রতি দেখলেন, আর দেখলেন, সে সবই খুবই ভালো। আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে ষষ্ঠ দিন হল।

জেনেসিস 1

2 এই ভাবে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে অবস্থিত স ব জিনিস তৈরী করা শেষ হল।2 পরে সপ্তম দিনের ঈশ্বর তাঁর কাজকে শেষ করলেন, সেই সপ্তম দিনের নিজের করা সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন।3 আর ঈশ্বর সেই সপ্তম দিন কে আশীর্বাদ করে পবিত্র করলেন, কারণ সেই দিনের ঈশ্বর নিজের সৃষ্টি ও তৈরী করা সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন।আদম এবং ঈভ।4 সৃষ্টিকালে যে দিন সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল সৃষ্টি করলেন, তখনকার আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টির বৃত্তান্ত এই।5 সেই দিনের পৃথিবীর ভূমিতে কোন ফসল উত্পন্ন হত না, আর ভূমিতে কোন ওষধি উৎপন্ন হত না, কারণ সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবীতে বৃষ্টি বর্ষণ করেননি, আর ভূমিতে কৃষিকাজ করতে মানুষ ছিল না।6 আর পৃথিবী থেকে কুয়াশা ঝর্ণা উঠে গিয়ে সমস্ত পৃথিবীকে জলসিক্ত করল।7 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর মৃত্তিকার ধূলোতে আদমকে [অর্থাৎ মানুষকে] তৈরী করলেন এবং তার নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন; তাতে মানুষ সজীব প্রাণী হল।8 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর পূর্বদিকে, এদনে, এক বাগান তৈরী করলেন এবং সেই জায়গায় নিজের জন্য ঐ মানুষকে রাখলেন।9 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর ভূমি থেকে সর্বজাতীয় সুদৃশ্য ও সুখাদ্য-দায়ক গাছ এবং সেই বাগানের মাঝখানে জীবনগাছ ও সদসদ-জ্ঞানদায়ক গাছ সৃষ্টি করলেন।10 আর বাগানে জল সেচনের জন্য এদন থেকে এক নদী বের হল, ওটা সেখান থেকে চারটি মুখে ভাগ হল।11 প্রথম নদীর নাম পিশোন; এটা সমস্ত হবীলা দেশের চারপাশ থেকে বয়ে যায়,12 সেখানে সোনা পাওয়া যায়, আর সেই দেশের সোনা উত্তম এবং সেই জায়গায় মো তী ও গোমেদকমনি জন্মে।13 দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন; এটা সমস্ত ইথি ওপিয়া দেশ বেষ্টন করে।14 তৃতীয় নদীর নাম হিদ্দেকল, এটা অশূর দেশের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে। চতুর্থ নদী ফরাৎ।15 পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে নিয়ে এদনের বাগানে কৃষিকাজ ও দেখাশোনার জন্য সেখানে রাখলেন।16 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে এই আদেশ দিলেন, “তুমি এই বাগানের সব গাছের ফল নিজের ইচ্ছায় খাও;17 কিন্তু সদসদ-জ্ঞানদায়ক যে গাছ, তার ফল খেও না, কারণ যে দিন তার ফল খাবে, সেই দিন মরবেই মরবে।”18 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের একা থাকা ভাল নয়, আমি তার জন্য তার মতো সহকারিণী তৈরী করি।”19 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর মাটি থেকে সকল বন্য পশু ও আকাশের সব পাখি তৈরী করলেন; পরে আদম তাদের কি কি নাম রাখবেন, তা জানতে সেই সবাইকে তাঁর কাছে আনলেন, তাতে আদম যে সজীব প্রাণীর যে নাম রাখলেন, তার সেই নাম হল।20 আ দম যাবতীয় পশুপাল, পাখির ও যাবতীয় বন্য পশুর নাম রাখলেন, কিন্তু মানুষের জন্য তাঁর মতো সহকারিণী পাওয়া গেল না।21 পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে গভীর ঘুমে মগ্ন করলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন; আর তিনি তাঁর একখানা পাঁজর নিয়ে মাংস দিয়ে সেই স্থান পূরণ করলেন।22 সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম থেকে পাওয়া সেই পাঁজরে এক স্ত্রী সৃষ্টি করলেন ও তাঁকে আদমের কাছে আনলেন।23 তখন আদম বললেন, “এবার [হয়েছে]; ইনি আমার অস্থির অস্থি ও মাংসের মাংস; এর নাম নারী হবে, কারণ ইনি মানুষ থেকে গৃহীত হয়েছেন।”24 এই কারণ মানুষ নিজের বাবা মাকে ত্যাগ করে নিজের স্ত্রীতে আসক্ত হবে এবং তারা একাঙ্গ হবে।25 ঐ দিনের আদম ও তাঁর স্ত্রী উভয়ে উলঙ্গ থাকতেন, আর তাঁদের লজ্জা বোধ ছিল না।

জেনেসিস 2

প্রথম নিস্তারপর্ব্ব স্থাপন।

12 মিশর দেশে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,2 তোমাদের জন্য এই মাস হবে মাসগুলির শুরু; আর মাসটি বছরের সব মাসের মধ্যে প্রথম হবে।3 সমস্ত ইস্রায়েল মণ্ডলীকে এই কথা বল, তোমরা এই মাসের দশম দিনের তোমাদের বাবার বংশ অনুসারে প্রত্যেক পরিবার এক এক বাড়ির জন্য এক একটি ভেড়ার বাচ্চা নেবে।4 আর ভেড়ার বাচ্চা খাওয়ার জন্য যদি কারও পরিজন কম হয়, তবে সে ও তার পাশের বাড়ির প্রতিবেশীর লোকসংখ্যা অনুসারে একটি ভেড়ার বাচ্চা নেবে। তোমরা এক এক জনের খাওয়ার ক্ষমতা অনুসারে ভেড়ার বাচ্চা নেবে।5 তোমাদের সেই ভেড়ার বাচ্চাটি নির্দোষ ও এক বছরের পুরুষ বাচ্চা শাবক হবে; তোমরা ভেড়ার পালের কিংবা ছাগপালের মধ্যে থেকে তা নেবে;6 আর এই মাসের চৌদ্দ দিন পর্যন্ত রাখবে; পরে ইস্রায়েলের সমস্ত সমাজ সন্ধ্যাবেলায় সেই ভেড়ার বাচ্চাটি হত্যা করবে।7 আর তারা তার কিছুটা রক্ত নেবে এবং যে যে বাড়ির মধ্যে ভেড়ার বাচ্চা খাবে, সেই বাড়ির দরজার চৌকাঠে ও মাথার ওপর তা লাগিয়ে দেবে।8 পরে সেই রাতে তার মাংস খাবে; আগুনে পুড়িয়ে খামির বিহীন রুটি ও তেতো শাকের সঙ্গে তা খাবে।9 তোমরা তার মাংস কাঁচা কিংবা জলে সেদ্ধ করে খেও না, কিন্তু তার মাথা, পা ও ভিতরের অংশ আগুনে পুড়িও।10 আর সকাল পর্যন্ত তার কিছুই রেখো না; কিন্তু সকাল পর্যন্ত যা বাকি থাকে, তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলো।11 আর তোমরা এই ভাবে তা খাবে; কোমর বাঁধবে, পায়ে জুতো পড়বে, হাতে লাঠি নেবে ও তাড়াতাড়ি খেয়ে নেবে; এটা সদাপ্রভুর নিস্তা রপর্ব।12 কারণ সেই রাতে আমি মিশর দেশের মধ্য দিয়ে যাব এবং মিশর দেশের মানুষের ও পশুর যাবতীয় প্রথমজাতকে আঘাত করব এবং মিশরের সমস্ত দেব তাদের উপরে শাস্তি নিয়ে আসব; আমিই সদাপ্রভু।13 সুতরাং তোমরা যে যে বাড়িতে থাক, তোমাদের পক্ষে ঐ রক্ত চিহ্ন হিসাবে সেই সেই বাড়ির উপরে থাকবে; তাতে আমি যখন মিশর দেশকে আঘাত করব, তখন সেই রক্ত দেখলে তোমাদেরকে ছেড়ে এগিয়ে যাব, মহামারীর আঘাত তোমাদের উপরে পড়বে না।14 আর এই দিন তোমাদের স্মরণীয় হবে এবং তোমরা এই দিন কে সদাপ্রভুর উৎসব বলে পালন করবে; বংশপরম্পরার চিরকালীন নিয়ম অনুসারে এই উৎসব পালন করবে।খামির বিহীন পর্ব15 তোমরা সাত দিন খামির বিহীন রুটি খাবে; প্রথম দিনের ই নিজের নিজের বাড়ি থেকে খামির দূর করবে, কারণ যে কেউ প্রথম দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত খামিরযুক্ত খাবার খাবে, সেই প্রাণী ইস্রায়েল থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।16 আর প্রথম দিনের তোমাদের পবিত্র সভা হবে এবং সপ্তম দিনের ও তোমাদের পবিত্র সভা হবে; সেই দুই দিন প্রত্যেক প্রাণীর খাদ্য তৈরী ছাড়া অন্য কোন কাজ করবে না, শুধুমাত্র সেই কাজ করতে পারবে।17 এই ভাবে তোমরা খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করবে, কারণ এই দিনের আমি তোমাদের বাহিনীদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে আনলাম; তাই তোমরা বংশপরম্পরার চিরস্থায়ী বিধি অনুসারে এই দিন পালন করবে।18 তোমরা প্রথম মাসের চৌদ্দতম দিনের র সন্ধ্যাবেলা থেকে একুশতম দিনের র সন্ধ্যাবেলা পর্যন্ত খামির বিহীন রুটি খেও।19 সাত দিন তোমাদের বাড়িতে যেন খামির না থাকে; কারণ কি প্রবাসী কি দেশের, যে কোন প্রাণী খামির মেশানো দ্রব্য খাবে, সে ইস্রায়েল মণ্ডলী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।20 তোমরা খামিরযুক্ত কোনো জিনিস খেও না; তোমরা তোমাদের সমস্ত বাসস্থানে খামির বিহীন রুটি খেও।21 তখন মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনদেরকে ডেকে বললেন, তোমরা নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে এক একটি ভেড়ার বাচ্চা বের করে নাও, নিস্তারপর্ব্বের বলি হত্যা কর।22 আর এক গুচ্ছ এসোব নিয়ে গামলায় থাকা রক্তে ডুবিয়ে দরজার মাথায় ও দুই চৌকাঠে গামলায় থাকা রক্তের কিছুটা লাগিয়ে দেবে এবং সকাল পর্যন্ত তোমরা কেউই বাড়ির দরজার বাইরে যাবে না।23 কারণ সদাপ্রভু মিশরীয়দেরকে আঘাত করার জন্য তোমাদের কাছ দিয়ে যাবেন, তাতে দরজার মাথায় ও দুই চৌকাঠে সেই রক্ত দেখলে সদাপ্রভু সেই দরজা ছেড়ে আগে যাবেন, তোমাদের বাড়িতে বিনাশকারীকে প্রবেশ করে আঘাত করতে দেবেন না।24 আর তোমরা ও যুগ যুগ ধরে তোমাদের সন্তানেরা নিয়ম হিসাবে এই রীতি পালন করবে।25 আর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমাদেরকে যে দেশ দেবেন, সেই দেশে যখন প্রবেশ করবে, তখনও এই আরাধনার আয়োজন করবে।26 আর তোমাদের সন্তানরা যখন তোমাদেরকে বলবে, তোমাদের এই আরাধনার অর্থ কি?27 তোমরা বলবে, এটা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব্বের যজ্ঞ, কারণ মিশরীয়দেরকে আঘাত করার দিনের তিনি মিশরে ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত বাড়ি ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন, আমাদের বাড়ি রক্ষা করেছিলেন। তখন লোকেরা মাথা নিচু করে আরাধনা করল।28 পরে ইস্রায়েল সন্তানেরা গিয়ে, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যেরকম আদেশ দিয়েছিলেন, সেই রকম করল।29 পরে মাঝরাতে এই ঘটনা ঘটল, সদাপ্রভু সিংহাসনে বসা ফরৌণের প্রথমজাত সন্তান থেকে কারাগারে থাকা বন্দির প্রথমজাত সন্তান পর্যন্ত মিশর দেশের সমস্ত প্রথমজাত সন্তানকে ও পশুদের প্রথমজাত শাবকদেরকে আঘাত করলেন।30 তাতে ফরৌণ ও তাঁর দাসেরা এবং সমস্ত মিশরীয় লোক রাতে উঠল এবং মিশরে মহাকোলাহল হল; কারণ যে ঘরে কেউ মরে নি, এমন ঘরই ছিল না।

যাত্রা 12