Skip to content

কিন্তু বিকৃত … মধ্য-পৃথিবীর মন্দ শক্তির কুৎসিত জাতির মতন

  • by

আমাদের পূর্ববর্তী রচনায় আমরা দেখলাম কিভাবে বাইবেল আমাদের এবং অন্যদের চিত্রিত করেছে – যে আমাদেরকে ঈশ্বরর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করা  হয়েছে I কিন্তু বেদা পুস্তকম (বাইবেল) এই ভিত্তির উপরে আরও অগ্রসর হয় I পুরনো নিয়মে ইব্রীয়দের দ্বারা ব্যবহৃত তাদের ঈশ্বরের আরাধনায় গীত সংহিতা হল পবিত্র গীত ও স্ত্রোত্রের একটি সংগ্রহ I প্রায় 1000 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে রাজা দায়ূদের (যিনি একজন ভাববাদীও ছিলেন) দ্বারা লিখিত গীত সংহিতা 14 লেখা হয়েছিল I এবং এই স্ত্রোত নথিভুক্ত করেছে কিভাবে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে জিনিসগুলোকে দেখায় I     

২ সদাপ্রভু স্বর্গ হইতে মনুষ্য-সন্তানদের প্রতি নিরীক্ষণ করিলেন; দেখিতে চাহিলেন, বুদ্ধিপূর্ব্বক কেহ চলে কি না, ঈশ্বরের অন্বেষণকারী কেহ আছে কি না।
৩ সকলে বিপথে গিয়াছে, সকলেই বিকারপ্রাপ্ত হইয়াছে; সৎকর্ম্ম করে, এমন কেহই নাই, এক জনও নাই।

গীতসংহিতা ১৪:২-৩

‘বিকৃত হওয়া’ বাক্যাংশটি সমগ্র মানব জাতিকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয় I যেহেতু এটি এমন কিছু ভাবে আমরা বিকৃত ‘হয়েছি’ যাকে ‘ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে’ হওয়ার সেই প্রারম্ভিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করা হয়েছে I এটি বলে যে আমাদের বিকৃতি স্বয়ং নিজেকে ঈশ্বরের থেকে একটি নির্ধারিত স্বতন্ত্রতার মধ্যে দেখায় (‘সকলে’ ‘ঈশ্বরকে চাওয়ার’ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে) এবং এছাড়াও ‘ভালো’ করার মধ্যে নেই I 

মানবরূপী অলৌকিক সত্তা এবং মন্দ শক্তির কুৎসিত জাতির সমন্ধে চিন্তা    

মন্দ শক্তির কুৎসিত জাতিগুলো বিভিন্ন দিকে দিয়ে বীভৎস ছিল I বরং তারা কেবলমাত্র মানবরূপী ওলৌকিক সত্তার বিকৃত বংশধর ছিল  

মানবররূপী অলৌকিক সত্তা মহান এবং সৌম্য ছিল 

লর্ড অফ রিংস বা হব্বিতেরমধ্যে মধ্য পৃথিবীর মন্দ শক্তির কুৎসিত জাতিগুলোর  এই চিন্তাধারাকে একটি দৃষ্টান্ত রূপে আরও ভালোভাবে বুঝুন I মন্দ শক্তির কুৎসিত জাতিগুলো রূপে, ব্যবহারে, এবং পৃথিবীতে তাদের আচরণে বীভৎস প্রাণী সমূহ হচ্ছে I তথাপি মন্দ শক্তির কুৎসিত জাতিগুলো মানবররূপী অলৌকিক সত্তার থেকে উৎপন্ন বংশধর যারা সৌরনের দ্বারা বিকৃত হয়েছিল I যখন আপনি মহিমান্বিত আচরণ, ঐকতান এবং প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ককে দেখেন যা মানবররূপী অলৌকিক সত্তাগুলোর মধ্যে ছিল (লেগালোসর কথা ভাবুন) এবং উপলব্ধি করুন যে চরিত্রহীন মন্দ শক্তির কুৎসিত জাতিগুলো একসময় মানবররূপী অলৌকিক সত্তা ছিল যারা ‘বিকৃত হয়েছে’ তখন আপনি একটি ধারণা পাবেন যে এখানে লোকেদের সম্বন্ধে কি বলা হয়েছে I ঈশ্বর মানবররূপী অলৌকিক সত্তাগুলোকে সৃষ্টি করেছিলেন কিন্তু তারা শয়তানে পরিণত হল I       

এটি একেবারে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যাকে আমরা লোকেদের মধ্যে একটি সার্বজনীন প্রবণতা রূপে দেখি, আমাদের পাপ এবং সুদ্ধতার জন্য প্রয়োজনের প্রতি সচেতন হতে – যেমনটি কুম্ভ মেলা উৎসবের মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে I সুতরাং এখানে আমরা একটি প্রেক্ষাপটে পৌঁছাই যেটি অত্যন্ত শিক্ষামূলক: বাইবেল  সংবেদী, ব্যক্তিগত, এবং নৈতিক লোকেদের নিয়ে আরম্ভ হয় কিন্তু পরে নৈতিক অবনতি নিয়েও, এবং এটি তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যা আমরা আমাদের নিজেদের সম্বন্ধে পর্যবেক্ষণ করি I বাইবেল লোকেদের সম্বন্ধে তার পর্যালোচনায় বিচক্ষণভাবে সম্পূর্ণ সঠিক, আমাদের ভেতরের একটি অন্তর্নিহিত নৈতিক প্রকৃতিকে চিহ্নিত করে যাকে সহজেই উপেক্ষা করা যায় যেহেতু আমাদের কার্যকলাপ কখনও আমাদের কাছ থেকে প্রকৃতির দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না – এই বিকৃতির কারণে I বাইবেল সংক্রান্ত জুতো মানবীয় পায়ের উপযুক্ত I যাইহোক, এটি একটি স্পষ্ট প্রশ্ন উত্থাপন করে: ঈশ্বর কেন আমাদেরকে এইরূপে সৃষ্টি করলেন? একটি নৈতিক পরিসরের সাথে আর তবুও এর থেকে নৈতিক অবনতি? একজন সুপ্রসিদ্ধ নাস্তিক ক্রিষ্টোফার হিচেন্স যেমনটি অভিযোগ করেন:       

 “… যদি ঈশ্বর সত্যই লোকেদের এই ধরণের চিন্তাধারা থেকে মুক্ত হোক চাইতেন [অর্থাৎ, এক নৈতিক অবনতি], তাহলে তিনি এক ভিন্ন প্রজাতিকে আবিষ্কার করতে আরও যত্নশীল হতে পারতেন I” ক্রিষ্টোফার হিচেন্স 2007 I গড ইস নট গ্রেট: হাউ রিলিজিঅন ডেস্ট্রয়স এভরিথিং I পৃষ্ঠা ১০০

কিন্তু এখানেই তিনি তার ব্যস্ততার মধ্যে বাইবেলকে সমলোচনা করতে গিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছুর থেকে লক্ষ্যচ্যুত হন I বাইবেল বলে না যে ঈশ্বর আমাদেরকে এইভাবে তৈরী করেছেন, কিন্তু সেই ভয়ানক এমনকিছু সৃষ্টির প্রথমে ঘটল যা এই কঠিন পরিস্থিতি নিয়ে এলো I আমাদের সৃষ্টির পরে মানব ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটন ঘটল I প্রথম মানবজাতি ঈশ্বরকে অবজ্ঞা করল, যেমন আদিপুস্তকে নথিভুক্ত আছে – বাইবেলে (বেদা পুস্তকম) মধ্যে প্রথম প্রাচীনতম বই, আর তাদের অবাধ্যতায় তারা পরিবর্তিত এবং বিকৃত হল I এই কারণেই আমরা এখন তমসা, বা অন্ধকারে বাস করি I      

মানবজাতির পতন

মানবীয় ইতিহাসের মধ্যে এই ঘটনাকে প্রায়শই পতন বলা হয় I প্রথম ব্যক্তি, আদম, ঈশ্বরের দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল I ঈশ্বর ও আদমের মধ্যে একটি নিয়ম ছিল, বিশ্বস্ততার একটি বিবাহের নিয়মের মতন, আর আদম এটিকে ভগ্ন করল I বাইবেল নথিভুক্ত করে যে আদম ‘ভালো ও মন্দের জ্ঞানের বৃক্ষ’ থেকে ফল খেল এমনকি যদিও তারা একমত হয়েছিল যে সে ওই বৃক্ষ থেকে ফল খাবে  না I নিয়ম এবং বৃক্ষটি স্বয়ং, আদমকে ঈশ্বরের সাথে বিশ্বস্ত থাকতে বা না থাকতে একটি স্বতন্ত্র ইচ্ছা দিয়েছিল I আদমকে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করা হয়েছিল, এবং তাঁর বন্ধুত্বের মধ্যে স্থাপিত করা হয়েছিল I কিন্তু এই সৃষ্টির সমন্ধে আদমের কোনো ইচ্ছা ছিল না, ঈশ্বরের সঙ্গে বন্ধুত্বকে চয়ন করতে ঈশ্বর তাকে অনুমতি দিয়েছিলেন I ঠিক যেমন দাঁড়িয়ে থাকার পচ্ছন্দ প্রকৃত নয়, যদি বসে থাকা অসম্ভব হয় I ঈশ্বরের প্রতি আদমের বন্ধুত্ব এবং ভরসা একটি পচ্ছন্দ হওয়ার ছিল I এই পচ্ছন্দ আজ্ঞায় প্রবেশ করেছিল যে একটি বৃক্ষ থেকে যেন ফল না খায় I কিন্তু আদম বিদ্রোহ করতে পচ্ছন্দ করল I আদম তার বিদ্রোহের সাথে যা আরম্ভ করলো তা সমস্ত প্রজন্মগুলোর মধ্য দিয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে গিয়েছে আর আজও আমাদের মধ্য দিয়েও চলতে থাকছে I আমরা পরবর্তী পর্যায়ে দেখব এর অর্থ কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *