Skip to content

যীশু খ্রীষ্টের জন্ম: ঋষিদের দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী, দেবতার দ্বারা ঘোষণা এবং মন্দের দ্বারা ভীতিপ্রদর্শন

  • by

সম্ভবতঃ অত্যন্ত ব্যাপকভাবে উদযাপিত বিশ্বব্যাপী ছুটির দিন – খ্রীষ্টমাসের পেছনে যীশুর (যেশু সৎসংগ) জন্ম হ’ল কারণ I  যদিও অনেকে খ্রীষ্টমাস সম্বন্ধে জানে, তবুও অনেক কম সুসমাচারের থেকে যীশুর জন্মকে জানে I এই জন্ম কাহিনী সান্তা এবং উপহার সমূহ সহ আধুনিক খ্রীষ্টমাসের থেকে অনেক ভাল, আর তাই জানা মূল্যবান I    

বাইবেলের মধ্যে যীশুর জন্ম সম্বন্ধে জানার একটি কার্যকর উপায় হ’ল এটিকে কৃষ্ণের জন্মের সঙ্গে তুলনা করা যেহেতু এই দুইকাহিনীর মধ্যে অনেক সাদৃশ্য আছে I 

কৃষ্ণের জন্ম 

কৃষ্ণের জন্ম সম্বন্ধে বিভিন্ন শাস্ত্র ভিন্ন ভিন্ন বিবরণ দেয় I হরিবংশের মধ্যে, বিষ্ণুকে খবর দেওয়াস হয় যে অসুর কালনেমি দুষ্ট রাজা কংস রূপে পুনর্বার জন্মগ্রহণ  করেছে I কংসকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, বিষ্ণু বাসুদেব (একজন পূর্ববর্তী ঋষি এক রাখাল রূপে পুনর্জন্ম গ্রহণ করে) এবং তার স্ত্রী দেবকীর গৃহে কৃষ্ণ রূপে জন্ম গ্রহণ করতে অবতার নেন I   

পৃথিবীর উপরে কংস-কৃষ্ণ দ্বন্দ ভবিষ্যদ্বাণীর দ্বারা আরম্ভ হয়েছিল যখন আকাশ থেকে একটি কন্ঠস্বর কংসের কাছে ঘোষণা করল যে দেবকীর পুত্র কংসকে বধ করবে I তাই কংস দেবকীর সন্তান-সন্ততি সম্বন্ধে ভয়ভীত হ’ল এবং তাকে ও তার পরিবারকে কারারুদ্ধ করল, তার সন্তানদের হত্যা করল যেন তাদের জন্ম বিষ্ণুর অবতারকে আঘাত করতে লক্ষ্যচ্যুত না করে I  

যাইহোক, কৃষ্ণ দেবকীর কাছে জন্ম গ্রহণ করলেন এবং বৈষ্ণব ভক্তদের অনুসারে, তার জন্মের সাথে সাথে গ্রহগুলো তার জন্মের জন্য সামঞ্জস্য করায় সেখানে শান্তি ও সমৃদ্ধির পরিবেশ হ’ল I    

পুরান তারপরে কংসের দ্বারা ধ্বংস হওয়ার থেকে তার সদ্যজাতকে বাঁচাতে বাসুদেবের (কৃষ্ণের পার্থিব পিতা) পলাযনকে বর্ণনা করে I যেখানে তাকে ও দেবকীকে দুষ্ট রাজার দ্বারা আটকে রাখা হয়েছিল, সেই কারাগারকে পরিত্যাগ করে বাসুদেব একটি নদী পার হয়ে শিশুকে নিয়ে পলায়ন করল I একবার একটি গ্রামে নিরাপদ হওয়ার পরে শিশু কৃষ্ণকে একটি স্থানীয় বালিকা শিশুর সাথে অদল বদল করা হ’ল I কংস পরে অদল বদল করা বালিকাটিকে দেখল এবং তাকে হত্যা করল I শিশুদের অদল বদলের প্রতি বিস্মৃত হয়ে, নন্দ এবং যশোদা (শিশু বালিকার বাবা-মা) তাদের নিজস্ব নম্র রাখাল হিসাবে কৃষ্ণকে গড়ে তুলল I কৃষ্ণের জন্ম দিন কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী রূপে উদযাপিত হয় I

হিব্রু বেদ যীশুর জন্ম সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে

যেমনভাবে কংসকে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে দেবকীর এক পুত্র তাকে বধ করবে ঠিক তেমনিভাবে হিব্রু ঋষিরা মসীহ/খ্রীষ্টের আগমনের বিষয়ে ভাববাণী পেয়েছিলেন I যাইহোক, এই ভাববাণীগুলো পাওয়া গিয়েছিল এবং যীশুর জন্মের কয়েক শত বছর পূর্বে অনেক ভাববাদীদের দ্বারা লেখা হয়েছিল I কালপঞ্জি হিব্রু বেদের অনেক ভাববাদীদের সংকেত দিতে দেখায় যখন তাদের ভাববাণীগুলো প্রকাশিত এবং লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল I তারা মৃত গুড়ির থেকে একটি অঙ্কুরের ন্যায় একজনের আগমনের সম্বন্ধে দূরদর্শন করেছিল এবং তার নাম ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল – যীশু I

ইতিহাসের মধ্যে যিশাইয় এবং অন্য হিব্রু ঋষিরা (ভাববাদী গণ) I যিশাইয়র প্রায় একই সময়ে মীখাকে নোট করুন 

যিশাইয় এই ব্যক্তির জন্মের প্রকৃতির বিষয়ে আর একটি উল্লেখযোগ্য ভাববাণী লিপিবদ্ধ করেছিলেন I যেমন লেখা আছে:

 ১৪ অতএব প্রভু আপনি তোমাদিগকে এক চিহ্ন দিবেন; দেখ, এক কন্যা গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিবে, ও তাঁহার নাম ইম্মানূয়েল [আমাদের সহিত ঈশ্বর] রাখিবে। 

যিশাইয় ৭:১৪

এটি প্রাচীন হিব্রুদের হতভম্ব করল I একজন কুমারী কিভাবে সন্তান পেতে পারে? এটি অসম্ভব ছিল I যাইহোক, ভাববাণী ভবিষ্যদ্বাণী করল এই পুত্র হবে ইম্মানুয়েল, মানে ‘আমাদের সাথে ঈশ্বর’ I সর্বোচ্চ ঈশ্বর যদি, যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, তিনিই জন্ম গ্রহণ করেন তাহলে এটি অনুমেয় I তাই ঋষিগণ এবং হিব্রু বেদের প্রতিলিপিকারী অধ্যাপকরা বেদের থেকে ভাববাণীটিকে অপসারণ করতে সাহস করল না, সেখানে এটি তার পরিপূর্ণতার অপেক্ষায় জন্য যুগ যুগ ধরে রয়ে গেল I     

যিশাইয় কুমারী জন্মের ভাববাণী দিলেন একই সময়ের আশেপাশে অন্য একজন ভাববাদী মীখা ভবিষ্যদ্বাণী করলেন:

২ আর তুমি, হে বৈৎলেহম-ইফ্রাথা, তুমি যিহূদার সহস্রগণের মধ্যে ক্ষুদ্রা বলিয়া অগণিতা, তোমা হইতে ইস্রায়েলের মধ্যে কর্ত্তা হইবার জন্য আমার উদ্দেশে এক ব্যক্তি উৎপন্ন হইবেন; প্রাক্কাল হইতে, অনাদিকাল হইতে তাঁহার উৎপত্তি।

মীখা ৫:

মহান রাজা দায়ূদের পৈত্রিক নগর বৈৎলেহেম থেকে, শাসক আসবেন যার উৎপত্তি ‘প্রাচীন কাল থেকে’ ছিল – তার শারীরিক জন্মের অনেক আগে থেকে I

যীশুর জন্ম – দেবতার দ্বারা ঘোষিত 

কয়েক শত বছর ধরে যিহূদি/হিব্রুরা এই ভাববাণীগুলো ঘটার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন I অনেকে আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেগুলো সম্বন্ধে ভুলে গিয়েছিলেন, তবে ভাববাণীগুলো আসন্ন দিনের প্রত্যাশায় চুপ করে রইল I অবশেষে, ৫ খ্রীষ্টাব্দের আসে পাশে এক বিশেষ বার্তাবাহক এক যুবতী মহিলার কাছে এক হতবুদ্ধিকর বার্তা নিয়ে এলেন I কংস যেমন আকাশ থেকে একটি কন্ঠস্বর শুনল, স্ত্রীলোকটি স্বর্গ থেকে একজন বার্তাবাহক পেল, গ্যাব্রিয়েল নামক এক দেব বা স্বর্গদূত I সুসমাচার লিপিবদ্ধ করে:

২৬ পরে ষষ্ঠ মাসে গাব্রিয়েল দূত ঈশ্বরের নিকট হইতে গালীল দেশের নাসরৎ নামক নগরে একটী কুমারীর নিকটে প্রেরিত হইলেন, 
২৭ তিনি দায়ূদ-কুলের যোষেফ নামক পুরুষের প্রতি বাগ্দত্তা হইয়াছিলেন; সেই কুমারীর নাম মরিয়ম। 
২৮ দূত গৃহমধ্যে তাঁহার কাছে আসিয়া কহিলেন, অয়ি মহানুগৃহীতে, মঙ্গল হউক; প্রভু তোমার সহবর্ত্তী।
২৯ কিন্তু তিনি সেই বাক্যে অতিশয় উদ্বিগ্ন হইলেন, আর মনে মনে আন্দোলন করিতে লাগিলেন, এ কেমন মঙ্গলবাদ? 30দূত তাঁহাকে কহিলেন, মরিয়ম, ভয় করিও না, কেননা তুমি ঈশ্বরের নিকটে অনুগ্রহ পাইয়াছ। 
৩১ আর দেখ, তুমি গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিবে, ও তাঁহার নাম যীশু রাখিবে। 
৩২ তিনি মহান্‌ হইবেন, আর তাঁহাকে পরাৎপরের পুত্র বলা যাইবে; আর প্রভু ঈশ্বর তাঁহার পিতা দায়ূদের সিংহাসন তাঁহাকে দিবেন; 
৩৩ তিনি যাকোব-কুলের উপরে যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন, ও তাঁহার রাজ্যের শেষ হইবে না।
৩৪ তখন মরিয়ম দূতকে কহিলেন, ইহা কিরূপে হইবে? আমি ত পুরুষকে জানি না।
৩৫ দূত উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, পবিত্র আত্মা তোমার উপরে আসিবেন, এবং পরাৎপরের শক্তি তোমার উপরে ছায়া করিবে; এই কারণ যে পবিত্র সন্তান জন্মিবেন, তাঁহাকে ঈশ্বরের পুত্র বলা যাইবে। 
৩৬ আর দেখ, তোমার জ্ঞাতি যে ইলীশাবেৎ, তিনিও বৃদ্ধ বয়সে পুত্রসন্তান গর্ভে ধারণ করিয়াছেন; লোকে যাঁহাকে বন্ধ্যা বলিত, এই তাঁহার ষষ্ঠ মাস। 
৩৭ কেননা ঈশ্বরের কোন বাক্য শক্তিহীন হইবে না।
৩৮ তখন মরিয়ম কহিলেন, দেখুন, আমি প্রভুর দাসী; আপনার বাক্যানুসারে আমার প্রতি ঘটুক। পরে দূত তাঁহার নিকট হইতে প্রস্থান করিলেন।

লুক ১:২৬-৩৮

গ্যাব্রিয়েলের বার্তার 9 মাস পরে, ভাববাদী যিশাইয়র ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ করে যীশু কুমারী মরিয়মের কাছে জন্ম গ্রহণ করবেন I তবে মীখা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে জন্ম বেৎলেহেমে হবে, আর মরিয়ম নাসরতে বাস করতেন I মীখার ভবিষ্যদ্বাণী কি ব্যর্থ হবে? সুসমাচার চলতে থাকে:

1সেই সময়ে আগস্ত কৈসরের এই আদেশ বাহির হইল যে, সমুদয় পৃথিবীর লোক নাম লিখিয়া দিবে। 2সুরিয়ার শাসনকর্ত্তা কুরীণিয়ের সময়ে এই প্রথম নাম লেখান হয়। 3সকলে নাম লিখিয়া দিবার নিমিত্তে আপন আপন নগরে গমন করিল।

4আর যোষেফও গালীলের নাসরৎ নগর হইতে যিহূদিয়ায় বৈৎলেহম নামক দায়ূদের নগরে গেলেন, কারণ তিনি দায়ূদের কুল ও গোষ্ঠীজাত ছিলেন; 5তিনি আপনার বাগ্দত্তা স্ত্রী মরিয়মের সহিত নাম লিখিয়া দিবার জন্য গেলেন; তখন ইনি গর্ভবতী ছিলেন। 6তাঁহারা সেই স্থানে আছেন, এমন সময়ে মরিয়মের প্রসবকাল সম্পূর্ণ হইল। 7আর তিনি আপনার প্রথমজাত পুত্র প্রসব করিলেন, এবং তাঁহাকে কাপড়ে জড়াইয়া যাবপাত্রে শোয়াইয়া রাখিলেন, কারণ পান্থশালায় তাঁহাদের জন্য স্থান ছিল না।

8ঐ অঞ্চলে মেষপালকেরা মাঠে অবস্থিতি করিতেছিল, এবং রাত্রিকালে আপন আপন পাল চৌকি দিতেছিল। 9আর প্রভুর এক দূত তাহাদের নিকটে আসিয়া দাঁড়াইলেন, এবং প্রভুর প্রতাপ তাহাদের চারিদিকে দেদীপ্যমান হইল; তাহাতে তাহারা অতিশয় ভীত হইল। 10তখন দূত তাহাদিগকে কহিলেন, ভয় করিও না, কেননা দেখ, আমি তোমাদিগকে মহানন্দের সুসমাচার জানাইতেছি; সেই আনন্দ সমুদয় লোকেরই হইবে; 11কারণ অদ্য দায়ূদের নগরে তোমাদের জন্য ত্রাণকর্ত্তা জন্মিয়াছেন; 12তিনি খ্রীষ্ট প্রভু। আর তোমাদের জন্য ইহাই চিহ্ন, তোমরা দেখিতে পাইবে, একটী শিশু কাপড়ে জড়ান ও যাবপাত্রে শয়ান রহিয়াছে।

13পরে হঠাৎ স্বর্গীয় বাহিনীর এক বৃহৎ দল ঐ দূতের সঙ্গী হইয়া ঈশ্বরের স্তবগান করিতে করিতে কহিতে লাগিলেন,

14ঊর্দ্ধলোকে ঈশ্বরের মহিমা,

পৃথিবীতে [তাঁহার] প্রীতিপাত্র মনুষ্যদের মধ্যে শান্তি।

15দূতগণ তাহাদের নিকট হইতে স্বর্গে চলিয়া গেলে পর মেষপালকেরা পরস্পর কহিল, চল, আমরা একবার বৈৎলেহম পর্য্যন্ত যাই, এবং এই যে ব্যাপার প্রভু আমাদিগকে জানাইলেন, তাহা গিয়া দেখি।

১৬ পরে তাহারা শীঘ্র গমন করিয়া মরিয়ম ও যোষেফ এবং সেই যাবপাত্রে শয়ান শিশুটীকে দেখিতে পাইল। 
১৭দেখিয়া বালকটীর বিষয়ে যে কথা তাহাদিগকে বলা হইয়াছিল, তাহা জানাইল। 
১৮ তাহাতে যত লোক মেষপালকগণের মুখে ঐ সব কথা শুনিল, সকলে এই সকল বিষয়ে আশ্চর্য্য জ্ঞান করিল। 
১৯ কিন্তু মরিয়ম সেই সকল কথা হৃদয় মধ্যে আন্দোলন করিতে করিতে মনে সঞ্চয় করিয়া রাখিলেন। 
২০ আর মেষপালকদিগকে যেরূপ বলা হইয়াছিল, তাহারা তদ্রূপ সকলই দেখিয়া শুনিয়া ঈশ্বরের প্রশংসা ও স্তবগান করিতে করিতে ফিরিয়া আসিল।

লুক ২:১-২০

পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিমান ব্যক্তি, রোম সম্রাট স্বয়ং, একটি রাজকীয় আদেশ জারি করলেন যাতে মরিয়ম ও যোষেফকে নাসরত থেকে বেৎলেহেমে ভ্রমণ করতে হল, যীশুর জন্মের জন্য ঠিক সময়ে উপস্থিত হ’ল I মীখার ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হ’ল I   

একজন নম্র রাখাল হিসাবে কৃষ্ণের মতন যীশু দীনতার মধ্যে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন – আস্তাবলের মধ্যে যেখানে গরু এবং অন্য প্রানীদের রাখা হত, এবং তিনি বিনম্র মেষ পালকদের দ্বারা পরিদর্শিত হলেন I তথাপি স্বর্গের স্বর্গদূত এবং দেবতা তখনও তার জন্মের বিষয়ে গান গেয়েছিলেন I  

মন্দের দ্বারা ভীতিপ্রদর্শন 

কৃষ্ণের জন্মের সময়ে তার জীবন রাজা কংসের থেকে বিপদাপন্ন হয়েছিল যে তার আগমনে হুমকি অনুভব করেছিল I অনুরূপভাবে, যীশুর জন্মের মুহুর্তে তাঁর জীবন স্থানীয় রাজা হেরোদের থেকে বিপদাপন্ন হয়েছিল I হেরোদ তার শাসনের প্রতি ভীতিপ্রদর্শনকারী অন্য আর কোনো রাজা (‘খ্রীষ্ট’ হ’ল যার অর্থ) চান নি I সুসমাচার ব্যাখা করে:

১ হেরোদ রাজার সময়ে যিহূদিয়ার বৈৎলেহমে যীশুর জন্ম হইলে পর, দেখ, পূর্ব্বদেশ হইতে কয়েক জন পণ্ডিত যিরূশালেমে আসিয়া কহিলেন, 
২ যিহূদীদের যে রাজা জন্মিয়াছেন, তিনি কোথায়? কারণ আমরা পূর্ব্বদেশে তাঁহার তারা দেখিয়াছি, ও তাঁহাকে প্রণাম করিতে আসিয়াছি।
৩ এই কথা শুনিয়া হেরোদ রাজা উদ্বিগ্ন হইলেন, ও তাঁহার সহিত সমুদয় যিরূশালেমও উদ্বিগ্ন হইল। 
৪ আর তিনি সমস্ত প্রধান যাজক ও লোক সাধারণের অধ্যাপকগণকে একত্র করিয়া তাঁহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, খ্রীষ্ট কোথায় জন্মিবেন?
৫ তাঁহারা তাঁহাকে বলিলেন, যিহূদিয়ার বৈৎলেহমে, কেননা ভাববাদী দ্বারা এইরূপ লিখিত হইয়াছে,
৬“আর তুমি, হে যিহূদা দেশের বৈৎলেহম, তুমি যিহূদার অধ্যক্ষদের মধ্যে কোন মতে ক্ষুদ্রতম নও, কারণ তোমা হইতে সেই অধ্যক্ষ উৎপন্ন হইবেন, যিনি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে পালন করিবেন।”
৭ তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতগণকে গোপনে ডাকিয়া, ঐ তারা কোন্‌ সময়ে দেখা গিয়াছিল, তাহা তাঁহাদের নিকটে বিশেষ করিয়া জানিয়া লইলেন। 
৮ পরে তিনি তাঁহাদিগকে বৈৎলেহমে পাঠাইয়া দিয়া কহিলেন, তোমরা গিয়া বিশেষ করিয়া সেই শিশুর অন্বেষণ কর; দেখা পাইলে আমাকে সংবাদ দিও, যেন আমিও গিয়া তাঁহাকে প্রণাম করিতে পারি।
৯ রাজার কথা শুনিয়া তাঁহারা প্রস্থান করিলেন, আর দেখ, পূর্ব্বদেশে তাঁহারা যে তারা দেখিয়াছিলেন, তাহা তাঁহাদের অগ্রে অগ্রে চলিল, শেষে যেখানে শিশুটী ছিলেন, তাহার উপরে আসিয়া স্থগিত হইয়া রহিল। 
১০ তারাটী দেখিতে পাইয়া তাঁহারা মহানন্দে অতিশয় আনন্দিত হইলেন। 
১১ পরে তাঁহারা গৃহমধ্যে গিয়া শিশুটীকে তাঁহার মাতা মরিয়মের সহিত দেখিতে পাইলেন, ও ভূমিষ্ঠ হইয়া তাঁহাকে প্রণাম করিলেন, এবং আপনাদের ধনকোষ খুলিয়া তাঁহাকে স্বর্ণ, কুন্দুরু ও গন্ধরস উপহার দিলেন। 
১২ পরে তাঁহারা যেন হেরোদের নিকটে ফিরিয়া না যান, স্বপ্নে এই আদেশ পাইয়া, অন্য পথ দিয়া আপনাদের দেশে চলিয়া গেলেন।
১৩ তাঁহারা চলিয়া গেলে পর, দেখ, প্রভুর এক দূত স্বপ্নে যোষেফকে দর্শন দিয়া কহিলেন, উঠ, শিশুটীকে ও তাঁহার মাতাকে লইয়া মিসরে পলায়ন কর; আর আমি যত দিন তোমাকে না বলি, তত দিন সেখানে থাক; কেননা হেরোদ শিশুটীকে বধ করিবার জন্য তাঁহার অনুসন্ধান করিবে।
১৪ তখন যোষেফ উঠিয়া রাত্রিযোগে শিশুটীকে ও তাঁহার মাতাকে লইয়া মিসরে চলিয়া গেলেন, 
১৫ এবং হেরোদের মৃত্যু পর্য্যন্ত সেখানে থাকিলেন, যেন ভাববাদী দ্বারা কথিত প্রভুর এই বচন পূর্ণ হয়, “আমি মিসর হইতে আপন পুত্রকে ডাকিয়া আনিলাম”।
১৬ পরে হেরোদ যখন দেখিলেন যে, তিনি পণ্ডিতগণ কর্ত্তৃক তুচ্ছীকৃত হইয়াছেন, তখন মহাক্রুদ্ধ হইলেন, এবং সেই পণ্ডিতদের নিকটে বিশেষ করিয়া যে সময় জানিয়া লইয়াছিলেন, তদনুসারে দুই বৎসর ও তাহার অল্প বয়সের যত বালক বৈৎলেহম ও তাহার সমস্ত পরিসীমার মধ্যে ছিল, লোক পাঠাইয়া সে সকলকে বধ করাইলেন।
১৭ তখন যিরমিয় ভাববাদী দ্বারা কথিত এই বচন পূর্ণ হইল,
১৮ রামায় শব্দ শুনা যাইতেছে,হাহাকার ও অত্যন্ত রোদন; রাহেল আপন সন্তানদের জন্য রোদন করিতেছেন, সান্ত্বনা পাইতে চান না, কেননা তাহারা নাই

মথি ২:১-১৮

যীশু এবং কৃষ্ণের জন্মের মধ্যে অনেকটাই মিল রয়েছে I কৃষ্ণকে বিষ্ণুর অবতার রূপে স্মরণ করা হয় I লোগো হিসাবে, যীশুর জন্ম প্রথিবীর সৃষ্টিকর্তা সর্বোচ্চ ঈশ্বরের অবতার ছিল I উভয় জন্মের পূর্বে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, স্বর্গীয় বার্তাবাহকদের ব্যবহার করা হয়েছিল, এবং মন্দ রাজাদের দ্বারা তাদের আগমনের বিরোধিতা করে হুমকি দেওয়া হয়েছিল I

কিন্তু যীশুর জন্মের পিছনে উদ্দেশ্য কি ছিল? কেন তিনি এসেছিলেন? মানব ইতিহাসের শুরু থেকে, সর্বোচ্চ ঈশ্বর ঘোষণা করেছিলেন তিনি আমাদের গভীরতম প্রয়োজনগুলো পুরণ করবেন I কৃষ্ণ যেমন কালনেমিকে ধ্বংস করতে এসেছিলেন, যীশু তার শত্রুকে ধ্বংস করতে এসেছিলেন, যে আমাদের বন্দী করে রেখেছে I সুসমাচারগুলোর মধ্যে প্রকাশিত যীশুর জীবনকে আমাদের অন্বেষণ করতে থাকার সাথে সাথে আমরা শিখি কিভাবে এটি উদঘাটিত হয়, এবং আজকে আমাদের জন্য এর অর্থ কি I

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *