Skip to content

কিভাবে যীশু আশ্রমদের ভার গ্রহণ করেছিলেন

  • by

একটি ধার্মিক জীবন চারটি আশ্রমে (আশ্রম সমূহ) বিভক্ত I আশ্রম/আশ্রম সমূহ হ’ল লক্ষ্য, অবদান এবং কার্যকলাপ যা একজনের জীবনের পর্যায়ের জন্য উপযুক্ত I পর্যায়গুলোর মধ্যে জীবনের বিভাগ আশ্রম ধর্ম, চারটি প্রগতিশীল পর্যায়ের মধ্য দিয়ে দেহ, মন এবং আবেগ সমূহের সঙ্গে মিল খায় I এটি হাজার হাজার বছর আগে উন্নত হয়েছিল এবং ধর্ম শাস্ত্র রূপে পরিচিত শাস্ত্রবাক্যের মধ্যে বিস্তৃতভাবে বর্ণিত হয়েছিল লক্ষনীয় করতে যে যুবক থেকে প্রাপ্তবয়স্ক, বয়স্ক ও বৃদ্ধ বয়সে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে আমাদের কর্তব্য সমূহ ভিন্ন ভিন্ন হয় I         

সর্বোচ্চ ঈশ্বরের অবতার রূপে, যীশু, তাঁর জন্মের অল্পকাল পরে, আশ্রম ধর্ম আরম্ভ করেছিলেন I তিনি যেভাবে আরম্ভ করেছিলেন তা শিক্ষনীয় যেহেতু  তিনি একটি উদাহরণ প্রদান করেন অনুসরণ করতে যেন আমাদের আশ্রমের জন্য যথাযথভাবে জীবন যাপন করতে অন্বেষণ করি I আমরা ব্রহ্মচর্যের সাথে শুরু করি, যেখানে আমরা উপনয়ন এবং বিদ্যারম্ভর মতন ধারাবাহিকতার ক্রম  পাই I     

ব্রহ্মচার্য যীশু

ছাত্র আশ্রম, ব্রহ্মচর্য প্রথমে আসে I  এই সময়কালে ছাত্র কৌমার্যের মধ্যে বাস করে ভবিষ্যতের সেবার জন্য শিখতে এবং নিজেকে প্রস্তুত করতে যা পরে  আশ্রমের প্রয়োজন হয় I যীশু আজকের উপনয়নের অনুরূপ একটি হিব্রু দীক্ষা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, যদিও কিছুটা আলাদা, ব্রহ্মচর্যে প্রবেশ করে I সুসমাচারগুলো তার উপনযনকে এইভাবে লিপিবদ্ধ করে I  

যীশুর উপনয়ন

22পরে যখন মোশির ব্যবস্থানুসারে তাঁহাদের শুচি হইবার কাল সম্পূর্ণ হইল, তখন তাঁহারা তাঁহাকে যিরূশালেমে লইয়া গেলেন, যেন তাঁহাকে প্রভুর নিকটে উপস্থিত করেন, 23যেমন প্রভুর ব্যবস্থায় লেখা আছে, ‘গর্ভ উন্মোচক প্রত্যেক পুরুষ সন্তান প্রভুর উদ্দেশে পবিত্র বলিয়া আখ্যাত হইবে’; 24আর যেন বলি উৎসর্গ করেন, যেমন প্রভুর ব্যবস্থায় উক্ত হইয়াছে, ‘এক যোড়া ঘুঘু কিম্বা দুই কপোতশাবক’।

২৫ আর দেখ, শিমিয়োন নামে এক ব্যক্তি যিরূশালেমে ছিলেন, তিনি ধার্ম্মিক ও ভক্ত, ইস্রায়েলের সান্ত্বনার অপেক্ষাতে থাকিতেন, এবং পবিত্র আত্মা তাঁহার উপরে ছিলেন। 
২৬আর পবিত্র আত্মা দ্বারা তাঁহার কাছে প্রকাশিত হইয়াছিল যে, তিনি প্রভুর খ্রীষ্টকে দেখিতে না পাইলে মৃত্যু দেখিবেন না। 
২৭ তিনি সেই আত্মার আবেশে ধর্ম্মধামে আসিলেন, এবং শিশু যীশুর পিতামাতা যখন তাঁহার বিষয়ে ব্যবস্থার রীতি অনুযায়ী কার্য্য করিবার জন্য তাঁহাকে ভিতরে আনিলেন, 
২৮ তখন তিনি তাঁহাকে কোলে লইলেন, আর ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিলেন, ও কহিলেন,
২৯ হে স্বামিন্‌, এখন তুমি তোমার বাক্যানুসারে তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় করিতেছ,
৩০ কেননা আমার নয়নযুগল তোমার পরিত্রাণ দেখিতে পাইল,
৩১ যাহা তুমি সকল জাতির সম্মুখে প্রস্তুত করিয়াছ,
৩২ পরজাতিগণের প্রতি প্রকাশিত হইবার জ্যোতি,ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের গৌরব।
৩৩ তাঁহার বিষয়ে কথিত এই সকল কথায় তাঁহার পিতা ও মাতা আশ্চর্য্য জ্ঞান করিতে লাগিলেন। 
৩৪ আর শিমিয়োন তাঁহাদিগকে আশীর্ব্বাদ করিলেন, এবং তাঁহার মাতা মরিয়মকে কহিলেন, দেখ, ইনি ইস্রায়েলের মধ্যে অনেকের পতন ও উত্থানের নিমিত্ত, এবং যাহার বিরুদ্ধে কথা বলা যাইবে, এমন চিহ্ন হইবার নিমিত্ত স্থাপিত, 
৩৫—আর তোমার নিজের প্রাণও খড়্গে বিদ্ধ হইবে,— যেন অনেক হৃদয়ের চিন্তা প্রকাশিত হয়।
৩৬ আর হান্না নাম্নী এক ভাববাদিনী ছিলেন, তিনি পনূয়েলের কন্যা, আশের-বংশজাত; তাঁহার অনেক বয়স হইয়াছিল, তিনি কুমারী অবস্থার পর সাত বৎসর স্বামীর সহিত বাস করেন, 
৩৭ আর চৌরাশী বৎসর পর্য্যন্ত বিধবা হইয়া থাকেন, তিনি ধর্ম্মধাম হইতে প্রস্থান না করিয়া উপবাস ও প্রার্থনা সহকারে রাত দিন উপাসনা করিতেন। 
৩৮তিনি সেই দণ্ডে উপস্থিত হইয়া ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিলেন, এবং যত লোক যিরূশালেমের মুক্তির অপেক্ষা করিতেছিল, তাহাদিগকে যীশুর কথা বলিতে লাগিলেন।
৩৯ আর প্রভুর ব্যবস্থানুরূপ সমস্ত কার্য্য সাধন করিবার পর তাঁহারা গালীলে, তাঁহাদের নিজ নগর নাসরতে, ফিরিয়া গেলেন।
৪০ পরে বালকটী বাড়িয়া উঠিতে ও বলবান্‌ হইতে লাগিলেন, জ্ঞানে পূর্ণ হইতে থাকিলেন; আর ঈশ্বরের অনুগ্রহ তাঁহার উপরে ছিল।

লুক ২:২২-৪০

কিছু উপনয়ন অনুষ্ঠান সমূহের মধ্যে আজকের দিনে মন্দিরের মধ্যে একটি পাঁঠাকে উৎসর্গ করা হয় I এটি হিব্রু উপনয়ন অনুষ্ঠানগুলোতেও সাধারণ ছিল I  তবে মশির ব্যবস্থা দরিদ্র পরিবারদের ছাগলের পরিবর্তে একটি কপোত উৎসর্গ করতে অনুমতি দেয় I আমরা দেখি যে যীশুকে নম্রভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল যেহেতু তার মা-বাবার ছাগল উৎসর্গ করার ক্ষমতা ছিল না পরিবর্তে কপোত উৎসর্গ করেছিল I      

শিমোন, এক পবিত্র ঋষি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে যীশু ‘সমস্ত জাতি সমূহের’ জন্য, মানে সমস্ত ভাষা গোষ্ঠীর জন্য, ‘পরিত্রাণ’ এবং এক ‘জ্যোতি’ হবেন I আমরা পরে দেখি কিভাবে যীশু এটি করেন I   

তবে এই ভূমিকাকে পরিপূর্ণ করতে যীশুর জ্ঞান এবং অক্ষরের মধ্যে দীক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন ছিল I ঠিক কখন এই বিদ্যারম্ভ দীক্ষা তাঁর জীবনে ঘটেছিল নির্দিষ্ট করা নেই I তবে তার পরিবার কদর করেছিল এবং জ্ঞান, অক্ষর এবং শিক্ষার উপরে যে জোর দিয়েছিলেন তা পরিষ্কার হয় কেননা 12 বছর বয়সে তার জ্ঞানের অবস্থানের একটি আশু চিত্র দেওয়া হয় I এখানে নথিটি রয়েছে:

৪১ তাঁহার পিতামাতা প্রতিবৎসর নিস্তারপর্ব্বের সময়ে যিরূশালেমে যাইতেন। 
৪২ তাঁহার বারো বৎসর বয়স হইলে তাঁহারা পর্ব্বের রীতি অনুসারে যিরূশালেমে গেলেন; 
৪৩ এবং পর্ব্বের সময় সমাপ্ত করিয়া যখন ফিরিয়া আসিতেছিলেন, তখন বালক যীশু যিরূশালেমে রহিলেন; আর তাঁহার পিতামাতা তাহা জানিতেন না, 
৪৪ কিন্তু তিনি সহযাত্রীদের সঙ্গে আছেন, মনে করিয়া তাঁহারা এক দিনের পথ গেলেন; পরে জ্ঞাতি ও পরিচিত লোকদের মধ্যে তাঁহার অন্বেষণ করিতে লাগিলেন; 
৪৫ আর তাঁহাকে না পাইয়া তাঁহার অন্বেষণ করিতে করিতে যিরূশালেমে ফিরিয়া গেলেন। 
৪৬ তিন দিনের পর তাঁহারা তাঁহাকে ধর্ম্মধামে পাইলেন; তিনি গুরুদিগের মধ্যে বসিয়া তাঁহাদের কথা শুনিতেছিলেন ও তাঁহাদিগকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতেছিলেন; 
৪৭ আর যাহারা তাঁহার কথা শুনিতেছিল, তাহারা সকলে তাঁহার বুদ্ধি ও উত্তরে অতিশয় আশ্চর্য্য জ্ঞান করিল। 
৪৮ তাঁহাকে দেখিয়া তাঁহারা চমৎকৃত হইলেন, এবং তাঁহার মাতা তাঁহাকে কহিলেন, বৎস, আমাদের প্রতি এরূপ ব্যবহার কেন করিলে? দেখ, তোমার পিতা এবং আমি কাতর হইয়া তোমার অন্বেষণ করিতেছিলাম।
৪৯ তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, কেন আমার অন্বেষণ করিলে? আমার পিতার গৃহে আমাকে থাকিতেই হইবে, ইহা কি জানিতে না? 50কিন্তু তিনি তাঁহাদিগকে যে কথা বলিলেন, তাহা তাঁহারা বুঝিতে পারিলেন না।
৫১ পরে তিনি তাঁহাদের সঙ্গে নামিয়া নাসরতে চলিয়া গেলেন, ও তাঁহাদের বশীভূত থাকিলেন। আর তাঁহার মাতা সমস্ত কথা আপন হৃদয়ে রাখিলেন। 52পরে যীশু জ্ঞানে ও বয়সে এবং ঈশ্বরের ও মনুষ্যের নিকটে অনুগ্রহে বৃদ্ধি পাইতে থাকিলেন।

লুক ২:৪১-৫১

হিব্রু বেদের পরিপূর্ণতা

পরবর্তী সেবার প্রস্তুতি হিসাবে, যীশুর শৈশবকাল এবং বৃদ্ধিকে, ঋষি যিশাইয়র দ্বারা আগে থেকেই পরিলক্ষিত হয়েছিল যিনি লিখেছিলেন:

ঐতিহাসিক কালপঞ্জির অধ্যে যিশাইয় এবং অন্যান্য ঋষিগণ (ভাববাদীরা)

১ কিন্তু যে [দেশ] পূর্ব্বে যাতনাগ্রস্ত ছিল, তাহার তিমির আর থাকিবে না; তিনি পূর্ব্বকালে সবূলূন দেশ ও নপ্তালি দেশকে তুচ্ছাস্পদ করিয়াছিলেন, কিন্তু উত্তরকালে সমুদ্রের নিকটবর্ত্তী সেই পথ, যর্দ্দনের তীরস্থ প্রদেশ, জাতিগণের গালীলকে, গৌরবান্বিত করিয়াছেন।
২ যে জাতি অন্ধকারে ভ্রমণ করিত, তাহারা মহা-আলোক দেখিতে পাইয়াছে; যাহারা মৃত্যুচ্ছায়ার দেশে বাস করিত,তাহাদের উপরে আলোক উদিত হইয়াছে।
৩ তুমি সেই জাতির বৃদ্ধি করিয়াছ, তাহাদের আনন্দ বাড়াইয়াছ; তাহারা তোমার সাক্ষাতে শস্যচ্ছেদন সময়ের ন্যায় আহ্লাদ করে, যেমন লুট বিভাগ করিবার সময়ে লোকেরা উল্লাসিত হয়।
৪ কারণ তুমি তাহার ভারের যোঁয়ালি, তাহার স্কন্ধের বাঁক, তাহার উপদ্রবকারীর দণ্ড ভাঙ্গিয়া ফেলিয়াছ, যেমন মিদিয়নের দিনে করিয়াছিলে।
৫ বস্তুতঃ তুমুল যুদ্ধে সজ্জিত ব্যক্তির সমস্ত সজ্জা ও রক্তে লুণ্ঠিত বস্ত্র সকল জ্বলনীয় দ্রব্য হইবে, অগ্নির ভক্ষ্যস্বরূপ হইবে।
৬ কারণ একটী বালক আমাদের জন্য জন্মিয়াছেন, একটী পুত্র আমাদিগকে দত্ত হইয়াছে; আর তাঁহারই স্কন্ধের উপরে কর্ত্তৃত্বভার থাকিবে, এবং তাঁহার নাম হইবে—‘আশ্চর্য্য মন্ত্রী, বিক্রমশালী ঈশ্বর, সনাতন পিতা, শান্তিরাজ’।

”যিশাইয় ৯ :১-৬

যীশুর স্নান

ব্রহ্মচর্যের সমাপ্তি প্রায়শই স্নান বা সমাবর্তনের দ্বারা উদযাপিত হয় I এটি সাধারণতঃ শিক্ষক এবং অতিথি সমূহের উপস্থিতিতে একটি বিধিগত স্নানের দ্বারা চিহ্নিত হয় I যীশু বাপ্তিস্মদাতা যোহনের মাধ্যমে সমাবর্তন উদযাপিত  করেছিলেন, যিনি বাপ্তিস্ম নামক একটি বিধি অনুসারে লোকেদের নদীতে স্নান  করাতেন I মার্কের সুসমাচার (বাইবেলের চারটি সুসমাচার সমূহের মধ্যে একটি) যীশুর স্নান দিয়ে আরম্ভ হয়: 

শ্বর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের সুচনা:

১ যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের‍ আরম্ভ; তিনি ঈশ্বরের পুত্র। 
২ যিশাইয় ভাববাদীর গ্রন্থে যেমন লেখা আছে “দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি; সে তোমার পথ প্রস্তুত করিবে।
৩ প্রান্তরে এক জনের রব, সে ঘোষণা করিতেছে, তোমরা প্রভুর পথ প্রস্তুত কর, তাঁহার রাজপথ সকল সরল কর;”
৪ তদনুসারে যোহন উপস্থিত হইলেন, ও প্রান্তরে বাপ্তাইজ করিতে লাগিলেন, এবং পাপমোচনের জন্য মনপরিবর্ত্তনের বাপ্তিস্ম প্রচার করিতে লাগিলেন। 
৫ তাহাতে সমস্ত যিহূদিয়া দেশ ও যিরূশালেম-নিবাসী সকলে বাহির হইয়া তাঁহার নিকটে যাইতে লাগিল; আর আপন আপন পাপ স্বীকার করিয়া যর্দ্দন নদীতে তাঁহা দ্বারা বাপ্তাইজিত হইতে লাগিল।
৬ সেই যোহন উটের লোমের কাপড় পরিতেন, তাঁহার কটিদেশে চর্ম্মপটুকা ছিল, এবং তিনি পঙ্গপাল ও বনমধু ভোজন করিতেন। 
৭ তিনি প্রচার করিয়া বলিতেন, যিনি আমা অপেক্ষা শক্তিমান, তিনি আমার পশ্চাৎ আসিতেছেন; আমি হেঁট হইয়া তাঁহার পাদুকার বন্ধন খুলিবার যোগ্য নই। 
৮ আমি তোমাদিগকে জলে বাপ্তাইজ করিলাম, কিন্তু তিনি তোমাদিগকে পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজ করিবেন।
৯ সেই সময়ে যীশু গালীলের নাসরৎ হইতে আসিয়া যোহনের দ্বারা যর্দ্দনে বাপ্তাইজিত হইলেন। 
১০ আর তৎক্ষণাৎ জলের মধ্য হইতে উঠিবার সময়ে দেখিলেন, আকাশ দুইভাগ হইল, এবং আত্মা কপোতের ন্যায় তাঁহার উপরে নামিয়া আসিতেছেন।

মার্ক ১:১-১০

গৃহস্থী যীশু

সাধারণতঃ গৃহস্থ বা গৃহকর্তা, আশ্রম ব্রহ্মচর্য আশ্রমের পরে আসে, যদিও কতিপয় তপস্বী গৃহস্থ আশ্রমকে ছেড়ে দিয়ে সরাসরি (পরিত্যাগ) সন্যাসে চলে যান I যীশু কোনটাই করেন নি I তার অনন্য মিশনের কারণে তিনি পরবর্তী সময় পর্যন্ত গৃহস্থ স্থগিত রেখেছিলেন I পরবর্তী গৃহস্থ আশ্রমে তিনি এক বধু এবং সন্তানদের নেবেন তবে তা এক ভিন্ন প্রকৃতির I শারীরিক বিবাহ এবং সন্তানগণ তাঁর রহস্যময় বিবাহ এবং পরিবারের প্রতীকী I যেমন বাইবেল তার বধুর সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করে:

৭  আইস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, এবং তাঁহাকে গৌরব প্রদান করি, কারণ মেষশাবকের বিবাহ উপস্থিত হইল, এবং তাঁহার ভার্য্যা আপনাকে প্রস্তুত করিল।

প্রকাশিত বাক্য ১৯:৭

আব্রাহাম এবং মশির সাথে যীশুকেমেষ শাবক বলা হত I এই মেষ শাবক এক বধুকে বিবাহ করবে, তবে সে প্রস্তুত ছিল না যখন তিনি ব্রহ্মচর্য সমাপ্ত করেছিলেন I আসলে, তাকে প্রস্তুত করা তাঁর জীবনের মিশন ছিল I কেউ কেউ অনুমান করে যে গৃহস্থ স্থগিত করার কারণে, তিনি বিবাহের বিরুদ্ধে ছিলেন I তবে প্রথম যে কার্যকলাপে তিনি সন্ন্যাস হিসাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন তা একটি বিবাহ ছিল I    

বানপ্রস্থ রূপে যীশু

সন্তানদের জন্ম দিতে তাঁকে প্রথমে করতে হয়েছিল:

কেননা যাঁহার কারণ সকলই ও যাঁহার দ্বারা সকলই হইয়াছে, ইহা তাঁহার উপযুক্ত ছিল যে, তিনি অনেক পুত্রকে প্রতাপে আনয়ন সম্বন্ধে তাহাদের পরিত্রাণের আদিকর্ত্তাকে দুঃখভোগ দ্বারা সিদ্ধ করেন।

ইব্রীয় ২:১০

‘তাদের পরিত্রাণের পথিকৃত’ যীশুকে বোঝায়, এবং সন্তানদের পূর্বে তাঁকে ‘দুঃখভোগের’ মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল I সুতরাং, তাঁর বাপ্তিস্মের স্নানের পরে তিনি সরাসরিভাবে বানপ্রস্থে (বন-বাসী) গিয়েছিলেন যেখানে তিনি প্রান্তরের মধ্যে প্রলোভনের কষ্টভোগের মধ্যে ছিলেন, বিস্তারিত এখানে:  

সন্যাসী যীশু

প্রান্তরের মধ্যে বানপ্রস্থের অব্যবহিত পরে, যীশু সমস্ত শারীরিক বন্ধন পরিত্যাগ করলেন এবং একজন আশ্চর্যজনক শিক্ষক হিসাবে তাঁর জীবন শুরু করলেন I যীশুর সন্ন্যাস আশ্রম অত্যন্ত সু-পরিচিত I সুসমাচার সমূহ তাঁর সন্ন্যাসকে এইবাবে বর্ণনা করে:  

২৩ পরে যীশু সমুদয় গালীলে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন; তিনি লোকদের সমাজ-গৃহে সমাজ-গৃহে উপদেশ দিলেন, রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করিলেন, এবং লোকদের সর্ব্বপ্রকার রোগ ও সর্ব্বপ্রকার পীড়া ভাল করিলেন।

মথি ৪:২৩

এই সময়ে তিনি বেশিরভাগ গ্রাম থেকে গ্রাম ভ্রমণ করতেন, এমনকি তার নিজস্ব হিব্রু/যিহূদি লোকেদেরও বাইরে I তিনি তাঁর সন্যাস জীবনকে এইভাবে বর্ণনা করেছিলেন:

১৮ আর যীশু আপনার চারিদিকে বিস্তর লোক দেখিয়া পরপারে যাইতে আজ্ঞা করিলেন। 
১৯ তখন এক জন অধ্যাপক আসিয়া তাহাকে কহিলেন, হে গুরু, আপনি যে কোন স্থানে যাইবেন, আমি আপনার পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাইব।
২০ যীশু তাঁহাকে কহিলেন, শৃগালদের গর্ত্ত আছে, এবং আকাশের পক্ষিগণের বাসা আছে; কিন্তু মনুষ্যপুত্রের মস্তক রাখিবার স্থান নাই।

মথি ৮:১৮-২০

মনুষ্য পুত্র, তার থাকার কোনো জায়গা ছিল না, এবং যারা তাঁকে অনুসরণ করত তাদের একই সমান আশা করা উচিত I এছাড়াও সুসমাচারগুলো ব্যাখ্যা করে সন্ন্যাসের মধ্যে তাঁকে কিভাবে আর্থিকরূপে সাহায্য করা হত I   

১ ইহার পরেই তিনি ঘোষণা করিতে করিতে এবং ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করিতে করিতে নগরে নগরে ও গ্রামে গ্রামে ভ্রমণ করিলেন, আর তাঁহার সঙ্গে সেই বারো জন, 
২ এবং যাঁহারা দুষ্ট আত্মা কিম্বা রোগ হইতে মুক্তা হইয়াছিলেন, এমন কএকটী স্ত্রীলোক ছিলেন, মগ্দলীনী নাম্নী মরিয়ম, যাঁহা হইতে সাত ভূত বাহির হইয়াছিল, 
৩ যোহানা, যিনি হেরোদের বিষয়াধ্যক্ষ কূষের স্ত্রী, এবং শোশন্না ও অন্য অনেকগুলি স্ত্রীলোক ছিলেন; তাঁহারা আপন আপন সম্পত্তি হইতে তাঁহাদের পরিচর্য্যা করিতেন।

লুক ৮:১-

সন্ন্যাস সাধারণতঃ একজন কর্মীর সাথে ঘুরে বেড়ানোর দ্বারা চিহ্নিত করা   হয় I যীশু তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিয়েছেলেন যখন তিনি তাদেরকে তাঁকে অনুসরণ করতে গাইড করছিলেন I এইগুলো ছিল তাঁর নির্দেশ সমূহ:  

৬ আর তিনি তাহাদের অবিশ্বাস প্রযুক্ত আশ্চর্য্য জ্ঞান করিলেন। পরে তিনি চারিদিকে গ্রামে গ্রামে ভ্রমণ করিয়া উপদেশ দিলেন।
৭ আর তিনি সেই বারো জনকে ডাকিয়া দুই দুই জন করিয়া তাঁহাদিগকে প্রেরণ করিতে আরম্ভ করিলেন; এবং তাঁহাদিগকে অশুচি আত্মাদের উপরে ক্ষমতা দান করিলেন; 
৮ আর আজ্ঞা করিলেন, তোমরা যাত্রার জন্য এক এক যষ্টি ব্যতিরেকে আর কিছু লইও না, রুটীও না, ঝুলিও না, গেঁজিয়ায় পয়সাও না; 
৯ কিন্তু পায়ে পাদুকা দেও, আর দুইটা আঙ্‌রাখা পরিও না। 
১০ তিনি তাঁহাদিগকে আরও কহিলেন, তোমরা যে কোন স্থানে যে বাটীতে প্রবেশ করিবে, সেই স্থান হইতে প্রস্থান করা পর্য্যন্ত সেই বাটীতেই থাকিও।

মার্ক ৬:৬-১০

যীশুর সন্ন্যাস আশ্রম ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় I এই সময় কালের মধ্যে তিনি হয়ে উঠলেন একজন গুরু যাঁর শিক্ষা সমূহ জগতকে প্রভাবিত করল, অনেক  শক্তিশালী লোকেদের (যেমন মহাত্মা গান্ধী), এবং এছাড়াও আপনাকে, আমাকে, এবং সকল লোকেদের স্পষ্ট করে জানিয়ে অন্তর্দৃষ্টি দিচ্ছেন I পরে আমরা তাঁর দেওয়া পথ নির্দেশ, শিক্ষা এবং জীবনের উপহারকে আমরা শিখব, কিন্তু প্রথমে যোহনের (একজন যিনি স্নান করাতেন) শিক্ষার দিকে দেখব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *