Skip to content

সুসমাচারের কাহিনীতে তুলসী বিবাহকে কিভাবে প্রতিবিম্বিত করা হয়েছে?

  • by

তুলসী গাছের সাথে একটি তুলসী বিবাহের পুণ্য স্থানের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে

তুলসী বিবাহ উৎসব এক তুলসী (বেসিল) গাছের রূপে ভগবান শালিগ্রাম  (বিষ্ণু) এবং লক্ষীর মধ্যে প্রেমকে স্মরণ করে বিবাহ উদযাপন করে I এইরূপে তুলসী বিবাহ, তুলসী গাছ এবং একটি পবিত্র প্রস্তর শালিগ্রাম কেন্দ্রিক I এই উৎসবের পেছনে একটি পৌরানিক কাহিনী রয়েছে এবং ভক্তরা আজও সেই রীতিনীতি পালন করে I কিন্তু এটি সুসমাচারের একটি অসাধারণ ছবিও প্রদান করে, যেহেতু বিবাহ, পবিত্র প্রস্তর এবং একটি স্থায়ী উদ্ভিদ হ’ল সুসমাচারের কাহিনীর বিশিষ্ট চিত্র I আমরা এটিকে এখানে দেখি I   

তুলসী বিবাহ সম্বন্ধে পৌরাণিক কথা

দেবীভাগবত পুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং শিব পুরাণ তুলসী বিবাহ গঠনের পৌরাণিক সূত্র প্রদান করে I এই পুরাণগুলি তুলসী বিবাহের দিকে চালিত এক  ধারাবাহিক ঘটনার বর্ণনা করে I ভৃন্দা (বা বৃন্দা) নামে লক্ষীর এক নারী অবতার, অসুর রাজা জলন্ধরকে বিবাহ করেছিলেন I তার বিষ্ণু ভক্তির কারণে, বিষ্ণু রাজা জলন্ধরকে যুদ্ধে অজেয় হওয়ার বর দিয়েছিলেন I  এইভাবে দেবতারা ক্রমাগত তার সাথে তাদের যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং রাজা জলন্ধর অহংকারী হয়ে ওঠে I

তাই বিষ্ণু তাকে তার অজেয়তা হারাতে চেয়েছিলেন , এবং ব্রহ্মা বিষ্ণুকে জানিয়েছিলেন যে এটি করার জন্য তাকে জলন্ধরের সাথে বৃন্দার সতীত্ব ভঙ্গ করতে হবে I তাই

পবিত্র শালিগ্রাম প্রস্তর হ’ল জীবাশ্মযুক্ত এমোনাইট যা বিষ্ণুর অ-মানব চিত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়

জলন্ধর যখন দুরে যুদ্ধে ছিলেন,  তখন বিষ্ণু তার রূপ ধারণ করলেন এবং বৃন্দাকে চাইলেন, তার সাথে তার সতীত্ব হারানোর জন্য প্রতারণা করলেন I এইভাবে জলন্ধর শিবের সাথে যুদ্ধে তার অপরাজেয়তা (এবং তার মস্তক) হারান I বৃন্দা বিষ্ণুর প্রতারণা বুঝতে পেরে,  বিষ্ণুকে শালিগ্রাম হওয়ার অভিশাপ দিলেন, জীবাশ্ম কোষ বিশিষ্ট একটি পবিত্র কালো পাথর হতে যা বিষ্ণুর প্রতীক I  বৃন্দা নিজেকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলেন এবং একটি তুলসী গাছে পরিণত হলেন I  এইরূপে তাদের পরবর্তী জীবনে বৃন্দা (তুলসী রূপে) বিষ্ণুকে (শালিগ্রাম রূপে) বিবাহ করলেন I  তাই, ভক্তগণ প্রতি বছর প্রবোধিনি একাদশীতে  

ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলার চিত্র বৃন্দা বিষ্ণুকে অভিশাপ দিচ্ছেন

শালিগ্রামের সাথে তার  

গন্ডকী নদীতে পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম শিলাগ্রাম I চিত্র – প্রাজিনা খাতিবাড়া

বিবাহ দিয়ে তুলসী বিবাহ করেন I   

 তুলসী বিবাহ উদযাপন

তুলসী বিবাহ মন্দিরে তুলসী গাছ এবং শালিগ্রাম পাথরের বিবাহ হচ্ছে

বিবাহের সাথে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধনের কারণে, তুলসী বিবাহ নেপাল এবং ভারতে বিবাহ মরশুমের শুভ উদ্বোধন করে I ভক্তবৃন্দ প্রবোধিনি একাদশী এবং পূর্নিমার মধ্যে তুলসী বিবাহ পালন করেন – কার্তিক মাসের পূর্নিমা (পাশ্চাত্য ক্যালেন্ডারে সাধারণত অক্টোবর – নভেম্বর) I তুলসীকে বিষ্ণুপ্রিয়া নামেও জানা যায়, যার অর্থ যিনি ভগবান বিষ্ণুর সবচেতে প্রিয় I প্রতিটি হিন্দু বাড়ি তাকে শ্রদ্ধা করে, এটিকে সবচেয়ে পবিত্র গাছ করে তোলে I ভক্তবৃন্দ তুলসী গাছ স্থাপন ও পূজা করাকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করেন I  তুলসী বিবাহ উৎসবে, একটি তুলসী গাছ আনুষ্ঠানিকভাবে ভগবান বিষ্ণুকে বিয়ে করে I  পৃথক সম্প্রদায়ের বিভিন্ন রীতি অনুসারে পূজার বিধি অঞ্চল ভেদে ভিন্ন হতে পারে I

তুলসী বিবাহ এবং সুসমাচার বিবাহ

যদিও অনেকে তুলসী বিবাহের পৌরাণিক কাহিনী এবং রীতিনীতি জানেন, তবে সুসমাচারের কাহিনীর প্রতীকীবাদ কম পরিচিত I সুসমাচার ব্যাখ্যা করার জন্য বাইবেলের সবচেয়ে প্রাণবন্ত চিত্র হ’ল একটি বিবাহ I এই বিবাহ সম্ভব হয়েছে কারণ বর, নাসরতের যীশু, তার কনে কেনার জন্য দিয়েছেন মূল্য অথবা যৌতুক I এই বধু সংস্কৃতি, শিক্ষা, ভাষা, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত লোকদের পরিবেষ্টন করে, যারা এই বিশ্বের দুর্নীতি এবং ক্ষয় থেকে বাঁচতে তাঁর প্রস্তাব গ্রহণ করে I যীশুর সর্বোচ্চ বলিদান – ক্রুশে সকলের জন্য মৃত্যু – এবং বিজয় – মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান যৌতুকের মূল্য পরিশোধ করেছে I এই আসন্ন বিবাহের এখানে একটি গভীর ব্যাখ্যা পড়ুন I

একটি গাছের মধ্যে

কিন্তু তার মৃত্যু ও পুনরুত্থানের বিষয়ে তার জন্মের কয়েক শত বছর পূর্বে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যখন প্রাচীন ইব্রীয় বেদের (বাইবেল) ঋষি বা ভাববাদীগণ, তাঁকে মৃত গুড়ি থেকে ধীরে ধীরে অঙ্কুরিত হওয়া আসন্ন একটি উদ্ভিদের মতন চিত্রিত করেছিলেন I এই অঙ্কুরিত গাছটি অপ্রতিরোধ্য হবে এবং একটি মহান বৃক্ষে পরিণত হবে I

এবং একটি প্রস্তর

ঐতিহাসিক সময়রেখার মধ্যে ঋষি দায়ূদ এবং অন্য ইব্রীয় ঋষি (ভাববাদীগণ)

আর একটি চিত্র যাকে প্রাচীন ঋষিরা ব্যবহার করেছিলেন তা ছিল একটি শক্ত পাথর I যেমন ঋষি দায়ূদ বহু পূর্বে লিখেছিলেন…

22গাঁথকেরা যে প্রস্তর অগ্রাহ্য করিয়াছে, তাহা কোণের প্রধান প্রস্তর হইয়া উঠিল। 23ইহা সদাপ্রভু ইতেই হইয়াছে, ইহা আমাদের দৃষ্টিতে অদ্ভুত। 24অদ্য সদাপ্রভুর কৃত দিন; আমরা এই দিনে উল্লাস ও আনন্দ করিব। 25আহা! সদাপ্রভু, বিনয় করি, পরিত্রাণ কর; আহা! সদাপ্রভু, বিনয় করি,  ভাগ্য দেও।

গীতসংহিতা 118:22-25

আসন্ন ব্যক্তিকে একটি পাথরের সাথে তুলনা করা হয়েছিল I এই পাথরটিকে প্রত্যাখ্যান করা হবে কিন্তু তারপরে প্রধান পাথর হয়ে যাবে (পদ 22) I এই সবই প্রভুর পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য হবে (পদ 23-24) I

নামের মধ্যে…

কে হবে এই পাথর? পরবর্তী পদটি বলে ‘সদাপ্রভু, আমাদের রক্ষা করুন’ I সেই আদি ইব্রীয় ভাষায় যীশুর নামের আক্ষরিক অর্থ ছিল ‘রক্ষা করা’ বা ‘পরিত্রাণ’ I এটিকে আমাদের যে কোনো ভাষায় ‘প্রভু. যীশু’ বলে সঠিকভাবে অনুবাদ করা যেতে পারে I যেহেতু আমরা ‘যীশু’র অর্থ বুঝতে পারি না এবং আমরা এটিকে কেবল একটি যথাযথ বিশেষ্য বা সর্বনাম হিসাবে বিবেচনা করি, আমরা সহজেই এই সংযোগটি দেখতে পারি না I যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীকৃত নামটিকে এখানে আরও সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে I তাই এই গীতটি কিভাবে শেষ হয় লক্ষ্য করুন I 

26ধন্য তিনি, যিনি সদাপ্রভুর নামে আসিতেছেন; আমরা সদাপ্রভুর গৃহ হইতে তোমাদিগকে ধন্যবাদ করি। 27সদাপ্রভুই ঈশ্বর; তিনি আমাদিগকে দীপ্তি দিয়াছেন; তোমরা রজ্জু দ্বারা উৎসবের বলি বেদির শৃঙ্গে বাঁধ। 28তুমি আমার ঈশ্বর, আমি তোমার স্তব করিব; তুমি আমার ঈশ্বর, আমি তোমার প্রতিষ্ঠা করিব। 29তোমরা সদাপ্রভুর স্তব কর, কেননা তিনি মঙ্গলময়; তাঁহার দয়া অনন্তকালস্থায়ী।

গীতসংহিতা 118:26-29

যীশু ‘সদাপ্রভুর নামে’ খর্জুর রবিবার নামে পরিচিত দিনে এলেন, যখন তিনি পবিত্র নগরে প্রবেশ করলেন I সেখানে তাকে আবদ্ধ করা হ’ল ঠিক যেমন বলিগুলিকে ‘বেদীর শিঙের’ সাথে আবদ্ধ করা হয় I এটি ছিল আমাদের প্রতি ঈশ্বরের তাঁর প্রেমের চিরন্তন প্রদর্শন, এমন একটি ‘প্রেম যা চিরস্থায়ী হয়’ I    

অনেক সাংস্কৃতিক চিহ্নিতকারীগণ সুসমাচারের কাহিনীকে চিত্রিত করে, এমনকি জ্যোতিশা, দুর্গাপুজা এবং রামায়ণ সহ, কিন্তু তুলসী বিবাহ এমন একটি, যার বিবাহের সাথে তার যোগসূত্রের কারণে, আমাদের প্রশংসা করা উচিত I

যখন আমরা তুলসী বিবাহের সাথে আমরা এই মিলগুলি এবং সমান্তরালতা দেখি, বিশেষ করে বিবাহ, গাছপালা এবং পাথরগুলিতে, আমরা উভয়ই উৎসবটিকে উপভোগ করতে পারি এবং একটি প্রতীকী অর্থের গভীরে দেখতে পারি যা আমরা যে আচার বিধি এবং পুজোগুলির অনুষ্ঠান উপভোগ করি তার চেয়েও বেশি গভীর I 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *